TET Recruitment: কেন ‘আঁধারে’ মানিক? প্রাথমিক সভাপতিকে অপসারণের নেপথ্যে নজরে যে সমস্ত কারণ…

Calcutta High Court: এদিন আদালতে পর্ষদের বৈঠক নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। বৈঠক কি আদৌ হয়েছিল?

TET Recruitment: কেন 'আঁধারে' মানিক? প্রাথমিক সভাপতিকে অপসারণের নেপথ্যে নজরে যে সমস্ত কারণ...
মানিক ভট্টাচার্যকে পদ থেকে সরানোর নির্দেশ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 20, 2022 | 8:06 PM

কলকাতা: প্রাথমিক নিয়োগের দুর্নীতি নিয়ে খড়্গহস্ত হাইকোর্ট। এতগুলো ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ, অথচ সেখানে দুর্নীতির পাথার। একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। আদালতের নির্দেশেই সোমবার পদ খোয়ান প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার দুপুর ২টোয় তাঁকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিক নিয়োগের যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখবে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (CFSL)। এদিনই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রাইমারি বোর্ডের যাবতীয় কাজ দেখে ধাপ্পাবাজি মনে হচ্ছে। আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ এদিন আদালতে শুনানি চলাকালীন বেশ কয়েকটি বিষয়ে হোঁচট লাগে আদালতের। সেখান থেকেই উঠে আসে নানা প্রশ্ন। মানিক-অপসারণে সেসব প্রশ্নের ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

গত ১৩ জুন ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছিল হাইকোর্ট। ঠিক সাতদিন পর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে পদ থেকে সরানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু কেন মানিককে অপসারন? প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি ঠিকমতো না জমা দেওয়ায়, মানিককে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলে হাইকোর্ট। বর্তমান সচিব রত্না বাগচীকে আপাতত দায়িত্ব সামলাতে বলা হয়। প্রসঙ্গত, এই রত্না বাগচীও কোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যেই নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিয়েছেন। নিয়োগ নথি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছে হাইকোর্ট। প্রাথমিক নিয়োগের যাবতীয় নথি পাঠাতে হবে সিএফএসএলকে। ২০১৭ সালের কাগজপত্র সঠিক কি না তা দেখাই উদ্দেশ্য। বোর্ডের দুই কর্তা অভীক মজুমদার ও ঋত্বিক মল্লিকের সই মেলাবে তারা।

এদিন আদালতে পর্ষদের বৈঠক নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। বৈঠক কি আদৌ হয়েছিল? এদিন আদালত প্রশ্ন তোলে, ২০১১ সালের ৩ অগস্ট যে এক্সপার্ট কমিটি তৈরি হয়েছিল, তা অন্য কাজের জন্য নয় তো? এরপরই বিচারপতি নির্দেশ দেন, সব কাগজপত্র কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবে পরীক্ষা হবে। একটি চিঠির সই নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। টেটের প্রশ্নপত্রে ভুল রয়েছে, তাই নম্বর বাড়ানো হোক, এই মর্মে পর্ষদের কাছে মোট ২ হাজার ৭৮৭ আবেদনপত্র জমা পড়ে। যদিও ২৭৩ জনকে ১ নম্বর করে দেওয়া হয়। এই ২ হাজার ৭৮৭ আবেদনপত্রই দেখতে চেয়েছিল কোর্ট। কিন্তু পর্ষদ সেই আবেদনপত্রের বদলে আবেদনকারীদের রোল নম্বর দেয়। অন্যদিকে, দ্বিতীয় প্যানেলে ২৭৩ জনকে নিয়োগের কথা ছিল। যদিও ২৬৫ জন নিযুক্ত হন বলে আদালতকে জানায় পর্ষদ। কয়েকটি প্রিন্ট আউট কোর্টকে দেওয়া হয়, কিন্তু প্যানেল জমা করতে পারেনি পর্ষদ। জমা দিতে পারেনি কোনও অরিজিনাল ডকুমেন্টও। পাশাপাশি শুধু এক্সপার্ট কমিটিতে কারা ছিলেন, তা আদালতকে জানানো হয়। এরপরই খটকা লাগে কোর্টের।

এই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক তরজাও শুরু। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “সমস্ত প্যানেল যদি আগামিদিন হাইকোর্ট বাতিল করে দেয়, তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। এই সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিৎ।” অন্যদিকে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “কোর্ট ভালভাবে তদন্ত করার জন্য কাউকে বলুক। তদন্ত করার আগেই যদি আদালত কোনও সিদ্ধান্তে চলে যায়, সেই সিদ্ধান্ত ঠিক না ভুল কে বলবে।” একটি মামলার জন্য বোর্ড প্রেসিডেন্টকে অপসারণের নির্দেশ কার্যত নজিরবিহীন। তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ, কোথাও গিয়ে তাদের সঠিক তথ্য তুলে না দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন পর্ষদ সভাপতি। তার জন্যই অপসারণের সিদ্ধান্ত।