CBI: ‘ডাকা হলে আবার আসব’, সাড়ে ছ -ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বললেন কাঁথির আইসি
নির্দিষ্ট সময়ের আগে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হাজিরা দেওয়ার জন্য নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস। তারপরই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন গোয়েন্দা আধিকারিকেরা।
কাঁথি: কাঁথি পুরসভার টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় এবার সিবিআইয়ের মুখোমুখি কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস। সোমবার নির্দিষ্ট সময়ের আগে, সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস। সিবিআই আধিকারিকেরাও প্রস্তুত ছিলেন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য। আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস নিজাম প্যালেসে পৌঁছনোর পরই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। প্রায় সাড়ে ছ-ঘণ্টা টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যায় নিজাম প্যালেস থেকে বেরোন তিনি। আর বেরিয়েই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস বলেন, “মহামান্য আদালতের নির্দেশে তদন্ত চলছে এই বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। যদি ডাকা হয় আবার আসব।”
সিবিআই সূত্রে খবর, এদিন সকাল ১১টায় কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাসকে নিজাম প্যালেসে তলব করেছিল CBI। কিন্তু, নির্দিষ্ট সময়ের আগে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হাজিরা দেওয়ার জন্য নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস। তারপরই কাঁথি পুরসভার টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন গোয়েন্দা আধিকারিকেরা। মূলত রাম পণ্ডার বিবৃতির প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা কাঁথি থানার আইসি-কে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন বলে সূত্রের খবর। তাঁর সমস্ত বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ছ-ঘণ্টা টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
প্রসঙ্গত, কাঁথি পুরসভার টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত ঠিকাদার রাম পণ্ডা। গত ২৭ ডিসেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করে কাঁথি থানার পুলিশ। রাম পণ্ডাকে গ্রেফতার করিয়ে শাসকদল আদতে শুভেন্দু অধিকারীকে চাপে ফেলতে চাইছেন বলে অভিযোগ ওঠে। গত বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পেয়েই পুলিশ থেকে নবান্নের সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন রাম পণ্ডা। তাঁকে টার্গেট করে ২০টি মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে অভিযোগ করে রাম পণ্ডা বলেন, “কাঁথি থানা থেকে ৩০ তারিখ আমাকে সকাল ৯টার সময় বলা হল তমলুক কোর্টে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু, নন্দকুমার পেরিয়ে আমাকে একটা চুন কারখানার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর আমাকে একটা ফাঁকা ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের তরফ থেকে বলা হয় নবান্ন থেকে বড় বড় অফিসাররা আসছেন ঠিকঠাক করে উত্তর দেবেন। এরপর দেখি তিন জন অফিসার ঢুকলেন। ঘরে ঢুকেই রিভলভার বের করলেন। গলা উঁচিয়ে বললেন, শুভেন্দু অধিকারীর টাকা কোথায় বল। না বললে ৮৭টা কেস দেব। রাজ্যের সমস্ত জেলে ঘুরিয়ে আনব। আর যদি বলতে না চাস তাহলে আমরা বয়ান লিখব। সই করবি। সেটা মিথ্যা হোক, সত্যি হোক।” বন্দুকের নলের সামনে বসিয়ে তাঁর উপর মানসিক অত্যাচার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন রাম পণ্ডার আইনজীবী অনির্বাণ চক্রবর্তী। শুভেন্দু অধিকারীকে ভালবাসার জন্যই তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রাম পণ্ডা।
রাম পণ্ডার এই বিবৃতির পরদিনই কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাসকে তলব করে সিবিআই। যা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। শাসকদল শুভেন্দু অধিকারীকে চাপে ফেলতে রাম পণ্ডাকে গ্রেফতার করিয়েছিল বলে যেমন অভিযোগ উঠেছে, তেমনই এবার আইসি-কে সিবিআইয়ের তলবের মধ্য দিয়ে গোটা ঘটনা অন্য মোড় নিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।