নির্বাচন, পুজোর মরসুমে মেতে? ভুললে চলবে না, সংক্রমণ এখনও চাগিয়ে খেলছে
Covid-19: পুরসভার গোপন রিপোর্ট বলছে, গত ১৪ দিনে ১০ জনের বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এমন ওয়ার্ডও রয়েছে।
কলকাতা: হাতে আর মাস খানেকও সময় নেই। পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ল বলে। কিন্তু এরই মধ্যে আবারও মহানগরের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে কোভিডের (COVID-19) সংক্রমণ। কলকাতা পুরসভার পরিসংখ্যান বলছে, ন’টি বরোর সাতচল্লিশটি ওয়ার্ডে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। আর এসবের মধ্যেই ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে আবার উপনির্বাচন। তার আগে জমিয়ে চলছে ভোট প্রচারও।
পুজোর আগেই মহানগরে বাড়ছে উদ্বেগ। কলকাতায় ফের বাড়ছে সংক্রমণ। দিন কয়েক আগে গণেশ পুজোয় মানুষের ভিড় ঘুম কেড়েছে বিশেষজ্ঞদের। দুর্গাপুজো নিয়েও চিন্তার ভাঁজ তাঁদের কপালে। আর সেই ভাঁজ আরও চওড়া করছে পুরসভায় জমা পড়া সাম্প্রতিক রিপোর্ট।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, কলকাতা পুরসভার ন’টি বরোর ৪৭টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে গত ১৪ দিনে ১০ জনের বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতার সার্বিক প্রবণতা বলছে, ২১ জুলাই কলকাতায় দৈনিক আক্রান্ত ছিলেন ৬০ জন। ৩০ অগস্ট তা বেড়ে হয় ৮১ জন। ৩১ অগস্ট সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৯২-এ। ২ সেপ্টেম্বর তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০৬। ৫ সেপ্টেম্বর সেই সংখ্যাই ১২৯ ছোঁয়। ১১ সেপ্টেম্বর ১২৭ জন আক্রান্ত। ১২ সেপ্টেম্বর ১২৫ জন। এই তথ্য পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতরের।
কলকাতার যে সমস্ত ওয়ার্ডে করোনা বাড়ছে বলে রিপোর্ট দিয়েছে পুরসভা, তার মধ্যে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের একটি ওয়ার্ডও রয়েছে। ভবানীপুর কেন্দ্রে মোট আটটি ওয়ার্ড। ৬৩, ৭০ থেকে ৭৪, ৭৭ এবং ৮২। তার মধ্যে পার্ক স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিট সংলগ্ন ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে।
পুরসভার গোপন রিপোর্ট বলছে, গত ১৪ দিনে ১০ জনের বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এমন ওয়ার্ডও রয়েছে। ভোটের মুখে ভবানীপুরে সংক্রমণ বাড়ায় উদ্বিগ্ন কলকাতা পুরসভা। যদিও প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলছেন, “করোনার সংখ্যা বাড়েনি। যা ছিল তাই আছে। একশোর আশেপাশে রয়েছে। কিন্তু আমরা সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছি। সম্পূর্ণ টিকাকরণ করছি। সংক্রমিত যাঁরা হচ্ছেন তাঁদের নব্বই শতাংশ উপসর্গহীন। করোনা তো কারও হাতে নেই। কিন্তু উপসর্গহীনই বেশি।”
ভোটের প্রচার, পুজোর বাজার, মহোৎসব! করোনার সামনেও মহা সংক্রমণের মহা সুযোগ। সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে বড় বিপদ। ইতিমধ্যেই হাসপাতালে চাপ বাড়তে শুরু করেছে। বেলেঘাটা আইডির চিকিৎসক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “আমাদের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী দেখার অভিজ্ঞতা এবং গ্রামের দিক থেকে যা রিপোর্ট আসছে, তাতে জ্বর মানুষের মধ্যে বাড়ছে। টেস্ট হয়তো করাতে পারছেন না অনেকেই। কিন্তু করোনা চলে গিয়েছে এটা কিন্তু ভাবার কোনও কারণই নেই।”
হাসপাতাল সংগঠনের কর্তা রূপক বড়ুয়া বলেন, “অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে যে ট্রেন্ড আমরা দেখতে পারছি তাতে কিন্তু সংক্রমণ আবার বাড়ছে। জুলাই কিংবা অগস্টের শুরু দিকে যে সংখ্যাটা ছিল তা বাড়ছে। এই রোগীর সংখ্যা কিন্তু ক্রিটিকাল কেয়ার সেগমেন্টে বাড়ছে। এটাও চিন্তার বিষয়।”