TV9 Exclusive: তৃণমূলের রেকর্ড জয়ে মমতার ভূমিকা নেই, ‘তৃতীয় ব্যক্তি’কে কৃতিত্ব দিলেন দিলীপ
Dilip Ghosh Exclusive: বিধানসভায় তৃণমূলের ২১৩ আসন পাওয়ার নেপথ্যে তৃণমূল সুপ্রিমোর কোনও ভূমিকা দেখছেন না দিলীপ ঘোষ
TV9 বাংলা এক্সক্লুসিভ: ২০১১, ২০১৬ সালের পর ২০২১-এ আরও বড় ব্যবধানে জয়। রাজনীতির নিখুঁত অঙ্ক কষতে সক্ষম, এমন বিশেষজ্ঞও হয়তো বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের এই ফলের প্রত্যাশা করেননি। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মার কারণেই কল্পনাতীত এই জয় এসেছে রাজ্যের শাসকদলের। ভোটের ফল বেরোনর পর এটা অকপটে স্বীকার করেছে রাজনৈতিক বোদ্ধাদের একটা বড় অংশ। কিন্তু বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এমনটা মানতে রাজি নন। বিধানসভায় তৃণমূলের ২১৩ আসন পাওয়ার নেপথ্যে তৃণমূল সুপ্রিমোর কোনও ভূমিকা দেখছেন না তিনি। বরং তৃতীয় এক ব্যক্তিকে এই জয়ের কারিগর বলে মনে করেন দিলীপবাবু। সেই ‘তৃতীয় ব্যক্তি’ আর কেউ নন, বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর।
TV9 বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ভোট পরবর্তী বিবিধ বিষয় নিয়ে খোলা মনে কথা বললেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ। সেখানেই প্রশ্ন উঠে আসে, ভোটের পর তৃণমূল সুপ্রিমোর এই রেকর্ড জয় নিয়ে তাঁর কী উপলব্ধি। তখনই দিলীপ ঘোষ দ্বর্থ্যহীন ভঙ্গিমায় বলেন, “এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য হয়নি, পিকে-র জন্য হয়েছে। আর পিকে পুরোপুরি অন্যায়ভাবে, মিথ্যা প্রচার করে সব জায়গায় জিতিয়েছেন। মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন।” এমনটাই দাবি বঙ্গ বিজেপির মুখিয়ার।
নিজের দাবির সমর্থনে যুক্তিও পেশ করেছেন দিলীপ। মিথ্যা বলে জেতানোর প্রসঙ্গে তাঁর ব্যাখ্যা, “মিথ্যাচারের প্রমাণ হল, উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বললেন জঙ্গলমহলের আদিবাসীদের প্রতি মাসে হাজার টাকা দেওয়া হবে। ভোটের আগে একবার দিয়ে বলছেন, টাকা শেষ। মহিলাদের অ্যাকাউন্টে মাসে ৫০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এখন বলছেন, টাকা নেই, দেব না। এটা কী ধরনের রাজনীতি! এভাবে হয়তো ভোটে জেতা যায়। কারণ মানুষ তো একেবারে শূন্য হাতে রয়েছে। যা পেয়েছে, ভেবেছে অনেক পেলাম। ৫-১০ বছর তো কিছুই দিল না। কিছু তো দিয়েছে। বোধহয় দেবে।”
এটুকু বলা শেষ করেই নন্দীগ্রামে মমতার পরাজয় নিয়ে ফের কটাক্ষের পথে হাঁটেন দিলীপ। বলেন, “মানুষ ওঁকে হারিয়ে দিয়েছেন ভোটে, এটাই শেষ কথা। পিছনের দরজা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। ভারতবর্ষে আজ পর্যন্ত কেউ হয়নি। মানুষ বলে দিয়েছে যা বলার। মেদিনীপুর বাংলার মেয়েকে চায়নি।”
আরও পড়ুন: প্রতারক সনাতন ‘চরিত্রবান’, সার্টিফিকেট দিয়েছিল বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ
ভোটের আগে বিজেপির আক্রমণের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রসঙ্গ উঠলেই দুর্নীতি, তোলাবাজি, গরু-কয়লা পাচার এবং ‘ভাইপো ট্যাক্স’-এর মতো শব্দবন্ধের ব্যবহার শোনা যেত বিজেপির বড়-মেজো-ছোট নেতাদের গলায়। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এ দিনের সাক্ষাৎকারে অভিষেক প্রসঙ্গ উঠলে সেই পথে হাঁটেননি দিলীপবাবু। ভোটের পর তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতা হিসেবে অভিষেকের আত্মপ্রকাশ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কিছুটা তীর্যক সুরে বাঁকা হাসি ঠোঁটে নিয়ে তিনি বলেন, “লিফটে চড়ে উপরে উঠে গিয়েছেন। রাজনীতি করছেন। আমারও বলছি, ভাল করে রাজনীতি করুন। বাংলায় ভাল নেতার প্রয়োজন। মানুষের বিশ্বাস চলে যাচ্ছে রাজনীতির উপর থেকে। সেটাকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব নিতে হবে সবাইকে। এরকম যুবকরা এগিয়ে এলে বাংলার রাজনীতির জন্য তা ইতিবাচক।”
আরও পড়ুন: ‘বাবুলদা ডায়নামিক’, সুর বদলে দিলীপের দাবি, ‘বলতে চেয়েছিলাম মুখ্যমন্ত্রী হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন’