ত্রিপুরায় অভিষেক পা দিতেই উঠল ‘গো ব্যাক’ স্লোগান, ‘বহিরাগত’ তকমা জয়প্রকাশের
ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে একদিকে যেমন তৃণমূল সমর্থকরা জমায়েত করে খেলা হবে স্লোগান দিচ্ছেন, তেমনই বহু সাধারণ মানুষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া শুরু করেন।
আগরতলা: ত্রিপুরা সফরের শুরুতেই বাধার মুখে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির থেকেই সফরের সূচনা করবেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তার আগেই একাধিক জায়গায় তাঁর কনভয় আটকানো হয়, পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান স্কুল পড়ুয়ারাও। ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরের সামনেও অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নামে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ত্রিপুরা সফরের প্রথমদিনেই তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।
রাজনৈতিক কুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prasant Kishore)-র সংস্থা আই-প্যাকের ২৩ জন কর্মীকে হোটেলে আটকে রাখার ঘটনা সামনে আসার পরই সরব হন তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব। পড়শি রাজ্যে সোমবার সকালেই পৌঁছন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটকের মতো তৃণমূল নেতারা। আগরতলা থেকে তিনি সরাসরি উদয়পুকুরের ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে যাবেন। মন্দিরে যাওয়ার পথেই একাধিক জায়গায় তাঁর কনভয় বাধার সামনে পড়েন। স্কুল পড়ুয়ারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় নিজেও গাড়ি থেকে নেমে বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। লকডাউনের কারণে স্কুল বন্ধ থাকলেও পড়ুয়ারা কী করে স্কুল ইউনিফর্ম পড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
বিক্ষোভের মুখে পড়েই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় একটি ভিডিয়ো টুইট করে লেখেন, “ত্রিপুরায় গণতন্ত্রের কী অবস্থা দেখুন!”
Democracy in Tripura under @BJP4India rule!
Well done @BjpBiplab for taking the state to new heights. pic.twitter.com/3LoOE28CpW
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) August 2, 2021
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পৌঁছনোর আগেই তৃণমূল সমর্থকরা জমায়েত করে “খেলা হবে” স্লোগান দেওয়া শুরু করেন, তেমনই বহু বিজেপি কর্মী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে “গো ব্যাক” স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। তাদের অভিযোগ, ধর্মীয় স্থানে রাজনীতি করতে চাইছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে তৃণমূল।
অন্যদিকে, গতকালই ত্রিপুরা জুড়ে একাধিক জায়গায় তৃণমূলের পতাকা ছিঁড়ে ফেলা হয়। এ দিন সকালে দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা সহ ১৫ জন তৃণমূল কর্মীরা উষা বাজারে দলীয় পতাকা লাগাতে যান। সেখানে তাঁদের ঘিরে ফেলে ২০০ থেকে ৩০০ জন বিজেপি, এমনটাই তৃণমূলের অভিযোগ। দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই, কোভিড বিধি মেনেই পতাকা লাগাচ্ছিলাম। আচমকা বিজেপির ২০০-৩০০ জন সমর্থক আমাদের উপর চড়াও হয়। সুদীপকে ধাক্কাও মারে। কিন্তু পুলিশ বিজেপির হয়েই কাজ করছে। ওদের বাধা দেওয়ার বদলে আমাদেরই সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।”
তৃণমূলের সভাপতি আশীষ লাল সিংও এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। অন্যদিকে, বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “তৃণমূল দিল্লি গিয়ে এক কথা বলছে, ত্রিপুরায় গিয়ে আরেক কথা বলছে। দিল্লিতে গিয়ে বললেন যে সব বিরোধীরা এক জোটে লড়বেন। ত্রিপুরায় গিয়ে কংগ্রেস, সিপিএম ভাঙাচ্ছেন। বিজেপি আসার পর রাজ্যে শান্তি ফিরেছে, তৃণমূল এ বার ত্রিপুরাকে অশান্ত করতে যাচ্ছেন। ওনারা সেখানে বহিরাগত। জেপি নাড্ডাও যখন রাজ্য সফরে গিয়েছিলেন, তখন তাঁকে কালো পতাকা দেখানো হয়েছিল। শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষেত্রেও একই ধরনের ঘটনা হয়েছে। রাজ্যে এই কালো পতাকা দেখানোর রাজনীতি তো তৃণমূলই শুরু করেছে।” আরও পড়ুন: সুষ্ঠভাবে অধিবেশনের অনুরোধে খাড়গেকে ফোন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর, পেগাসাস ইস্যুতেই অনড় বিরোধীরা