করোনার শঙ্কা রাশ টানতে পারল না, অন্নপূর্ণা পূজিত হলেন কোভিড বিধি মেনেই
"হোম যজ্ঞের সময় মুখে মাস্ক রাখা তো অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। তবে বাদবাকি সময়ে পরে থাকছি।''
প্রীতম দে: পরনের গেরুয়া বসনের সঙ্গে মানানসই করে পুরোহিতের মুখে গেরুয়া মাস্ক। মুখে মাস্ক গৃহকর্তা, গৃহকর্ত্রীর এবং নিমন্ত্রিত অতিথিদের। বৈশাখের প্রচণ্ড দাবদাহে তা মাঝেমধ্যে খুলছেন বটে। তবে তা কেবল ভোগের প্রসাদ খাওয়ার সময়। এমনই কড়া সতর্কতার মধ্যে অন্নপূর্ণা পুজো হল উত্তর কলকাতার বিডন স্ট্রিটের বিখ্যাত ঈশ্বর শ্রীধর জিউতে।
করোনার শঙ্কা রয়েছে। তাই সর্তকতাও ছিল চরম। আবার ভোট আবহে জনসংযোগের মাধ্যম হিসেবে অনেক প্রার্থীই এদিন ঈশ্বর শ্রীধর জিউর অন্নপূর্ণা পুজোয় এলেন। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ করোনা আবহে কোভিড বিধি মেনে এভাবেই পালন হস অন্নপূর্ণা পুজো।
উত্তর কলকাতার বিডন স্ট্রিটে শ্রী শ্রী ঈশ্বর শ্রীধর জিউ। পুরনো বাড়ির পুরনো অন্নপূর্ণা পুজো। পূজারী বলরাম ভট্টাচার্য হেসে বললেন, “হোম যজ্ঞের সময় মুখে মাস্ক রাখা তো অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। তবে বাদবাকি সময়ে পরে থাকছি।” দেখালেন পোশাকের সঙ্গে মানানসই গেরুয়া মাস্ক।
এই বাড়ির ছেলে সায়ন নন্দী বারোয়ারী দুর্গা পুজোর সঙ্গে জড়িত। তাঁর কথায়, “মাস্ক না পরলে আমরা পাড়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে পেরেছিলাম। আর নিজের বাড়িতে সতর্কতা নেব না তা কী করে হয়!” তবে এসবের মধ্যেও পাত পেড়ে খাবার ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। তবে নিমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন চেনা জানার মধ্যেই।
নিউ বালিগঞ্জের দে বাড়ির পুজোয় প্রতিবারের মতো এবারেও উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা তথা একুশের ভোটের প্রার্থী দেবাশিস কুমার। তবে শরীর অসুস্থ থাকায় যেতে পারেননি আর এক প্রার্থী মদন মিত্র। তবে দে বাড়ির কর্তা-গিন্নি সোমনাথ এবং মণিকাঞ্চন দে ভোগের প্যাকেট পৌঁছে দিয়েছেন বাড়ি বাড়ি। সামাজিক দূরত্বের কারণে এবার আর বসে খাবার বন্দোবস্ত রাখেননি। গৃহকর্তা সোমনাথ দে জানান, “দেবাশিস কুমার এবং মদন মিত্র দুজনেই এই প্রসাদের হোম ডেলিভারির খুব প্রশংসা করেছেন।”
আরও পড়ুন: করোনা আবহে কুমারী পুজোয় নতুন রীতি কণকশালী পাঠক পরিবারে
শ্যামবাজার পল্লীর সুব্রত ভট্টাচার্য প্রতিবছর একশোরও বেশি পদ দিয়ে অন্নপূর্ণাকে ভোগ নিবেদন করেন। তবে এবার করোনার কারণে আর সেই জাঁকজমক হয়ে ওঠেনি। নমো নমো করেই পুজো সেরেছেন তিনি। করোনার কারণে সতর্কতা ছিল, উৎসবের জৌলুস কমাতে বাধ্য হয়েছেন, তবে অতি সতর্কতার সঙ্গেই কলকাতার বিখ্যাত অন্নপূর্ণা পুজোগুলো শেষ হল।