Bagtui Massacre: কথা বললেই ফ্লোরে বকা দেবে, বললেন জুন মালিয়া
Bagtui Massacre: কলকাতা থেকে প্রায় আড়াই শো কিলোমিটার দূরে ঘটে যাওয়া নারকীয় ঘটনা কতটা প্রভাব ফেলল ‘শহুরে’বুদ্ধিজীবীদের মনে? রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি সব মহল থেকে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া নেওয়ার চেষ্টা করেছে TV9 বাংলা।
কংগ্রেস কাউন্সিলর খুন। তৃণমূল কাউন্সিলর খুন। তৃণমূলের উপপ্রধান খুন। নয়া সংযোজন বগটুইয়ে গণসংহার। গত কয়েক সপ্তাহে খুনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত। বিরোধীরা বলছেন, রাজ্যে আইনের শাসন নেই। শাসক বলছে, রাজ্যকে বদনাম করতে কুৎসা রটানো হচ্ছে। এই না হলে অন্তহীন রাজনৈতিক তর্জা। কিন্তু এ রাজ্যের সুশীল সমাজ কী ভাবছে? রাজ্যের এই হত্যা পরম্পরা, বিশেষত বগটুই গণহত্যা প্রসঙ্গে সেই তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের কী মত তা এমনিতে জানা যায়নি। তাই এ বিষয়ে বিশেষভাবে সচেষ্ট হল ‘TV9 বাংলা ডিজিটাল’।
সোমবার রাতে বীরভূমের অজপাড়া গাঁ বগটুইয়ে বর্বরোচিতভাবে ৭ জনকে আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। যদিও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। এই ঘটনায় প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডলের দাবি, শর্ট সার্কিটেই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। এরপর একেক করে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেন শাসক দলের নেতারা। শেষমেশ রাজ্য সরকারের গঠন করা ‘সিট’ স্বীকার করে নেয়, আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ওই বাড়িগুলিতে। অর্থাৎ ইচ্ছাকৃত খুনের তদন্ত শুরু করে ‘সিট’।
কিন্তু প্রশ্ন, কলকাতা থেকে প্রায় আড়াই শো কিলোমিটার দূরে ঘটে যাওয়া নারকীয় ঘটনা কতটা প্রভাব ফেলল ‘শহুরে’বুদ্ধিজীবীদের মনে। রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি সব মহল থেকে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া নেওয়ার চেষ্টা করেছে TV9 বাংলা। অনেকেই এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। আবার অনেকে সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন। অনেকে আগের থেকে জেনে গিয়েছিলেন, অনেকেই আবার নাকি TV9 বাংলার থেকে খবরটা প্রথম শোনেন এবং পরে প্রতিক্রিয়া দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এরপরে ফোন কেবল বেজেই গিয়েছে। তবু যে কয়েকজন বুদ্ধিজীবী স্তব্ধতা ভেঙেছেন, তাঁদের প্রতিক্রিয়াই তুলে ধরা হল।
কবীর সুমন: মার্জনা করবেন। আমি কোনও ব্যাপারে কোনও মত দেব না। আপনার মঙ্গল হোক। নমস্কার নেবেন।
শুভাপ্রসন্ন: আমি তো বাইরে আছি। আমি জিনিসটা জানি না গো। সারাদিন মিটিংয়ে রয়েছি। জানলে নিশ্চয়ই দিতাম।
(বুধবার সকালে আরও একবার শুভাপ্রসন্নবাবুকে ফোনে ধরা হয়। রামপুরহাট হত্যাকান্ড নিয়ে প্রতিক্রিয়াও দেন। পড়ুন:
‘আমাদের কতটা সৌভাগ্য যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অনেক কিছু ভাল হচ্ছে’)
সুবোধ সরকার: আমি তো এখন কবিতা উৎসবে। বিষয়টা আমি জানিও না। বলতে পারবো না। কোথায় কী হয়েছে? (সবটা শোনার পর…) রামপুরহাটে কোথায়? -কখন ঘটল?
