গুরুতর করোনা আক্রান্তের বিরল অস্ত্রোপচার সাগর দত্ত হাসপাতালে, পূর্ণ অজ্ঞান করেই প্রাণ বাঁচল রোগীর
কোভিড আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে যে কোনও অস্ত্রোপচার এমনিতেই যথেষ্ট ঝুঁকির। বিশেষ করে জেনারেল অনেস্থেসিয়া বা পূর্ণ অজ্ঞান করে অস্ত্রোপচারের বিষয়টি আরও চ্যালেঞ্জিং।
কলকাতা: অতি মহামারীর সময় বিরল অপারেশন করে অনন্য নজির সৃষ্টি করল সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। রীতিমতো চ্যালেঞ্জ নিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর খাদ্যনালীতে জটিল অস্ত্রোপচার করে তাক লাগালেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কোভিড আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে যে কোনও অস্ত্রোপচার এমনিতেই যথেষ্ট ঝুঁকির। বিশেষ করে জেনারেল অনেস্থেসিয়া বা পূর্ণ অজ্ঞান করে অস্ত্রোপচারের বিষয়টি আরও চ্যালেঞ্জিং। সে রকমই এক অসাধ্য সাধন করা হয়েছে এই হাসপাতালে।
সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে গুরুতর করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন নিমতা বেলঘরিয়ার বছর ৫৮-র বাসিন্দা ভোলা দাস। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাঁর খাদ্যনালীর ডুওডেনামে ফুটো ধরা পড়ে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে পেপটিক পারফোরেশন বলে। এমন অবস্থায় রোগীকে পূর্ণ অজ্ঞান করে দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে জীবন সংশয় নিশ্চিত।
এহেন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েও কোনও দ্বিধা করেননি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের আরএমও ডা. শুভদীপ হালদারের নেতৃত্বাধীন সার্জিক্যাল টিম (সায়ন মিস্ত্রি, রুবিনা পারভিন) এবং ডা. অঞ্জন দাসের নেতৃত্বে থাকা অনেস্থেসিয়ার টিম (ডা. আমির হুদা, ডা. সুদীপ্ত সাহা) ও নার্স ও অন্যান্য চিকিৎসা কর্মীরা। রাতেই ঠিক হয়, রোগীর জীবন বাঁচাতে যত দ্রুত সম্ভব অস্ত্রোপচার করতেই হবে।
আরও পড়ুন: ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে পেটাবেন না তো রত্না! বৈশাখীর জন্য নিরাপত্তা চেয়ে কমিশনারকে শোভনের চিঠি
যেমন ভাবা তেমন কাজ। রাতেই ফোন করে ডেকে আনা হয় রোগীর পরিজনদের। তাঁদের অনুমতি নিয়ে শুরু হয় অস্ত্রোপচার। পূর্ণ অজ্ঞান করে রোগীর শ্বাসনালিতে টিউব দিয়ে কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস বজায় রাখা হয়। চলতে থাকে অপারেশন। অস্ত্রোপচারের সময় সংক্রমণ ছড়ানোর প্রবল সম্ভাবনা ছিল অপারেশনে যুক্ত চিকিৎসক টিম এবং সাপোর্ট স্টাফদের মধ্যে।
যদিও শেষ পর্যন্ত তেমনটা হয়নি। ভালয় ভালয় অস্ত্রোপচার শেষ হয়। রোগী এখন ভাল আছেন। করোনা পরিস্থিতিতে একদিকে যখন অনেক ক্ষেত্রেই আক্রান্ত রোগীর থেকে প্রতিবেশীরা দূরে সরে থাকছেন, সেখানে চিকিৎসকদের এমন মানবিক কাজের জন্য কোনও ধন্যবাদই যথেষ্ট নয়।