R G Kar Hospital: ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠিয়েছিল পুলিশ, ডাক্তারি পড়ুয়াদের পড়াতে সেই দেহই কাটাছেঁড়া কর্মশালায়! RG Kar-এ গুরুতর অভিযোগ
R G Kar Hospital: মেডিক্যাল লিগ্যাল কেসের জন্যই এই পাঁচটি দেহ পুলিশ মর্গে আনা হয়েছিল। সেই দেহগুলিই গিয়েছে ইএনটির ওয়ার্কশপের জন্য।
কলকাতা: আর জি কর-এ ভয়ঙ্কর কাণ্ড। ময়নাতদন্তের দেহ নিয়ে কর্মশালা। ইএনটির কর্মশালায় নিয়ে আসা হয় ফরেন্সিকের ৫ দেহ। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের জন্য রাখা ওই দেহগুলি কাটাছেঁড়া করে নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসক পড়ুয়াদের দেখানো হল কীভাবে হয় ‘এন্ডোস্কোপিক সাইনাস সার্জারি’। আর এ সব পুলিশের অনুমতি ছাড়াই করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী কোনও সম্মতিও নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন ওই দেহগুলির পরিবার। সূত্রের খবর, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নির্দেশেই ফরেন্সিক বিভাগ থেকে দেহগুলি গত পাঁচ জানুয়ারি কর্মশালার জন্য নাক-কান-গলা বিভাগে পাঠানো হয়। বিতর্কিত পদক্ষেপে কাঠগড়ায় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, ৫ জানুয়ারি আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগের পুলিশি মর্গে দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য আনা হয়। মেডিক্যাল লিগ্যাল কেসের জন্য দেহ ময়নাতদন্তের স্বার্থে পাঠিয়েছিল পুলিশ। ওই দিন সকালে সেই দেহগুলিকে ইএনটি-র এন্ডোস্কোপিক সাইনাস সার্জারির কর্মশালায় ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ডাক্তারি পড়ুয়াদের পঠনপাঠনের জন্য সেগুলি ব্যবহার হয়েছিল। এরপর বিকেল ৫টায় ওই দেহগুলির ময়নাতদন্ত করা হয়।
প্রশ্ন উঠছে, ময়নাতদন্তের আগে কীভাবে এন্ডোস্কোপিক সার্জারির জন্য এই পাঁচটি দেহ ফরেন্সিকের কাছ থেকে গেল? জানা যাচ্ছে, ওই কর্মশালায় ইএনটি-র তরফ থেকে প্রিন্সিপ্যাল সন্দীপ ঘোষের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। সেখানে অধ্যক্ষের অনুমতির পর ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রবীর চক্রবর্তী সেই অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, এটা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নিয়মের পরিপন্থী। এটা অত্যন্ত সংবেদনশীল ঘটনা। পুলিশের আদৌ অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কারণ মেডিক্যাল লিগ্যাল কেসের জন্যই এই পাঁচটি দেহ পুলিশ মর্গে আনা হয়েছিল।
পুলিশ মহলের বক্তব্য, নিয়ম অনুযায়ী আগে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। সেটা আবার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ থাকতে হবে। উল্লেখ থাকতে হবে, ময়নাতদন্তের আগে এন্ডোস্কোপিক সার্জারি হয়েছে। পরিজনরাও বলছেন, তাঁদেরকেও বিষয়টি জানানো হয়নি। TV9 বাংলার তরফে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছিল এক মৃতের আত্মীয়ের সঙ্গে। গদাধর হাজরা নামে এক মৃতের পরিজন বলেন, “আমাদের এই সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি। আমরা ওত বুঝিও না।” অভিজিৎ কর্মকার নামে অন্য এক মৃতের আত্মীয় বলেন, “আমরা সেরকম কিছুই জানি না। আমাদের তো জানাতে হত।” জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, পরিবারের অনুমতি এক্ষেত্রে ভীষণরকমভাবে প্রয়োজন। সেখানে স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে, কোনও দেহের কোনও অসম্মান হবে না।
এ প্রসঙ্গে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ অজয় গুপ্ত বলেন, “ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পুলিশ পাঠিয়েছে। সেই প্রক্রিয়া আমরা দেরি করতে পারি না। সেই কারণেই কর্মশালার পর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সেটা উল্লেখ থাকতে হবে। দেহের এই অঙ্গে আমরা এন্ডোস্কোপিক সার্জারির জন্য ডি সেকশন করা হয়েছে। এটা উল্লেখ থাকতে হবে।” বিষয়টা নিয়ে বিতর্ক থেকেই যাচ্ছে।