AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘মিটিং-মিছিলে লোক হচ্ছে, তাহলে ভোটটা দিল না কেন?’ বাম বিপর্যয় নিয়ে অকপট অশোক

Asok Bhattacharya: "এবারের ভোট চেনাজানা দিয়ে হয়নি। এবার তো বামেরাও অল্প বয়স্কদের প্রার্থী করেছিল। তাঁরা কি জিতেছেন?''

'মিটিং-মিছিলে লোক হচ্ছে, তাহলে ভোটটা দিল না কেন?' বাম বিপর্যয় নিয়ে অকপট অশোক
অলংকরণ: অভীক দেবনাথ
| Edited By: | Updated on: Jul 29, 2021 | 12:36 AM
Share

কলকাতা: ১৯৯১ থেকে ২০০১, টানা চারবার শিলিগুড়ির বিধায়ক ছিলেন তিনি। এগারো সালে একবার দখল গিয়েছে ওই বিধানসভা আসন। তবে ২০১৬ সালের রাজ্যজুড়ে যখন বামেদের ভরাডুবি, তখনও লাল ঝাণ্ডা উড়িয়ে শিলিগুড়ি আসন অক্ষত রেখেছিলেন অশোক ভট্টাচার্য। কিন্তু একুশের ভোটে খানখান ‘শিলিগুড়ি মডেল।’ রাজ্যজুড়ে বামেদের ভরাডুবি। কেন বিধানসভা বাম শূন্য? Tv9 বাংলার একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য।

অশোকবাবুর কথায়, “২০ বছর মন্ত্রী ছিলাম। তার আগে ছিলাম শিলিগুড়ি মিউনিসিপালিটির চেয়ারম্যান। মন্ত্রী হয়ে সেখান থেকে ইস্তফা দিই। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে হেরেছি। তার পরের চার বছর তো কিছুই ছিলাম না। আবার রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছি হারের দু’মাসের মধ্যে। পুলিশ গ্রেফতারও করেছে চা-বাগান শ্রমিকদের হয়ে আন্দোলনের জন্য। মন্ত্রিত্ব খুইয়েও আন্দোলনে ভাটা পড়েনি।” জেতার ব্যাপারে তো আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তবে এবার হার কেন?

অশোকবাবুর দাবি, আগের হারের কারণ ছিল শক্তিশালী বিরোধী। তবে একুশের ভোটে হেরে গিয়েও লড়াইয়ে তিনি আছেন। “এবারের লড়াইটা কঠিন ছিল। কিন্তু এরকম করে যে হেরে যাব, তার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলাম না। তবে রেজাল্ট ভাল হবে না সেটা আন্দাজ করেছিলাম। তবে শিলিগুড়ি নিয়ে কনফিডেন্ট ছিলাম।” বলেন একদা রাজনৈতিক শিষ্য, সিপিএম থেকে বিজেপিতে চলে যাওয়া শঙ্কর ঘোষের কাছে হেরে যাওয়া অশোক ভট্টাচার্য। তিনি জানান, “হয়ত বিরোধী দলে থাকব সেই আশা ছিল।”

উত্তরবঙ্গে বিজেপির উত্থান নিয়ে সিপিএম নেতার মত, “এবারের ভোট চেনাজানা দিয়ে হয়নি। এবার তো বামেরাও অল্প বয়স্কদের প্রার্থী করেছিল। তাঁরা কি জিতেছেন? এবার ভোটেও সেটাও ফ্যাক্টর হয়নি। কে কী কাজ করেছে, প্রার্থীর সততা, পারফরমেন্স কোনও ম্যাটারই করেনি। এটাই অদ্ভুত ব্যাপার।”

তিনি বলতে থাকেন, “সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় বা ইন্দিরা গান্ধীরা হেরেছিলেন পারফরমেন্সের প্রশ্নে। কিন্তু সিপিএম নেতাদের সততা, পারফরমেন্স নিয়ে কেউ আঙুল তুলতে পারবেন না।” শিলিগুড়ির সিপিএম প্রার্থী মনে করেন, এবার ভোটে চরিত্র কোনও ফ্যাক্টর হয়নি। কে কত টাকা নিয়েছেন, কাজ করেছেন কি করেননি, সেটাও বিবেচ্য হয়নি মানুষের কাছে। ফ্যাক্টর ছিল জাতপাত, ধর্মের রাজনীতি। এই বিভাজনের রাজনীতিতেই হার বামেদের। এমনটাই অভিমত আর ভোটে না লড়াইয়ের পণ করা প্রাক্তন মন্ত্রীর। তাঁর কথায়, “ক্লাস পলিটিক্স থেকে কেন আইডেন্টিটি পলিটিক্স প্রাধান্য পেল তাই নিয়ে গভীর ভাবে ভাবছি আমি।”

একইসঙ্গে তাঁর অভিমত, “মানুষ যেমন বুঝতে পারেনি, আমরাও বোঝাতে পারিনি তাঁদের। তবে এ নিয়ে স্টাডি করা জরুরি। এটা যে মহা বিপর্যয়, তা স্বীকার করে নিয়েছি। বাম-শূন্য বিধানসভা কখনও ভাবতে পারিনি। তবে বামপন্থা ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে কখনও ভাল কিছু হতে পারে না। এটা সবাই স্বীকার করে।”

তিনি বলেন, তার পরেও আমাদের ভাবতে হবে কেন এই ফলাফল। তিনি এও স্বীকার করে নেন মানুষের থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বামেরা। বলেন, “সভা সমিতিতে তৃণমূলের চেয়ে আমারাও কোনও অংশে কম ছিলাম না। মিছিলে আসছে মিটিংয়ে আসছে তাহলে আমাদের ভোটটা দিল না কেন?”

এর কারণ হিসাবে অশোক নিজেই বলেন, মুসলিমদের মধ্যে বিজেপিকে নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে। শীতলকুচি কাণ্ড, বিজেপি নেতাদের মন্তব্য, তাঁদের আগ্রাসনকে তোল্লাই দেয়নি মানুষ। আবার তৃণমূল এটাকেই ব্যবহার করেছে। তবে আরও গভীরে গিয়ে ভাবতে হবে তাঁদের, জানান অশোক ভট্টাচার্য।  আরও পড়ুন: হাজার কাজের মধ্যেও ৫৮ বছর বয়সে পিএইচডি মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর