Supreme Court: প্রয়োগে প্রয়োজন নিয়ন্ত্রণ! রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে ভিন্ন মত কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেলের
Supreme Court: ১২৪(এ) ধারা বাতিলের প্রয়োজন নেই, তবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু 'নিয়ন্ত্রণ রেখা' টানার প্রয়োজন রয়েছে। মত কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালের।
নয়া দিল্লি: দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে বারবরই বিরোধীদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে কেন্দ্র সরকার। রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের (Sedition Act) অন্তর্গত ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারা প্রয়োগ নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন। এই ধারার কারণেই ইতিমধ্যেই দেশের রাজনৈতিক মহলের বহু বড় মুখ থেকে শুরু করে সমাজ কর্মী জেলের ঘানি টানছেন। এই আইন বলেই রাষ্ট্রের রোষানলে পড়েছেন বহু সাংবাদিকও। এদিকে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court ) একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাকারীদের তালিকায় রয়েছে এডিটর্স গিল্ড অব ইন্ডিয়া, মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ‘কমন কজ’। ১২৪(এ) ধারা ধারা সরাসরি ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারা সংবিধানের ১৯(১)(এ), ১৪ এবং ২১ এই তিন অনুচ্ছেদের পরিপন্থী বলেও মত তাদের। মামলা করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ শৌরি, প্রাক্তন মেজর জেনারেল এস জি ভোম্বাটকেরে, সাংবাদিক প্যাট্রিশিয়া মুখিম, ব্যঙ্গচিত্রী অসীম ত্রিবেদী সহ বহু খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব। এদিন এই মামলারই শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। যা নিয়েই জোর চর্চা চলছে গোটা দেশজুড়়ে।
এদিকে এই ধারা বহাল রাখার পক্ষেই বারবার সওয়াল করেছে কেন্দ্র সরকার। এমনকী দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেনও এই ধারার প্রয়োজন রয়েছে তারাও কারণ দর্শানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। তবে এদিনের শুনানিতে খানিক ‘সুর নরম’ করতে দেখা যায় কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালকে। তাঁর মতে ধারা বাতিলের প্রয়োজন নেই, তবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু ‘নিয়ন্ত্রণ রেখা’ টানার প্রয়োজন রয়েছে। সহজ কথায়, ১২৪(এ) ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রয়োজন বলেই মত বেণুগোপালের। যদিও এর আগে তাঁকে এই মত প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। এবার সরাসরি এই বিতর্কিত ধারার আইনি ফাঁক নিয়ে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল সওয়াল করায় স্বভাবতই তা চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।
এদিকে ব্রিটিশ আমলের রাষ্ট্রদ্রোহিতার আইনটি এখনও কেন বহাল রয়েছে সেই প্রশ্ন আগেই তুলেছে দেশের শীর্ষ আদালত। এর বাস্তবিক প্রয়োগ নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। যে ধারা ইংরেজদের ঔপনিবেশিক শাসনকালে গান্ধীজি, বাল গঙ্গাধর তিলকের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হত তা এখনও কেন স্বাধীন ভারতে ব্যবহার করা হবে সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে। আর তাতেই অস্বস্তি বেড়েছে কেন্দ্র সরকারের। এমতাবস্থায় এবর খোদ অ্যাটর্নি জেনারেলের সুর বদলে দানা বাঁধছে নানা প্রশ্ন। আগামী ১০ মে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে ফের এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। সাম্প্রতিক কালে তেলেগু কবি ভারাভারা রাও, আদিবাসী আন্দোলন কর্মী স্ট্যান স্বামীর বিরুদ্ধে ১২৪(এ) ধারা প্রয়োগ নিয়ে দেশব্যাপী কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছিল কেন্দ্র স্বামী।