BJP Meeting: মানুষের ভরসা পেতে মরিয়া পদ্ম, মমতাকে পিছনে ফেলতে কোন অস্ত্রে শান শাহের?
BJP Meeting Amit Shah-Nadda: রুপোলি পর্দার 'হিরো' নয়, গেরুয়া পতাকা হাতে যাঁরা প্রতিদিন রাস্তায় নেমে দলের জন্য কাজ করেন, গলা ফাটান, তাঁদেরই দেওয়া হতে পারে টিকিট। যে খসড়া ইতিমধ্যেই বঙ্গ বিজেপি তৈরি করেছে বলে সূত্রের খবর।
কলকাতা: ২০১৪-য় ছিল ২। ২০১৯-এ এক ধাক্কায় তা বেড়ে ১৮। আর ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে শাসকদল পায় ২২টি আসন। শাসকদলকে জোর টক্কর দেওয়ার পর দিলীপ ঘোষদের মুখে তখন উজ্জ্বল হাসি। বাম-কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠে বিজেপি। উনিশের লোকসভা নির্বাচনের পরই রাজ্য রাজনীতির সমীকরণ বদলাতে শুরু করে। রাজ্যে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখা শুরু করেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু, একুশের নির্বাচনে বিজেপির সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এরপর পুরভোট, পঞ্চায়েতে ভোটে ধাক্কা খেয়েছে গেরুয়া শিবির। এই অবস্থায় চব্বিশের লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দিয়েছেন অমিত শাহ। বিজেপির টার্গেট ৩৫। তাই ২৪-এর জন্য এবার কি রণকৌশল বদলাবে গেরুয়া শিবির? মঙ্গলবার শহরে এসে তারই পথ দেখালেন শাহ-নাড্ডা।
সূত্রের খবর, তারকার চমক নয়, বিজেপি শিবিরের লক্ষ্য এখন মানুষের কাছে গিয়ে ভোট আনা। সেই ভরসা-বিশ্বাস তৈরিতেই বদ্ধপরিকর শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রার্থী বাছাই থেকে নির্বাচনী কমিটি গঠন- সব ক্ষেত্রেই সে কথা মাথায় রাখা হচ্ছে। এদিন ১৫ জনের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন অমিত শাহ। ওই কমিটিই ভোট প্রস্তুতির সব হিসেব কষবে। সেই ১৫ জনের মধ্যে জায়গা পেয়েছেন সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা – অর্থাৎ রাজ্যে বিজেপি বলতে যাঁদের কথা মনে পড়ে সাধারণ মানুষের।
কিন্তু শাহের ‘ম্যানেজমেন্ট টিমে’ কেন নেই তাঁরই দফতরের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক? মতুয়াদের মুখ শান্তনু ঠাকুরই বা কই? পদ্ম শিবিরের অন্দরের ব্যাখ্যা, আমজনতার কাছাকাছি থাকে, সংগঠনের সঙ্গে ওঠাবসা করেন, এমন নেতাদেরই জায়গা দেওয়া হয়েছে। নিশীথ বা শান্তনুর পক্ষে তো রোজ কলকাতায় বসে মিটিং-মিছিল করা সম্ভব নয়। রাহুল সিনহার ভোটের রেকর্ড ভাল না হলেও দীর্ঘদিন সংগঠন করার সুবাদে কমিটিতে রয়েছেন তিনি। আবার এই তালিকায় নেই আর এক পুরনো নেত্রী দেবশ্রী চৌধুরী।
শোনা যাচ্ছে, প্রার্থী তালিকাতেও এই কৌশলের ছায়াই দেখা যাবে। রুপোলি পর্দার ‘হিরো’ নয়, গেরুয়া পতাকা হাতে যাঁরা প্রতিদিন রাস্তায় নেমে দলের জন্য কাজ করেন, গলা ফাটান, তাঁদেরই দেওয়া হতে পারে টিকিট। যে খসড়া ইতিমধ্যেই বঙ্গ বিজেপি তৈরি করেছে বলে সূত্রের খবর, সেখানেও ৪২-এর মধ্যে তারকার সংখ্যা মেরে-কেটে ১। বাকি সবাই মাঠে-ময়দানে কাজ করা নেতা বলেই সূত্রের খবর।
এছাড়াও গত ৫ বছরে যে কারণে বারবার রাজ্য বিজেপি শিরোনামে এসেছে, তা হল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দলের নেতার নামে পোস্টার পর্যন্ত দিয়েছেন দলেরই কর্মীরা। ভোট পরিস্থিতিতে সেই দ্বন্দ্বেও রাশ টানছেন শাহ-নাড্ডা? মঙ্গলবার চার নেতাকে নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন তাঁরা। পরে ১৫ জনকে নিয়ে মূল বৈঠক। যাঁদের মধ্যে বিরোধ বা দ্বন্দ্ব নিয়ে আলোচনা হয় রাজনৈতিক মহলে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই এদিন একই ঘরে বসে মন দিয়ে শুনেছেন শাহের কৌশল। শুধু মোদী-শাহ বারবার রাজ্যে এলেই যে ভোটে জেতা যায় না, সেটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে বিধানসভা নির্বাচনে। তাই বাংলার মাটিতেই ঘুঁটি সাজিয়ে দিচ্ছেন ওঁরা। কোনও জায়গায় ফাঁক রাখতে চাইছে না শীর্ষ নেতৃত্ব। এবার ভোট ময়দানে তার প্রভাব পড়বে কি না, সেটাই দেখার।