TV9: কাল রাতে হয়েছে। সেখানে ফিরহাদ হাকিম গিয়েছেন, অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরাও গিয়েছেন।
সুবোধ সরকার: ঠিক আছে। আমি এখন উৎসবের মধ্যে আছি।
TV9: তাহলে কি রাতের দিকে ফোন করবো?
সুবোধ সরকার: বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যাবে। আমাকে বিষয়টা দেখতে হবে। (ফোন কেটে গেল)
(বুধবার সকালে একাধিকবার ফোন করা হয় সুবোধ সরকারকে। কিন্তু ফোন ধরেননি)
জুন মালিয়া : আমি শুটিংয়ে ব্যস্ত। এখন কথা বললে ফ্লোরে বকা দেবে।
দেব: আমার এ বিষয়ে কিছু বলার নেই।
কাঞ্চন মল্লিক: রামপুরহাট নিয়ে প্রশ্ন তো? আমি বুঝতে পেরেছি। কিন্তু আমি এই মুহূর্তে শটের মাঝে রয়েছি, বিশ্বাস করুন। ফোনটা ধরেছি বলে শুটিংটাই বন্ধ হয়ে আছে। পাশে লোক দাঁড়িয়ে।
আমি একটু পরে আপনার সঙ্গে কথা বলছি।
যদিও এর প্রায় এক ঘণ্টা পর তাঁকে ফোন করলে কাঞ্চনের ফোন বেজে যায়।
লাভলী মৈত্র : আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।
তৃণা সাহা: একবিংশ শতাব্দীতেও যে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, ভাবতেই আমার অবাক লাগছে। এখনও এরকম পলিটিক্যাল ক্রাইসিসের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে আমাদের। এখনও যে এরকম ঘটতে পারে, ভাবতে পারি না। এ দিকে মানুষ কত আধুনিক। দেশও চালায় তারা। আসলে সবচেয়ে বড় দোষী মানুষের মস্তিষ্ক। মানুষ কেন এগুলো করছে, কেন মারছে, নিজেরাই বুঝতে পারছে না।
অনীক দত্ত: আমার মনে হয়, এই ঘটনা কলকাতায় হলেও বুদ্ধিজীবীরা রাস্তায় নামতেন না। আমি আজই ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছি এবং সেই পোস্টে লিখেছি, “পৃথিবীতে বাংলাই বোধহয় সেই জায়গা যেখানে বুদ্ধিজীবী শব্দটি নোংরা, প্রায় গালাগালির সমান।” এই রাজ্যে বুদ্ধিজীবী শব্দটা শুনলে মানুষ বিশেষ পাত্তা দেন না।
রুদ্রনীল ঘোষ: আমি ভীত। আমি শিহরিত। ঘটনার কথা ভাবলেই বারেবারে চমকে উঠছি। রাতের অন্ধকারে এমন ভয়াবহ ঘটনা আমারই বাংলার বুকে! এ কী অরাজকতা। এ কী অন্ধকার সময়!
আরও পড়ুন : Rudranil Ghosh: পুলিশ আজ দলদাস, আইনশৃঙ্খলা দাঁত নখ বার করে বেরিয়ে পড়েছে: বগটুইকাণ্ডে রুদ্রনীল ঘোষ
গৌতম ঘোষ: ভয়ঙ্কর ঘটনা। আমার মনে হয়, হিংসা-প্রতিহিংসা আমাদের কিছুতেই ছাড়ছে না। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। অনেক সময়ই লক্ষ্য করেছি এবং এক্ষেত্রেও মনে হল দ্বন্দ্ব কিংবা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বর কারণেই এরকমটা হতে পারে। সব সময় যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে হবে, তেমনটা কিন্তু না-ও হতে পারে। রাজনৈতিক হিংসা থাকেই। এছাড়াও, এই ব্যক্তিগত কিংবা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও এরকম জায়গায় চলে গিয়েছে। যেটা বুঝলাম, একমাত্র প্রশাসনকেই কঠোরভাবে সমাধান করতে হবে, যাতে এই ধরনের কাণ্ড আর না ঘটে।