Inspirational Story: কুলি, গার্ডের কাজ করেই রিসার্চের স্বপ্নপূরণ, দলিত ছেলের জীবন সংগ্রাম অনুপ্রাণিত করবে আপনাকেও
PhD Scholar: প্রত্যন্ত গ্রামে থেকে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন সত্যি হবে না। এ কথা কিশোর বয়সেই বুঝেছিলেন উমরেন। তাঁর বাড়ির আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল না, উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁকে বড় শহরের নামী কলেজে ভর্তি করার। তাই মাধ্যমিকের পর বাড়িতে কিছু না জানিয়েই তিনি চলে এসেছিলেন রাঁচীতে।
রাঁচী: দলিত পরিবারে জন্ম। অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়। মাধ্যমিকের পরই গ্রাম থেকে শহরে এসেছিলেন। টাকা রোজগার করে পরিবারকে সাহায্য করতে। ঝাড়খণ্ডের সোনাহাতু পঞ্চায়েতের তেলওদি গ্রাম থেকে রাঁচীতে আসেন উরমেন শেঠ। প্রথমে নির্মাণ সংস্থায় কুলির কাজ করতেন তিনি। তার পর নিরাপত্তারক্ষীর কাজে যোগ দেন। কাজ করেই সারা দিন কেটে যেত। কিন্তু তা সত্ত্বেও উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন ছিল মন থেকে উধাও হতে দেননি। কাজের ফাঁকেই চালিয়ে যেতেন পড়াশোনা। এ ভাবেই কলেজ পাশ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিও পেরিয়েছেন। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হননি। পিএইচডি করার স্বপ্নও দেখতেন তিনি। সেই স্বপ্ন সত্যি করতে বসেছিলেন নেট (National Eligibility Test) পরীক্ষায়। প্রথম বারের চেষ্টাতেই নেট উত্তীর্ণ হন তিনি। রাঁচী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দি বিভাগে পিএইচডি-ও শুরু করেছেন তিনি। রিসার্চের সুযোগ পেয়ে আপ্লুত উমরেন।
প্রত্যন্ত গ্রামে থেকে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন সত্যি হবে না। এ কথা কিশোর বয়সেই বুঝেছিলেন উমরেন। তাঁর বাড়ির আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল না, উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁকে বড় শহরের নামী কলেজে ভর্তি করার। তাই মাধ্যমিকের পর বাড়িতে কিছু না জানিয়েই তিনি চলে এসেছিলেন রাঁচীতে। তার পর কাজ করেই নিজের পেট ও পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে উমরেন বলেছেন, “এখানে এসে প্রথমে কুলির কাজ করতাম। তার পর ৬-৭ বছর ধরে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করি। ওই কাজ করেই আমি পড়াশোনা চালিয়ে যায়। কিন্তু কাজের জন্য পড়াশোনায় অত সময় দিতে পারতাম না।” পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বন্ধু ও পরিবারের লোকেদের থেকে উৎসাহ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
উমরেন আরও জানিয়েছেন, নেট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে ২০১৯ সালে রাঁচী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ক্যাম্পাসে থাকা শুরু করেন তিনি। সময় বাঁচাতেই সেখানে থাকা শুরু করেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে নেট পরীক্ষায় বসেন তিনি। প্রথম বারের চেষ্টাতেই সফল হয়েছেন উমরেন। তিনি বলেছেন, “২০২০ সালের ডিসেম্বরে আমি পরীক্ষায় বসছিলাম। কিন্তু কবে রেজাল্ট বেরিয়েছে জানতাম না। প্রফেসররা জানায় আমি নেট পাশ করেছি। জুনিয়র রিসার্চ ফেলো (JRF)র জন্য নির্বাচিত হয়েছি। কোচিং ছাড়াই প্রথমবারের চেষ্টায় এই পরীক্ষা পাশ করলাম।”
রাঁচী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দি বিভাগে রিসার্চের জন্য ইতিমধ্যেই এনরোলমেন্ট করিয়েছেন তিনি। তাঁর রিসার্চের বিষয়, দলিতদের প্রতি সহানুভূতির দৃষ্টি এবং তাঁর মূল্যায়ন। দলিত হিসাবে তাঁৎ জীবনের অভিজ্ঞতা রিসার্চের সময় কাজে লাগবে বলেও আশাবাদী তিনি।