China’s eye in Siliguri: ভুটানের ভোটকে হাতিয়ার করে ভারতে ঢুকতে পারে লালফৌজ! শিলিগুড়িতে পাল্টা চাল সেনার

China's eye in Siliguri:সম্প্রতি একটি উপগ্রহ চিত্র সামনে এসেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, ভুটানের জাকারলুং উপত্যকার বেশ কিছু অংশ ২০২১ সালেও ফাঁকা ছিল। কিন্তু, ২০২৩ সালের চিত্র বলছে, ওই অংশে গড়ে উঠেছে নির্মাণ। চিনা ফৌজ ভুটানের সীমানা লঙ্ঘন করে ভিতরে ঢুকে লাগাতার অবৈধ নির্মাণ করে চলেছে।

China's eye in Siliguri: ভুটানের ভোটকে হাতিয়ার করে ভারতে ঢুকতে পারে লালফৌজ! শিলিগুড়িতে পাল্টা চাল সেনার
শিলিগুড়িতে পাল্টা ছক ভারতীয় সেনারImage Credit source: Facebook
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 17, 2023 | 3:01 PM

ভুটানের জমি ধরে দক্ষিণে আর অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে রীতিমত আগ্রাসী মনোভাব রয়েছে চিনের। সেক্ষেত্রে সফল হলে শিলিগুড়ি করিডরের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলবে বেজিং। ওই করিডরের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির সঙ্গে ভারতের বাকি অংশের যোগাযোগ রক্ষা করা হয়। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে একাধিক বার সতর্কতা জারি করেছে ভারতীয় সেনা। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র মৌখিক ভাবে নয়, এবার নিজেদেরকে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রাখার কথাও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিল ভারতীয় সেনা। সব ধরনের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে তৈরি থাকার নির্দেশ এসেছে বলে ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর। শনিবার পূর্বাঞ্চলীয় সেনার সদর দপ্তর ফোর্ট উইলিয়ামে বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল রানা প্রতাপ কলিতা স্পষ্ট করে দিলেন, সেনা তৈরি। সবদিক থেকে নিজেদেরকে তৈরি রাখা হচ্ছে। বিশেষ করে “ট্রাই জংশন” অর্থাৎ যেখানে চীন,  ভুটান এবং ভারতের জমি ও সেনারা মুখোমুখি জায়গায় রয়েছে, সেখানে বিশেষ ভাবে তৈরি থাকা হচ্ছে। ভারত নিজের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে। 

বর্তমানে কূটনৈতিক ইস্যুর জন্য সরাসরি তিনি কোনও কড়া শব্দ প্রয়োগ করবেন না বলে জানালেও এটা স্পষ্ট করে দিলেন যে তাদের স্পষ্ট নজর রয়েছে চিনের প্রতিটা পদক্ষেপে। তাই নিজেদেরকে সম্পূর্ণ তৈরি রাখার ব্যাপারেও এক চুল জায়গা ছাড়ছে না ভারতীয় সেনা। 

সম্প্রতি একটি উপগ্রহ চিত্র সামনে এসেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, ভুটানের জাকারলুং উপত্যকার বেশ কিছু অংশ ২০২১ সালেও ফাঁকা ছিল। কিন্তু, ২০২৩ সালের চিত্র বলছে, ওই অংশে গড়ে উঠেছে নির্মাণ। চিনা ফৌজ ভুটানের সীমানা লঙ্ঘন করে ভিতরে ঢুকে লাগাতার অবৈধ নির্মাণ করে চলেছে। একের পর এক বহুতল গড়ে উঠছে পাহাড়ি জঙ্গল সরিয়ে। ভুটানের জমিতে সীমানা আইন লঙ্ঘন করে মূলত গ্রাম এবং সেনাছাউনি তৈরি করছে চিন। সূত্রের খবর, ভুটানের যে অংশে চিন পৌঁছেছে, সেখান থেকে অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে। বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ভারতীয় সেনা আধিকারিক ও কর্তাদের মধ্যে যে চিনের এই আগ্রাসন নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে, তা কিন্তু ফোর্ট উইলিয়ামের কর্তারা অস্বীকার করছেন না। 

তবে চিকেন নেক করিডর উপর যাতে চিন কোনওভাবে নজরদারি না করতে পারে তার জন্য সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা দিতে প্রস্তুত ভারতীয় সেনা। মূলত ভারতীয় সেনা সুত্রে খবর, ভুটান এবং অরুণাচল প্রদেশকে প্রধানত টার্গেট করেছে চিন। দলাই লামার ভারতে আসা এবং ভুটানের আগত নির্বাচনের কারণে চিন প্রশাসন একাধিক কৌশলী সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সেক্ষেত্রে গোটা বিশ্ব এবং ভারতের নজরকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য সেনা অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে অশান্ত করতে পারে সীমান্ত, এমনই আশঙ্কা ভারতীয় সেনার গোয়েন্দা শাখার কর্তাদের। স্বাভাবিকভাবেই আগামী কয়েক মাস ভারত- চিন সীমান্তের একাধিক অংশ উত্তপ্ত করতে পারে শি জিনপিং সরকারের সেনারা। আর সেকারণেই আগে থেকে সতর্ক করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট জায়গায় মোতায়েন থাকা সেনা কর্তাদের।

দার্জিলিংয়ের উত্তরে চিনের সীমান্তের মাঝে রয়েছে ভুটান। মাত্র ৩৮ হাজার বর্গ কিলোমিটারের এই পাহাড়ি দেশটির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। ভারতের নিরাপত্তাগত কারণে ভুটানের ভূমিকা সর্বাধিক। সেখানে চিন যে থাবা বসাবে এবং বারবার চাপ প্রয়োগ করবে, এটাই স্বাভাবিক ছিল। বছরখানেক আগে অরুণাচল প্রদেশের ইয়াংৎসে এলাকায় চীন সেনাদের দাপাদাপি এবং ভারতীয় সেনার হাতে মার খেয়ে ফিরে যাওয়া এই পরিকল্পনার সূত্রপাত বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশারদরা। যে কারণে শুধুমাত্র কূটনৈতিকভাবেই যে এই জটিলতা কাটবে তা একেবারেই মনে করেন না সেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্তারা। তাতে মুখোমুখি থেকে সমুচিত জবাব দেওয়াকেই একমাত্র অস্ত্র হতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা।

এখানেই শেষ নয়। ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশকে চাপে রাখতে তিব্বত অটোনোমাস কাউন্সিলের নামও বদলে ফেলা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সিপিসি বা কমিউনিস্ট পার্টি অফ চাইনার সম্মেলনে। নাম রাখা হচ্ছে ” জিংজাং”। তাতে চীন লিবারেশন আর্মি নিজের আগ্রাসী মনোভাব আরো বাড়াবে বলেই মনে করছেন সেনার কর্তারা। তা নিয়ে বলতে গিয়ে এদিন পূর্বাঞ্চলের সেনা কমান্ডার বলেন, “আমাদের প্রতিপক্ষ চীন প্রশাসনের এই নাম বদল নিয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। তবে চীন নিজের দখল করে রাখা তিব্বত অটোনোমাস রিজিওনের নাম বদল করতেই পারে সে ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে আমরা নিজেদের দেশের সার্বভৌমত্ব এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এরপরে যে আরও মজবুত করব, সেটাও নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দিলাম। কারণ আমরা আমাদের দেশের নিরাপত্তার দেওয়ালটাকে শক্তপোক্ত রাখতে চাই। সে কারণেই সতর্ক থাকা আমাদের অন্যতম বড় দায়িত্ব।”