Sehgal Hossain: খারিজ সায়গলের আবেদন, অনুব্রতর দেহরক্ষীকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জেরা করতে পারবে ইডি
ED Appeal: বিচারপতি সুদীপ কুমার জৈন জানান, গরু পাচার মামলায় সায়গলকে ৬-৭দিন দিল্লিতে এনে জেরা করতে পারবে ইডি।
নয়া দিল্লি: আদালতে ফের ইডির জয়। গরু পাচার মামলায় সায়গল হোসেনকে দিল্লিতে এনে জেরা করার অনুমতি দিল দিল্লি হাইকোর্ট। দিল্লিতে এনে যাতে জেরা না করা হয়, সেই মর্মেই আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষী। কিন্তু এদিন দিল্লি আদালতের তরফে সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। বিচারপতি সুদীপ কুমার জৈনের বেঞ্চের তরফে জানানো হয়, গরু পাচার মামলায় সায়গলকে ৬-৭দিন দিল্লিতে এনে জেরা করতে পারবে ইডি।
গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (ED)। তদন্তের স্বার্থেই সায়গলকে দিল্লি নিয়ে যেতে উঠেপড়ে লেগেছে ইডি। দিল্লিতে নিজেদের হেফাজতে নিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। এ নিয়ে দিল্লির রাইস অ্যাভিনিউ কোর্টে আবেদন জানিয়েছে ইডি। সেই মামলারই শুনানি ছিল আজ।
এদিন দিল্লি আদালতে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে শুনানি চলে। বিচারপতি সুধীর কুমার জৈন বলেন, “তদন্তের স্বার্থে যদি অল্প সময়ের জন্য সায়গলকে দিল্লিতে আনা হয়, তাহলে সমস্যা কোথায়?” ইসিআইআর-সহ অন্যান্য ইস্যুতে ইডি কমপক্ষে ১৫ দিনের জন্য সায়গলকে দিল্লিতে নিয়ে যেতে চাইলেও, বিচারক তদন্তের স্বার্থে ৭দিন সময় ধার্য করেন। এরপরই শুনানি শেষে আদালতের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে ৭ দিনের জন্য দিল্লিতে নিয়ে আসা যাবে।
আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে, হেফাজত বদল করা হবে না। এফআইআর-ও স্থানান্তর করা হবে না। শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সায়গল হোসেনকে দিল্লিতে নিয়ে যেতে পারবে ইডি।
এদিন শুনানি চলাকালীন সায়গল হোসেনের আইনজীবী মনু শর্মা তাঁর মক্কেলকে দিল্লিতে এনে জেরার ক্ষেত্রে একাধিক শর্তের কথা জানান। আদালতে বলা হয়েছে, দিল্লিতে হেফাজত নয়, শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সায়গলকে দিল্লিতে আনা হবে। একটানা জেরা করা যাবে না সায়গলকে। সাতদিনের প্রতিদিনই দুই ঘণ্টা করে জেরা করতে পারবে ইডি। এই সময় হবে সকাল ১১টা থেকে ১২টা। মাঝে কয়েক ঘণ্টা বিরতির পর ফের ৩টে থেকে ৪টে অবধি জেরা করা যাবে।
সূত্রের খবর, দিল্লি হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানোর কথা ভাবছেন সায়গলের আইনজীবী।
গরু পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় সায়গলের উপরে যাতে মানসিক চাপ সৃষ্টি না করা হয় ইডির তরফে, সেই জন্য জেরার সময়ে আইনজীবী উপস্থিত থাকার আর্জিও জানিয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ইডির আধিকারিক ছাড়াও আইওএ অফিসার ও সায়গলের আইনজীবী উপস্থিত থাকবেন। একই ঘরে উপস্থিত থাকলেও, আইনজীবীকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকতে হবে, যাতে তিনি কোনও প্রশ্ন শুনতে না পারেন।
গরু পাচার মামলায় সায়গলকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করার আর্জি জানিয়ে প্রথমে আসানসোল আদালতে আবেদন করেছিল ইডি। কিন্তু সেই সময় বিচারক পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণ দেখিয়ে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন। পরে কলকাতা হাইকোর্টেও মামলা দায়ের করে ইডি। কিন্তু সেখানেও শুনানির প্রথম পর্বে ধাক্কা খায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ প্রশ্ন করেন, সায়গলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছে কেন? সবশেষে অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
ইডির দাবি, গরু পাচার মামলায় অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের কাছে এমন অনেক তথ্য রয়েছে, যা এই তদন্তের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণে সায়গলকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় ইডি। দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে ইডির তরফে মামলা দায়ের করা হয় গত শনিবার। সেই মামলার শুনানি আজ।
প্রসঙ্গত, নিজেকে বাঁচাতে আগেভাগেই ক্যাভিয়েট ফাইল করেছেন সায়গল হোসেন। ক্যাভিয়েটের অর্থ হল, ইডি যদি সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়, তবে সায়গল হোসেনের বক্তব্যও শুনতে হবে শীর্ষ আদালতকে।