Shiv Sena: রাজ্যপাট আগেই গিয়েছিল, এবার হাতছাড়া রাজার নামও, কী কী কারণে আসল শিবসেনার তকমা পেল শিন্ডে শিবির?
Shiv Sena: কমিশন জানিয়েছে, বালাসাহেবের তৈরি আসল শিবসেনার নেতা হলেন একনাথ শিন্ডেই। আর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন উদ্ধব ঠাকরে।
মুম্বই : গতবছরের জুন মাসেই মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) মহানাটকের যবনিকা পতন হয়েছিল। একের পর এক নাটকীয় ও অবশ্যই চাঞ্চল্যকর মোড় নিয়েছিল মহারাষ্ট্রের রাজনীতি। আর সেই নাটকের শেষে সিংহাসন হারাতে হয়েছিল উদ্ধব ঠাকরেকে। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবসান ঘটে মহা বিকাশ আগাড়ি জোটের। রাজ্য়পাটের দায়িত্ব নেন একনাথ শিন্ডে (Eknath Shinde)। গত বছর এই নাটকের সময় ভেঙে দু’ টুকরো হয়ে যায় বালাসাহেব ঠাকরের তৈরি শিবসেনা (Shivsena)।
দুটি শিবিরে ভাগ হয়ে একটি হয় শিবসেনার শিন্ডে শিবির এবং অন্যটি শিবসেনার ঠাকরে শিবির। শিন্ডে শিবির বিজেপির সঙ্গে একজোটে সরকার গঠন করে। সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন একনাথ শিন্ডে। আর এই উপমুখ্যন্ত্রী বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ (Devendra Fadnavis)। তারপর শুরু হয় আসল শিবসেনা কার তার লড়াই। নির্বাচন কমিশন পেরিয়ে জল গড়ায় শীর্ষ আদালত অবধি। আসল শিবসেনা কার, সেই প্রশ্নে আপাতত কোনওরকম সিদ্ধান্ত নিতে নির্বাচন কমিশনকে নিষেধ করে সুপ্রিম কোর্ট। মহারাষ্ট্রের উপনির্বাচনে দুই শিবিরকে দুটি ভিন্ন নাম ও প্রতীক ব্যবহার করার কথা বলা হয়। শিন্ডের শিবিরের নামকরণ হয়‘বালাসাহেবঞ্চি শিবসেনা’ এবং প্রতীক হয় ‘দুটি তরোয়াল এবং একটি ঢাল’। অন্যদিকে উদ্ধব শিবিরের নাম হয়‘শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে)’আর প্রতীক হয় ‘প্রজ্জ্বলিত মশাল’। তবে এবার আরও বড় ধাক্কা আসে উদ্ধব শিবিরের জন্য।
সরকার পতন ও দল ভেঙে দুই টুকরো হয়ে যাওয়ার পর শুক্রবার বাবার প্রতিষ্ঠা করা দলও হাতছাড়া হয় উদ্ধব ঠাকরের। গতকাল কমিশন জানিয়েছে, বালাসাহেবের তৈরি আসল শিবসেনার নেতা হলেন একনাথ শিন্ডেই। অর্থাৎ বালা সাহেব প্রতিষ্ঠিত শিবসেনার নাম ও প্রতীক থাকল একনাথ শিন্ডের কাছে। কমিশনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন উদ্ধব ঠাকরে। এবং এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টেও যাবেন বলে জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কী বলছে?
কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও নির্বাচন ছাড়াই অগণতান্ত্রিকভাবে একটি গোষ্ঠীর লোকদের পদাধিকার দেওয়া হয়েছে। এদিকে অভিযোগ ওঠে, দলের রাশ নিজের হাতে রাখতে আস্থাভাজনদের নেতা পদে নিয়োগ করেছিলেন উদ্ধব ঠাকরে। নির্বাচন কমিশন সেই নিয়োগকে বেআইনি আখ্যা দিয়েছে।
কমিশন জানিয়েছে, শিবসেনার বর্তমান সংবিধান অগণতান্ত্রিক। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালে শিবসেনার সংবিধানে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে। কিন্তু সেই সংশোধিত সংবিধান কমিশনে জমা দেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, কমিশনের চাপে পড়ে ১৯৯৯ সালে প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরে তাঁর দলের সংগঠনে কিছু সংশোধন এনেছিলেন। ২০১৮ সালের সংবিধানে সেই সব সংশোধনী বাতিল করা হয়। এই আবহে কমিশনের পর্যবেক্ষণ, শিবসেনার বর্তমান সংবিধান অগণতান্ত্রিক।
এদিকে এরপর সংখ্যাগরিষ্ঠতাও বিচার করে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, শিবসেনা নিয়ে দ্বন্দ্বে সংখ্যাগরিষ্ঠতার পরীক্ষায় ভরসা করতে বাধ্য হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কোনও দলকে রাজনৈতিক দল হিসেবে চিহ্নিত করার মূল চাহিদাই হল কোনও বিধানসভা নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পেয়েছে সেই দলটি। বা কোনও দলের কাছে নির্বাচিত প্রতিনিধির সংখ্য়া কত। নির্বাচন কমিশন দেখেছে সেক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে একনাথ শিন্ডে শিবিরের কাছে। এইসব বিবেচনা করেই শিন্ডে শিবিরকে আসল শিবসেনার তকমা দেওয়া হল।