মুম্বই ধর্ষণকাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবারের দেখা করল মহিলা কমিশন
NCW Visits Mumbai Rape Victim's Family: নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করল জাতীয় মহিলা কমিশন। পাশাপাশি তাঁরা ঘটনাস্থান ও রাজওয়াড়ি হাসপাতালও পরিদর্শন করেন।
মুম্বই: মুম্বই ধর্ষণ কাণ্ডের এ বার নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করল জাতীয় মহিলা কমিশন। পাশাপাশি তাঁরা ঘটনাস্থান ও রাজওয়াড়ি হাসপাতালও পরিদর্শন করেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর গণেশ চতুর্থীর রাতে বছর বত্রিশের এক মহিলাকে ফাঁকা টেম্পোর ভিতর বর্বোরচিতভাবে যৌন হেনস্থা করা হয়। পুলিশের চেষ্টায় কোনও রকমে উদ্ধার হন তিনি। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মহিলার গোপনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে অত্যাচার চালায় অভিযুক্ত। খবর পেয়ে পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়, তখন দেখে টেম্পোর ভিতর ভেসে যাচ্ছে রক্তে। আর সেখানেই পড়ে রয়েছেন নির্যাতিতা মহিলা। উদ্ধার করে তাঁকে রাজওয়াড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মুম্বই পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটে রাত ৩ টে নাগাদ। এই সময় পুলিশকে কেউ বা কারা খবর দেয় যে একটি টেম্পোর ভিতর এক মহিলা ও এক ব্যক্তির মধ্যে তীব্র বচসা চলছে। এ কথা শুনেই সন্দেহ হয় পুলিশের। মুম্বইয়ের সাকি নাকা এলাকায় পৌঁছে পুলিশ দেখে টেম্পোর ভিতর তখন শুধু রক্ত। সেখানে পড়ে রয়েছেন ওই মহিলা। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে পুলিশ। রাজওয়াড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। এরপরই এফআইআর দায়ের করা হয়।
তবে চিকিৎসা শুরু হলেও ক্রমশ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। ভেন্টিলেটরে তাঁর চিকিৎসা চলে। অস্ত্রোপচারও করা হয়েছিল। সব রকমের চেষ্টা চালিয়ে যান চিকিৎসকরা। নির্যাতিতা মহিলা চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন কিনা গভীর পর্যবেক্ষণে রাখেন তাঁরা। ক্রমেই অবনতি হতে শুরু করে শারীরিক অবস্থা। ক্ষত থেকে সারা শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় শেষ রক্ষা হয়নি। আর এক নির্ভয়ার মৃত্যুর সাক্ষী থাকল দেশ।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে মীরাতুন নাহার তাঁর মু্ম্বই অভিজ্ঞতার স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, “নির্ভয়াকাণ্ড ঘটেছিল দিল্লিতে। দিল্লি সম্পর্কে আমাদের যে ধ্যানধারণা তাতে এই ধরনের ঘটনা বিশ্বাস করতে খুব বেশি কষ্ট হয় না। তার কারণ, দিল্লি সন্ধ্যার পর আর নিরাপদ শহর থাকে না, আমরা বহুদিন ধরেই সেটা জানি। কিন্তু মুম্বই সম্পর্কে আমাদের ধারণা কিন্তু অনেক উচু। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই জানি, মুম্বই নিরাপদ শহর হিসেবেই পরিচিত। সেখানে অটো, রিক্সাই বেশি চলে। ট্যাক্সি বেশি চলে না এবং অটো, রিক্সাচালকরাই বেশি নিরাপত্তা দেয়। একই সঙ্গে মুম্বইয়ের পুলিশও খুব সচেতন। সেই সব ব্যারিকেড ভেঙে যখন এরকম কাণ্ড ঘটেছে, তখন মুম্বই শহর নিয়ে আমার মনে বাস্তবতার যে ছবি ছিল, তা ভেঙেচুরে চুরমার হয়ে গেল।”
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম মোহন চৌহান। তবে এই ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত বলেই সন্দেহ পুলিশের। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তকে। ৪২ বছর বয়সি মোহন চৌহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে শুধু ধর্ষণই নয়, খুনের চেষ্টার মামলাও রুজু হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ও ৩৭৬ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। কেন ওই মহিলাকে এ ভাবে নৃশংস ধর্ষণের শিকার হতে হল, তা পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়।