B C Roy Hospital: বিকল যন্ত্র, নেই চিকিৎসকও, থমকে সদ্যোজাতর শ্রবণশক্তি পরীক্ষা, জোড়া সঙ্কটে বিসি রায় শিশু হাসপাতাল
B C Roy Hospital: বিসি রায় শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা স্বাস্থ্য দফতরকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছে। দ্রুত সেই সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকের সমস্যা মেনে নিয়েছেন বিসি রায় শিশু হাসপাতালের অধ্যক্ষ দিলীপ পাল।
কলকাতা: বিসি রায় শিশু হাসপাতালে বিকল যন্ত্র। তিন মাস ধরে শিশুদের শ্রবণ পরীক্ষার যন্ত্র বিকল। ভোগান্তির শিকার বাবা-মায়েরা। যন্ত্র বিকলে হচ্ছে না ‘BERA’ পরীক্ষা। পাশাপাশি রয়েছে চিকিৎসকের অভাবও। সময়ে ‘BERA’ পরীক্ষা না হওয়ায় ব্যাহত বধিরতার চিকিৎসা। বধিরদের জন্য এই পরীক্ষা জরুরি, বলছেন জাতীয় বধিরতা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মুখ্য উপদেষ্টা চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত।
জন্মের পর সদ্যোজাতর কানে শোনার সমস্যা রয়েছে কি না, তার জন্য ‘বেরা’ পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি। সদ্যোজাতর শ্রবণশক্তিতে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, তা বোঝা যায় এই পরীক্ষাতেই। কিন্তু বিসি রায় শিশু হাসপাতালে এই পরীক্ষা করার যন্ত্র গত তিন মাস ধরে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। পাশাপাশি যে চিকিৎসক এই পরীক্ষা করতেন, তাঁকেও বদলি করে দেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গে। ফলে জোড়া সঙ্কটে পড়েছে বিসি রায় শিশু হাসপাতাল। চুক্তিভিত্তিতে ‘অডিয়োলজিস্ট’ নিয়োগ চলছে বটে, তবে স্থায়ী চিকিৎসক নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতই। ফলে যে সব সদ্যোজাতর ‘বেরা’ পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে, তাদের পার্শ্ববর্তী অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে বাধ্য হচ্ছে শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সমস্যা সেখানেও। অন্য হাসপাতালে গিয়েও যে দ্রুত তাদের পরীক্ষা করানো সম্ভব হচ্ছে, তেমনটাও নয়। চিকিৎসকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তাতে সদ্যোজাতর যদি শ্রবণশক্তি কম থাকে, পরীক্ষা দেরিতে হলে বধির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।
একজন চিকিৎসক বলেন, “সদ্যোজাতরা নিউরোলজিক্যাল ডেফিসিয়েন্সির জন্য যদি শুনতে না পায়, তাহলে তাদের বেরা নামক একটা যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। কোথায় কোথায় সমস্যা রয়েছে, তা নির্ধারিত করা হয়। পিজি আর বিসি রায় শিশু হাসপাতালে সেই যন্ত্র রয়েছে। তিন মাস ধরে সেটা খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। সরকারের হেলদোল নেই। শিশুগুলো তাহলে চিকিৎসা পাবে কোথায়?”
বিসি রায় শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা স্বাস্থ্য দফতরকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছে। দ্রুত সেই সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকের সমস্যা মেনে নিয়েছেন বিসি রায় শিশু হাসপাতালের অধ্যক্ষ দিলীপ পাল। তিনি বলেন, “চুক্তিভিত্তিতে অডিয়োলজিস্ট নিয়োগ করা হচ্ছে। বেরা ইলেক্ট্রো ফিজিওলজিক্যাল টেস্ট। যাতে বুঝতে পারা যায়, শব্দ শিশুর মস্তিষ্কে যাচ্ছে কি না। যে চুক্তিভিত্তিতে অডিয়োলজিস্ট নিয়েছি, তাতে চিকিৎসকের সংখ্যা কম। তবে ইন্টারভিউ চলছে। আমাদের এখানে শিশুর কোনও সমস্যা হলে, অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। শুধু মেশিন হলে চলবে না, মেশিন চালানোর জন্য অডিয়োলজিস্ট প্রয়োজন। তাই নিয়োগের প্রয়োজন।” এখন বিসি রায় শিশু হাসপাতালের সমস্যা কবে মিটবে, সেটাই দেখার।