Organ Donation: এক ‘শরীর’ নতুন জীবন দিল তিন তিনটে মানুষকে, অঙ্গদানে আবারও নজির শহরে
SSKM: গত ১৬ সেপ্টেম্বর ডাম্পারের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন নব। মাথায় চোট পেয়ে সেদিন রাতেই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে।
কলকাতা: কিডনি বদল জরুরি ছিল পার্ক স্ট্রিটের তরুণীর। টালিগঞ্জ রিজেন্ট পার্কের গৃহবধূও লড়াই চালাচ্ছিলেন খারাপ কিডনি নিয়েই। নোয়াপাড়ার যুবক অপেক্ষায় ছিলেন সুস্থ হৃদযন্ত্রের। এক বছর ধরে সেই অপেক্ষা চলেছে। তিনজনকেই বাঁচিয়ে গেলেন বর্ধমানে যুবক। নব-অঙ্গে (Organ Donation) নবজীবন পেলেন তিনজন।
মৃত্যুর পরও এক থেকে বহু হলেন বর্ধমানের যুবক নব কিস্কু (৪১)। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ডাম্পারের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন নব। মাথায় চোট পেয়ে সেদিন রাতেই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় নব কিস্কুকে। সাতদিন ট্রমা কেয়ার বিল্ডিংয়ে চিকিৎসাধীন থাকার পর ব্রেন ডেথের ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
পরিবার এগিয়ে আসে তারপরই। অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেন একচল্লিশের যুবকের স্ত্রী, দাদারা। মৃতের হার্ট ও দু’টি কিডনি পান দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকা তিন রোগী। হার্ট প্রাপকের স্ত্রীর কথায়, “প্রায় এক বছর হয়ে গেল আসছি এখানে। ডাক্তারবাবুরা বলেছিলেন, পয়সা দিয়ে পারবেন না? আমরা বলেছিলাম, না! গরীব মানুষ আমরা। যে পরিবার এগিয়ে এল, তাদের আশীর্বাদ করি ভাল হোক ওদের। আমার স্বামীও যেন এবার সুস্থ হয়ে ওঠে।”
অন্যদিকে এক কিডনি প্রাপকের স্বামীর কথায়, “গত শুক্রবার রাতে আমার কাছে ফোন আসে। আপনারা চলে আসুন স্ত্রীকে নিয়ে। শনিবার ভোর পাঁচটার মধ্যে চলে আসবেন।” নব কিস্কুর পরিবারের কাছে ঋণী এঁরা প্রত্যেকেই। কিডনি প্রাপকের স্বামীর কথায়, “যে মানুষটি চলে গিয়েছেন তাঁকে তো আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি না। কিন্তু তাঁর পরিবারের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। উনি আমার স্ত্রীকে নতুন জীবন দিলেন। ওনার পরিবারের লোকজনের কাছে আমরা চিরঋণী।”
ঘরের ছেলেকে হারিয়েও এখানেই দৃষ্টান্ত বর্ধমানের পরিবারের। নব কিস্কুর ছোট ছেলে রয়েছে ঘরে। স্ত্রী এই চরম অসহায়তার সময়ও যে ভাবে অন্যের জীবনের কথা ভেবে এমন মহতী উদ্যোগ নিলেন তা শুধু সাধুবাদেই যথেষ্ট নয়। এ ঋণ আজীবন থেকে যাবে ওই তিন পরিবারের। নববাবুর ছোট্ট সন্তান বড় হবে। বাবাকে ছাড়াই বড় হতে হবে তাকে। কিন্তু এই কঠিন পৃথিবীর আড়ালে যে একটা মহৎ সংসার আছে, চার দেওয়ালের গণ্ডী পার করে যা বিশ্বময় ব্যাপ্ত, বাবার রেখে যাওয়া এ বার্তাই তাকে আজীবন চলার শক্তি জোগাবে।
আরও পড়ুন: Sovan Chatterjee: ফের লেগে গেল! বাড়ি ছাড়বেন না রত্না; কী ভাবে বের করতে হয় দেখিয়ে ছাড়বেন বৈশাখীও