Calcutta High Court: বিচারপতি মান্থার এজলাসের বাইরে তুমুল বিক্ষোভ তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের, সতর্ক করলেন প্রধান বিচারপতি
Calcutta High Court: সোমবার তারই প্রতিবাদে এবার বিক্ষোভ করতে দেখা গেল তৃণমূলপন্থী আইনজীবীর একাংশকে।
কলকাতা: সোমবার সকালে হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাসের বাইরে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয় তৃণমূল আইনজীবীদের একাংশের। এজলাসের বাইরে গেট আটকে কোর্ট বয়কটের ডাক দেন তাঁরা। এর ফলে বিচারপতি মান্থার এজলাসে বিচার প্রক্রিয়া স্তব্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ্য, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর একটি মামলায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা রক্ষাকবচ দিয়েছিলেন। কেবল তাই নয়, তিনি এটাও নির্দেশ দিয়েছিলেন, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করতে হলে, যেন তাঁর এজলাসেই মামলা করা হয়। এই রায়ের প্রতিবাদে সোমবার বিক্ষোভ করতে দেখা গেল তৃণমূলপন্থী আইনজীবীর একাংশকে। বিভিন্ন সময়ে তৃণমূল নেতৃত্বকেও উষ্মা প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে বিচারপতি রাজাশেখের মান্থা এই রায়কে নিয়ে।
এদিন সকাল থেকেই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা। বিচারপতির এজলাসের বাইরে যে লক রয়েছে, সেটাও দিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মহিলা আইনজীবীরা সামনে দাঁড়িয়ে বিরুদ্ধাচ্চরণ করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। কেউ যাতে ভিতরে প্রবেশ করতে না পারেন, তার জন্য বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। বিচারপতির এজলাসের বাইরে এ ধরনের বিক্ষোভ নজিরবিহীন বলে মনে করছে আইনজীবীদের একাংশ। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য-সহ অন্যান্যরা। প্রধান বিচারপতি এদিন বলেন, ” সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হচ্ছে। সমস্যা মিটিয়ে নিন। না হলে পদক্ষেপ করা হবে।”
প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, এই ঘটনা ইতিমধ্যে টুইটারে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেরও নজরে আসবে। ভিডিয়োগুলো যদি সুপ্রিম কোর্টের নজরে আসে, তাহলে হাইকোর্টের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী গোটা বিষয়টি প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “কী ভাবে একজন বিচারপতির এজলাসের বাইরে ধর্না দিয়ে প্ল্যাকার্ড তুলে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে?” গোটা বিষয়টির ছবি তিনি প্রধান বিচারপতির সামনে তুলে ধরেন।
প্রধান বিচারপতি এজলাসে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে নিন্দাপ্রকাশ করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও। তাঁর আবেদন, বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিকে ডেকে প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি তোলা হোক। এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, “বারের সভাপতি এবং রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে ডেকে পাঠান। তাঁদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাই। বিচারপতির এজলাস কী ভাবে বয়কট করা যেতে পারে?” প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “এটা উচিত নয়। সব তথ্য প্রমাণ নিয়ে আসুন। বারের সভাপতি ডেকে পাঠাচ্ছি। এই ঘটনা হওয়া উচিত নয়। বিষয়টি আমরা দেখেছি।”
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব আপাতত এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়কে ডেকে নির্দেশ দিয়েছেন, বিষয়টি দেখার। এজি বলেন, “আমি এখনই বিষয়টি শুনলাম। আমি দেখছি।” শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, বয়কট ওঠেনি। এদিন হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ৩০৬টি মামলা শোনার কথা ছিল। তিনি মামলা না শুনেই উঠে যান।পরবর্তী সময়ে যদি এজির অনুরোধে আইনজীবীরা সরে দাঁড়ান, তাহলে বিচারপতি মান্থা আপাতত বসতে পারেন। এখনও পর্যন্ত বয়কট চলছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও নিয়োগ দুর্নীতি মামলা চলাকালীন হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন আইনজীবীদের একাংশ।