Calcutta University: ফি মকুবের ঘোষণা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের! অতিমারির আবহে নিঃসন্দেহে বড় পদক্ষেপ
এই সেমেস্টার ফি দিতে না পারা ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। অনেক পড়ুয়া এই ফি-এর একটা অংশ জমা দিলেও, অনেকেরই পুরো টাকা বকেয়া রয়েছে।
কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে বড় পদক্ষেপ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের। সমস্ত সেমেস্টারের টিউশন ফি মকুব করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল কর্তৃপক্ষ। এই ফি মকুব নিয়ে এর আগে একাধিক ছাত্র সংগঠন সরব হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা গত দেড় বছর ধরে বন্ধ, সেখানে সেমেস্টারের টিউশন ফি নেওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন পড়ুয়ারা। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের দাবি একই। তবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সেই দাবিকে মান্যতা দিল।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পড়ুয়ারা। গত কয়েক দিনে একাধিক বার ছাত্র সংগঠনগুলিও সহ-উপচার্যের দ্বারস্থ হয়েছে। তাদের একটাই দাবি ছিল, করোনা আবহে যখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ তখন কেন এই টিউশন ফি নেওয়া হবে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার DSO একটি ডেপুটেশনও জমা দেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই স্মারকলিপি জমা দেওয়ার আগে অবস্থান বিক্ষোভ করে তারা। সেদিনই সহ-উপাচার্য এই ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের আশ্বস্ত করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, এই দাবি মেনেও নেওয়া হবে। সেই মতো ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটি সেমেস্টারের টিউশন ফি মকুবের কথা জানাল। সেই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে রেজিস্ট্রারের তরফে।
প্রসঙ্গত, এই সেমেস্টার ফি দিতে না পারা ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। অনেক পড়ুয়া এই ফি-এর একটা অংশ জমা দিলেও, অনেকেরই পুরো টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই সমস্ত বকেয়া মকুব করে দিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষামহল এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে। অতিমারির আবহে প্রথম কোনও বিশ্ববিদ্যালয় যারা সেমেস্টারের টিউশন ফি পুরোপুরি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কী এই সেমেস্টারের টিউশন ফি? প্রত্যেক কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা যে পড়ান, তার জন্য তাঁরা যেমন সরকারের কাছ থেকে বেতন পান। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পড়ুয়াদের কাছ থেকেও এই পড়ানোর খরচ হিসাবে একটা টাকা নেন। এখানেই আপত্তি ছাত্র-ছাত্রীদের। তাঁদের বক্তব্য, যখন তাঁরা এই অতিমারির আবহে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামোর সাহায্যই নিচ্ছেন না। অর্থাৎ সশরীরে হাজির থেকে কোনও অধ্যাপক ক্লাস নিচ্ছেন না, কোনও পড়ুয়াও ক্লাসরুম কিংবা ল্যাবেরটরি ব্যবহার করছেন না। অন্যান্য কোনও কিছুই ব্যবহার হচ্ছে না কলেজের। তা হলে এই টাকা নেওয়ার যুক্তি কী!
এ নিয়ে এর আগে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়েছে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রতিবাদ হয়েছে। বার বার ডিএসও সোচ্চার হয়েছে এই ইস্যুতে। তিন মাস আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যের কাছে একটি ডেপুটেশন দিয়েছিল তারা। ফের বৃহস্পতিবারও একসই দাবিতে ডেপুটেশন দেয়। সহ-উপাচার্যের ঘরের সামনে কার্যত বিক্ষোভে বসে যায় সংগঠনের সদস্যরা।
সহ-উপাচার্য আশ্বাস দিয়েছিলেন সমস্যা মিটবে। এরপরই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শুক্রবার রেজিস্ট্রারের সই সম্বলিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সেই বিজ্ঞপ্তি আপলোডও করে দেওয়া হয়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, যতদিন না এই বকেয়া ফি পড়ুয়ারা দেবেন, ততদিন রেজাল্ট বা মার্কশিট হাতে পাবেন না। এবার এই ফি মকুবের সিদ্ধান্তে সেই বাধা আর রইল না। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিএসও-এর বক্তব্য, তাদের টানা আন্দোলন সফল হল। আরও পড়ুন: ফের হামলার আশঙ্কায় বন্ধ বিমানবন্দরের রাস্তা, ২৮ তালিবানি সহ বিস্ফোরণে মৃত কমপক্ষে ১০৩