West Bengal Day: সর্বদল বৈঠকে ২০ জুনের বিপক্ষে সওয়াল সবার, পয়লা বৈশাখ ছাড়াও এল অন্য দিনের প্রস্তাব
West Bengal Day: সূত্রের খবর, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর নতুন দিনের প্রসঙ্গ বিধানসভায় তুলতে চলেছে সরকার। সেদিনই চূড়ান্ত দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা।
কলকাতা: নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি থেকে সুগত বসু, বিশে নারাজ সকলেই। মোহনবাগানের প্রতিনিধি বলেই উঠলেন ওই দিন কোনও খেলা থাকলেও আমরা খেলব না। ইস্ট বেঙ্গলের প্রতিনিধি বললেন, এটা আমাদের কাছে খুবই বেদনার দিন। ওইদিন আমাদের ক্ষতের দিন। ওই দিন কোনওভাবেই পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে পালন হতে পারে না। সোজা কথায়, এদিন নবান্নের বৈঠকে আগত বিশিষ্টজনেরা সকলেই একবাক্যে বাতিলের খাতায় ফেলে দেন ২০ জুনকে। এদিকে এই ২০ জুনই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করছে বিজেপি। মমতার ‘নিষেধ’ অমান্য করেই রাজভবনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন খোদ রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তৃণমূলের যুক্তি ২০ জনের সঙ্গে বাংলা ভাগের ক্ষত জড়িয়ে। এই দিন পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে পালন করা একদমই যুক্তি সঙ্গত নয়। এরইমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে নতুন দিনক্ষণ খুঁজতে কমিটি গড়ে ফেলে রাজ্য সরকার। এরইমধ্যে এদিন নবান্নে ডাকা হয় বাংলার বিশিষ্টজনেদের। ডাকা হয় সর্বদলীয় বৈঠক। নেওয়া হয় মতামত। সেখানেই কার্যত সকলেই সরকারের সুরে সুর মিলিয়েছেন বলে খবর। একবাক্যে নাকচ হয়ে গিয়েছে ২০ জুন। সিংহভাগের মুখেই উঠে এসেছে পয়লা বৈশাখের কথা।
সূত্রের খবর, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর নতুন দিনের প্রসঙ্গ বিধানসভায় তুলতে চলেছে সরকার। সেদিনই চূড়ান্ত দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের নাম যাতে বাংলা করা যায় সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে বহু আগে। সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ দিবসের পরিবর্তে বাংলা দিবসের পক্ষেও সওয়াল করেন কেউ কেউ। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সবপক্ষের মতামত নিজে বসে থেকে শুনেছেন মমতা। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে নেওয়া হবে বলে খবর।
একইসঙ্গে ইতিহাসের দিক থেকে দেখলে, ব্রিটিশ শাসনের অভিশপ্ত ইতিহাসের দিক থেকে দেখলে কেন ২০ জুনকে সর্বদাই বাতিলের খাতায় রাখতে হয় এদিন সেই ব্যাখ্যা দেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ সুগত বসু। এদিন তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের ৩ জুন ইরেজ ভাইসরয় মাউন্টব্যাটন তাঁর দেশভাগের পরিকল্পনার কথা জানান। অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি এই পার্টিশন প্ল্যান স্বীকার করে নিয়েছিল ১৯৪৭ সালের ১৫ জুন। তাই ২০ জুন আইনসভায় যা ঘটেছিল সেটা আমাদের দেশভাগের মর্মান্তিক ইতিহাস।” তবে তিনি ১ বৈশাখের পাশাপাশি ১৯ অগস্টের পক্ষেও সওয়াল করেছিলেন। অন্যদিকে নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি আবার রাখির দিনকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে পালন করার পক্ষে সওয়াল করেন। তাঁর কথার রেশ ধরেই ১৬ অক্টোবর পক্ষেও সওয়াল করেন সৌগত। তিনি বলেন, “১৬ অক্টোবর কার্জন সাহেব বঙ্গবঙ্গ করে দিয়েছিলেন। তাঁর প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ রাখি বন্ধন করেছিলেন। এটাও একটু মাথায় রাখা দরকার।”
বাকিদের মতো ২১ জুনকে বাতিলের খাতায় ফেলে রামকৃষ্ণ মিশনও। তাদের তরফে ১৫ অগস্টের পক্ষে সওয়াল করা হয় প্রথমে। যদিও শেষ পর্যন্ত সরকার সর্বোসম্মতিক্রমে যে সিদ্ধান্ত নেবে তাঁদের তাদের মত রয়েছে বলে জানানো হয়।