Abhishek Banerjee: ‘বুক চিতিয়ে মানুষকে বলুন আপনি তৃণমূলের সৈনিক’, দুর্নীতি ইস্যুতে বিদ্ধ দলকে ‘অ্যান্টি বায়োটিক’ অভিষেকের
Abhishek Banerjee: বুধবার শহিদ মিনারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতে তা আরও স্পষ্ট প্রতীয়মান হল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দুর্নীতি ইস্যুতে তৃণমূলের এখন মুখ্য হাতিয়ার তাঁদের দলেরই ভাবমূর্তি।
কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে দলের একাধিক মন্ত্রী বিধায়ক, শীর্ষ স্তরের নেতাদের নাম। সঙ্গে গরু ও কয়লা পাচারের কেস তো রয়েইছে। এই পরিস্থিতি দুর্নীতি ইস্যুতে শাসকদলকে বিঁধছেন বিরোধীরা। এখন বিরোধীদের বিঁধতে পাল্টা স্ট্র্যাটেজি নিয়েছে শাসকদল। তা অবশ্য তৃণমূলের বিগত কয়েকদিনের কর্মসূচিতেই স্পষ্ট হয়েছে। বুধবার শহিদ মিনারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতে তা আরও স্পষ্ট প্রতীয়মান হল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দুর্নীতি ইস্যুতে তৃণমূলের এখন মুখ্য হাতিয়ার তাঁদের দলেরই ভাবমূর্তি। অর্থাৎ অভিযোগ মেনে নিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে, হ্যাঁ দলের কিছু লোকের ভুল হয়েছে। তবে তৃণমূল এমন এক দল যেখানে দুর্নীতিগ্রস্তদের জায়গা নেই। তৃণমূলই একমাত্র দল যেখানে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর দলের এই স্ট্যান্ড পয়েন্টকেই ভালভাবে দলীয় কর্মীদের ‘স্পুন ফিড’ করালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়াতে অভিষেক বললেন, “যখন মানুষের কাছে যাবেন তৃণমূলের ব্যাজ়টা পরে যাবেন। কারণ এই দলই দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে ব্যবস্থা নেয়।”
সভায় তখন হাততালির ঝড়। উৎসাহিত হয়ে অভিষেক আবারও বলেন, ” মানুষের কাছে যখন যাবেন মাথা উঁচু করে বুক ঠুকে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী হিসাবে যাবেন।” উদাহরণ হিসাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন তিনি। অভিষেক বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ৬ দিনের মাথায় সাসপেন্ড করেছি, মন্ত্রিসভা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কোন দল এমনটা করতে পারে কি? এক মাত্র তৃণমূল কংগ্রেসই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।” যদিও এখানে প্রশ্ন তোলাই যেতে পারে, অনুব্রত মণ্ডলের প্রসঙ্গ। তিনিও তো গুরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত। আপাতত যাঁর তিহাড় জেলই বাসস্থান। তাঁকে কেন জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হল না? প্রশ্ন অবশ্য জিইয়ে রেখেছেন বিরোধীরাই।
বলাই বাহুল্য, এদিনের গোটা সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে দেখা গিয়েছে। তিনি বারবারই উপস্থিত দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন, পঞ্চায়েত আগে মানুষের কাছে যেতে হবে তাঁদের, দলীয় ব্যাজ় লাগিয়ে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে হবে তাঁদের। বলতে হবে তাঁরাই তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক। যে দল দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আসলে এই ‘দুর্নীতি’ নামক শব্দটি হাতিয়ার করেই দলের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার ও রুখে দাঁড়ানোর প্রয়াসে নেমেছে তৃণমূল। এদিনের অভিষেকের সভা তারই ‘ট্রেলার’ দেখাল।