হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বঙ্গে এবার ‘ফ্রি-হ্যান্ড’ সিবিআই! তদন্তে অনুমতি লাগবে না রাজ্যের

CBI Calcutta High Court: আদালতের এই পর্যবেক্ষণ আগামী সময় যে কোনও মামলায় সিবিআই-এর কাজ অনেকটাই সহজ করে দিল বলেই মনে করছে আইনজ্ঞ মহল।

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বঙ্গে এবার 'ফ্রি-হ্যান্ড' সিবিআই! তদন্তে অনুমতি লাগবে না রাজ্যের
আদালতের বড় পর্যবেক্ষণ সিবিআই-এর পক্ষে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 28, 2021 | 11:20 PM

কলকাতা: রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত কোনও জায়গায় তদন্ত করতে সিবিআই-কে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে, এর কোনও যুক্তি নেই। গরু ও কয়লা পাচার কাণ্ডে বিনয় মিশ্রের মামলায় রায় দিতে গিয়ে বুধবার নিজের পর্যবেক্ষণে এমনটাই বললেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। আদালতের এই পর্যবেক্ষণ আগামী সময় যে কোনও মামলায় সিবিআই-এর কাজ অনেকটাই সহজ করে দিল বলেই মনে করছে আইনজ্ঞ মহল।

প্রসঙ্গত, রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় তদন্ত করতে হলে রাজ্যের অনুমতি নিতে হবে, এই মর্মে ২০১৮ সালে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার। কী কারণে রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত, সেটা কোথাও বলা নেই ওই বিজ্ঞপ্তিতে। তাই বিজ্ঞপ্তির কোনও বৈধতা নেই। আর সেই কারণেই সিবিআই যে কোনও রাজ্যেই স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারে বলে পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের।

গরু ও কয়লা পাচার কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র হাইকোর্টে সিবিআই তদন্ত খারিজের আবেদন করে মামলা করেন। সেই মামলায় বিনয়ের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, বিনয় এ দেশের বাসিন্দা নন। তাঁকে জেরা করতে চাইলে সিবিআই ভিডিয়ো কনফারেন্সে করতে পারে। সিবিআই-এর পালটা যুক্তি ছিল, কয়লা ও গরুপাচার কাণ্ডে বিএসএফ এবং রেলের অফিসারদের নাম এসেছে। সেক্ষেত্রে তদন্ত করতেই হবে এ রাজ্যে। ফলে রাজ্যে তদন্ত করতে গেলে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠে আসে। বিচারপতি জানিয়ে দেন, রাজ্য ২০১৮ সালে যে পদ্ধতিতে জেনারেল কনসেন্ট বা সাধারণ সম্মতি তুলে নেয়, তার কোনও ভিত্তি নেই। ফলে রাজ্যের এলাকায় তদন্ত করতে রাজ্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন নেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার।

নিজের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি আরও জানান, দিল্লি পুলিশের আইন অনুযায়ী, যে মামলায় সিবিআই তদন্ত করছে সেই মামলায় অভিযুক্ত যদিও রাজ্য সরকারের কোনও কর্মী হন, সেক্ষেত্রে সাধারণ সম্মতির যুক্তি খাটতে পারে। কিন্তু গরু পাচারের মামলায় অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র কোনও ভাবে রাজ্য সরকারের সাংবিধানিক কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত নয়। দুর্নীতির যে ঘটনা ঘটেছে তাতে রাজ্য সরকারের কোনও ক্ষতিও হয়নি। ফলে এই মামলার ক্ষেত্রে সিবিআই রাজ্য সরকারের সম্মতি না নিলেও তা বেআইনি বলে গণ্য হবে না।

উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার মামলার সময়ও এই সাধারণ সম্মতির যুক্তি এনেছিল রাজ্য। বুধবারের রায়ে বিচারপতি জানিয়েছেন, সিবিআই তদন্ত যে পর্যায়ে রয়েছে, সেখানে বিনয়ের আবেদনে সাড়া দেওয়ার অর্থ পায়নি আদালত। আসলে বিনয়কে জেরা করে আরও বড় নাম উঠে আসতে পারে বলেই জানিয়েছিল সিবিআই। সেই পথ এই রায়ের পর আরও মসৃণ হল বলে মনে করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: ‘আমি থোরাই লিডার, আমি তো ক্যাডার’, সনিয়া-রাহুলের সঙ্গে বৈঠক শেষে মন্তব্য মমতার