RG Kar Case: মেলালেন ‘তিনি’ মেলালেন! বিনীতের ‘গোঁ’-ডাক্তারদের ‘জেদের’ মাঝে অনুঘটক তৃণমূলের শীর্ষ নেতা?

RG Kar Case: সূত্রের খবর, সোমবার রাত থেকেই তৃণমূলের এক সাধারণ সম্পাদক সক্রিয় হন। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে শাসক দলের শীর্ষ নেতা তাঁকে দায়িত্ব দেন। যাদবপুরের প্রাক্তনী এবং একসময় অতিবাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা এই নেতাকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দৌত্য করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কারণ আন্দোলনের পরামর্শদাতা অনেকের সঙ্গে পুরনো অতিবাম এই নেতার যোগাযোগ এবং সখ্যতা।

RG Kar Case: মেলালেন 'তিনি' মেলালেন! বিনীতের 'গোঁ'-ডাক্তারদের 'জেদের' মাঝে অনুঘটক তৃণমূলের শীর্ষ নেতা?
কার দৌত্যে গলল বরফ?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 04, 2024 | 3:27 PM

কলকাতা: ২২ ঘণ্টা অবস্থান। অনড় দুই পক্ষই। কিন্তু, সেই বরফ গলল। লালবাজারে গিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের সঙ্গে দেখা করলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের ২২ জন প্রতিনিধি। মঙ্গলবার জুনিয়র চিকিৎসকরা বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট পর্যন্ত তাঁদের মিছিল এগিয়ে নিয়ে গিয়ে নগরপালের হাতে দাবিপত্র তুলে দেওয়াকে আন্দোলনের জয় হিসেবে দেখছেন। তখন লালবাজারের শীর্ষ কর্তাদের একটা বড় অংশ বিষয়টি দুই পক্ষেরই জয় বলে ব্যাখ্যা করছেন। আবার লালবাজার সূত্রে খবর, পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে ফিয়ার্স লেনে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের অনড় মনোভাব থেকে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল, সেই পরিস্থিতি সামলাতে পর্দার পিছন থেকে সক্রিয় হন শাসকদলের এক শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। শীর্ষ এই শাসক নেতার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সমাধান সূত্র বের করার এই প্রয়াসে দলের সুপ্রিমোর সরাসরি সিলমোহর আছে কি না, তা নিয়ে অবশ্য পুলিশ এবং আমলাদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে।

সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের একটি অংশ অবস্থানকারীদের ব্যাপারে কিঞ্চিৎ অনড় মনোভাব পোষণ করছিলেন। যা আদৌ পছন্দ করছিলেন না ওই শাসক নেতা। তিনি স্পষ্ট করে দেন, ব্যক্তিগতভাবে আন্দোলনকারীদের প্রতি তাঁর সহানুভূতি রয়েছে, যা তিনি এক্স হ্যান্ডলে একাধিকবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন। আন্দোলনকারী-পুলিশ দুই পক্ষই অনড় মনোভাব দেখালে আখেরে সংকট আরও বাড়বে, এই বার্তাও তাঁর কাছ থেকে পৌঁছয় লালবাজারে।

লালবাজার সূত্রের খবর, তিনি শীর্ষ পুলিশকর্তাদের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের একটি অংশকেও বোঝাতে সমর্থ হন, আন্দোলনকারীরা যদি তাঁদের অনড় মনোভাব থেকে কিছুটা নরম হতে স্বীকৃত হন তাহলে পুলিশও যেন এক কদম এগিয়ে আন্দোলনকারীদের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে অচলাবস্থা কাটিয়ে রফা সূত্র বের করতে সাহায্য করে।

এই খবরটিও পড়ুন

সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, সোমবার রাত থেকেই তৃণমূলের এক সাধারণ সম্পাদক সক্রিয় হন। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে শাসক দলের শীর্ষ নেতা তাঁকে দায়িত্ব দেন। যাদবপুরের প্রাক্তনী এবং একসময় অতিবাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা এই নেতাকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দৌত্য করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কারণ আন্দোলনের পরামর্শদাতা অনেকের সঙ্গে পুরনো অতিবাম এই নেতার যোগাযোগ এবং সখ্যতা। ‘তিলোত্তমা’ কাণ্ডে বিজেপির ডাকা নবান্ন অভিযানের ঠিক আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই প্রাক্তনী আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের একটা বড় অংশকে সফল ভাবে বিরত করেন নবান্ন অভিযানে যোগ দেওয়া থেকে। আগের দৌত্যর সফলতাও একটা বড় কারণ তাঁর দায়িত্ব পাওয়ার।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পিছনে থাকা বিভিন্ন চিকিৎসক গোষ্ঠীর সঙ্গে দফায় দফায় কথা বার্তার পর ঠিক হয় দাবিপত্রের খসড়া। দাবিপত্রে অনড় থেকেও নগরপালের পদত্যাগ নিয়ে কিছুটা হলেও নরম অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার বেলা বারোটার আগেই সিদ্ধান্ত হয়, নগরপাল আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করবেন। তারপরই অবস্থান তুলে নেবেন চিকিৎসকরা। উল্টোদিকে, পুলিশ আগের অবস্থান থেকে সরে, আন্দোলনকারীদের সোমবারের দাবি অনুযায়ী বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট পর্যন্ত এগিয়ে যেতে অনুমতি দেবে।

লালবাজারের কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, ফের পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে যখন অবস্থানকারী চিকিৎসকদের নেতৃত্বের কাছে খবর আসে, শাসকদলের এক মুখপাত্র যিনি প্রাক্তন সাংসদ, নিজের অফিসে চিকিৎসক একটি অংশের সঙ্গে কথা বলছেন একটা মিটমাট করার জন্য। এই বৈঠকের সঙ্গে অবস্থানকারীদের বড় অংশেরই কোনও যোগ ছিল না। অবস্থানকারীরা জানিয়ে দেন, বৈঠকে যোগ দেওয়া ওই চিকিৎসকদের সঙ্গে আন্দোলনের কোনও যোগ নেই।

যদিও শেষ পর্যন্ত অবস্থানকারীরা প্রাক্তন অতি বাম নেতার দৌত্যকে স্বীকৃতি দিলে নগরপালের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলে। পাল্টা পুলিশও অবস্থানকারীদের বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট পর্যন্ত এগোতে দিলে বরফ খানিকটা গলে। শেষ পর্যন্ত অবস্থান আপাতত তুলে নিতে সম্মত হন চিকিৎসকরা।

তবে শীর্ষ তৃণমূল নেতার এই স্বতঃপ্রণোদিত দৌত্যর পিছনে দলের সুপ্রিমোর সরাসরি সিলমোহর আছে কি না, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে লালবাজারের কর্তাদের। তবে তাঁরা স্বীকার করছেন, সুপ্রিমোকে না জানিয়ে এই পদক্ষেপ সম্ভব নয়। তবে গোটা ঘটনা রাজ্যের ক্ষমতার অলিন্দে কি নতুন কোনও সমীকরণ তৈরি করছে? সেই জল্পনা ক্রমশই বাড়ছে আমলা মহলে।

আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)