Dilip Ghosh On Prabir Ghosal: ‘ওখানে নো এন্ট্রি বোর্ড ঝুলছে, কোথায় যাবেন ঠিক করতে পারছেন না’, প্রবীরের লেখনীকে তোয়াক্কাই করলেন না দিলীপ
Dilip Ghosh On Prabir Ghosal: তৃণমূল মুখপাত্রে বিজেপির তীব্র সমালোচনা করে আস্ত কলাম লিখে ফিলেছেন এই প্রাক্তন সাংবাদিক। আর এ নিয়ে নাম না করে তাঁকে তীব্র খোঁচা দিলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
কলকাতা: গত কয়েক মাসে একের পর এক নেতা বিধায়ক বিজেপি ছাড়ছেন। যাঁরা ভোটের আগে তৃণমূলে ‘কাজ করা যাচ্ছে না’ বলে গেরুয়া পতাকা তুলে নিচ্ছিনেল, ভোটের ফলের প্রায় একই অভিযোগ করে ঘরওয়াপসি করছেন তাঁরা। এবার ‘বেসুরো’ বিজেপি প্রার্থী প্রবীর ঘোষাল। তৃণমূল মুখপাত্রে বিজেপির তীব্র সমালোচনা করে আস্ত কলাম লিখে ফিলেছেন এই প্রাক্তন সাংবাদিক। আর এ নিয়ে নাম না করে তাঁকে তীব্র খোঁচা দিলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
প্রতিদিন ভোরে হাঁটাহাঁটির পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। এদিন নাম না করে বিঁধলেন একুশের ভোটের বিজেপি প্রার্থী প্রবীর ঘোষালকে। বললেন, বিজেপি হল গঙ্গার পবিত্র, কিন্তু কেউ যদি এঁদো পুকুরে আরামবোধ করে তাহলে আর কী করা যাবে।
দিলীপ ঘোষের কথায়, “যাদের কে নিচ্ছে না (পড়ুন তৃণমূল), ওখানে নো এন্ট্রি বোর্ড আছে। এধরনের কষ্টের মধ্যে আছেন তাঁরা। কোথায় যাবেন ঠিক করতে পারছেন না। কেউ বলেছিলেন আগে ভুল করেছিলাম। আবার, কেউ বলছেন এখন ভুল করছেন!” একটু থেমে দিলীপের ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য, ‘কে কী ভুল করেছেন আগে ঠিক করুন। ভারতীয় জনতা পার্টি গঙ্গার মতো পবিত্র ছিল থাকবে। অনেকে এসেছে সেই পবিত্রতা কে সহ্য করতে পারছে না। এদো পুকুরে ছিলেন ওখানেই চলে যান কমফোর্ট থাকুন আমাদের কোনও টেনশন নেই।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন প্রবীর ঘোষাল। কিন্তু সেখানে তিনিও আর থাকতে পারছেন না। কেন থাকতে পারছেন না, তা জানিয়ে তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলায় কলম ধরেছেন তিনি। তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক অভিযোগ করেছেন, বিজেপি অর্থ কেন্দ্রিক দল। বিজেপি নেতা তথাগত রায়-ও তা বলেছেন বলে দাবি প্রবীর ঘোষালের।
বুধবার সকালে জাগো বাংলায় প্রবীর ঘোষালের একটি লেখনী প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনের শিরোনাম, ‘ওখানে কাজ করার থেকে টাকা চাওয়ার লোক বেশি।’ তাঁর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ‘টাকা নিয়ে টিকিট’ ইস্যুও। ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপ প্রসঙ্গটি উঠে আসে।
বিজেপিতে দলের অন্দরে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আগেই তুলেছিলেন বর্যীয়ান নেতা তথাগত রায়। তারপরই প্রকাশ্যে আসে বিতর্কিত অডিয়ো ক্লিপ। এবার বিজেপির আরেক নেতা প্রবীর ঘোষাল বিজেপিকে অর্থকেন্দ্রিক দল বলে কটাক্ষ করে লেখেন, “বিজেপিতে অসংখ্য শাখা সংগঠন। ৬০টিরও বেশি। পদাধিকারীরা সকলেই নিজেদের নেতা নেত্রী মনে করেন। কেউ কর্মী নন। তাঁদের সকলের আলাদা আলাদা দাবি সনদ। বেশিরভাগই অর্থকেন্দ্রিক।” তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, বিজেপিতে কাজ করার থেকে টাকা চাওয়ার লোক বেশি।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে প্রাক্তনমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে চাটার্ড বিমানে দিল্লী উড়ে গিয়েছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। রপর সেখানে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাত ধরেই পদ্মপতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন। আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এখনও সেই দলেরই সদস্য। অথচ দলের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে কলম ধরেছেন জাগো বাংলার পাতায়।
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন উত্তরপাড়ায়। কিন্তু প্রবীর ঘোষাল পরাজিত হন। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে যেভাবে জলঘোলা শুরু হয়েছিল, ঠিক সে সময় প্রবীর ঘোষালকে নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়। ত্রিপুরায় অভিষেকের হাত ধরে প্রত্যাবর্তন ঘটেছে রাজীবের। প্রবীর ঘোষালের রাজনৈতিক অবস্থান এখনও ধোঁয়াশায়। তবে জাগো বাংলায় যেভাবে তিনি তাঁর বর্তমান দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন, তাতে ধন্দে রাজনৈতিক মহল।
TV9 বাংলাকে প্রবীর ঘোষাল জানিয়েছেন, তিনি এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাল ঢোল পিটিয়ে তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন না। তাঁর বক্তব্য, তাঁকে জাগো বাংলার সম্পাদকীয় বিভাগে কলম ধরবার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। বিজেপিতে গিয়ে তিনি কী কী অনুধাবন করেছিলেন, তাঁর একটি খসড়া তুলে ধরেছেন। এখন তিনি অবসর জীবনযাপন করছেন। কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। প্রবীর ঘোষাল ইঙ্গিত, দিয়েছেন, আপাতত রাজনীতির থেকে দূরে থেকে লেখালেখিতেই নজর দেবেন।
আরও পড়ুন: Mahua Moitra: আদালতের পূর্ব নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ, ইডি কর্তার মেয়াদ বৃদ্ধিতে মামলা মহুয়ার