Mamata Banerjee: ডাক্তারিতে ডিপ্লোমা পাশ করে কি ‘হাফ ডাক্তার’ তৈরি হবে? সমালোচনার ঝড় চিকিৎসক মহলে
Diploma for Doctors: চিকিৎসক সংগঠনের নেতা মানস গুমটা এই ডিপ্লোমায় ডাক্তারির প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, কেবলমাত্র চিকিৎসকের সংখ্যা কম, সেই কথা বলে ডিপ্লোমা কোর্স চালু করে ডাক্তার তৈরির প্রস্তাবের তুলনায় কেন চিকিৎসকের সংখ্যা কম, কেন চিকিৎসকরা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, সেই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন।
কলকাতা: ডাক্তারিতে ডিপ্লোমা কোর্স চালু করার ভাবনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন নবান্ন সভাঘর থেকে মুখ্যমন্ত্রী সেই কথা বলার পরই রাজ্যের চিকিৎসক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। চিকিৎসক সংগঠনের নেতা মানস গুমটা এই ডিপ্লোমায় ডাক্তারির প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, কেবলমাত্র চিকিৎসকের সংখ্যা কম, সেই কথা বলে ডিপ্লোমা কোর্স চালু করে ডাক্তার তৈরির প্রস্তাবের তুলনায় কেন চিকিৎসকের সংখ্যা কম, কেন চিকিৎসকরা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, সেই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন। একইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘ডিপ্লোমা ডাক্তারির বিষয়টিই বা কী! এটায় কি মেডিক্যাল কাউন্সিলের অনুমতি আছে? তাও আমরা জানি না। কিন্তু ডাক্তারের অভাব বলে ডিপ্লোমা ডাক্তার যদি বলে থাকেন, সেটি অর্ধসত্য কথা।’
মানস গুমটার বক্তব্য, ‘পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে ডাক্তারদের যে সংখ্যা রয়েছে, তা আমরা সরকারের মুখেও শুনেছি এবং নিজেরাও জানি। এই মুহূর্তে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে যতগুলি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে সেখান থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার চিকিৎসক পাশ করে বেরোচ্ছেন। এমবিবিএস বা স্পেশালিস্ট ডাক্তাররা উভয়েই চাকরি না পাওয়ার জন্য রাস্তায় আন্দোলন করছেন, এমন দৃশ্যও এ রাজ্যে দেখা গিয়েছে। এমন অবস্থায় যদি বলা হয় চিকিৎসকের অভাব এবং সেই কারণে ডিপ্লোমা ডাক্তার বা হাফ ডাক্তার চালু করা হচ্ছে… তাহলে তো উদ্দেশ্যটা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাঁরা পাশ করছেন, তাঁরা কেন চাকরি পাচ্ছেন না, তাঁদের কেন কাজে লাগানো হচ্ছে না, তাঁরা কেন কাজে যোগ দিচ্ছে না বা যোগ দিলেও ছেড়ে চলে যাচ্ছে… সেই কারণগুলি সরকার খুঁজে বের করছে না।’
শহরের প্রবীণ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘এই ধরনের ব্যবস্থা চালু না করাই ভাল। নতুন করে এমন ডিপ্লোমা সারা ভারতে কোথাও নেই। তাতে কোয়ালিটি অব কেয়ার, থেকে শুরু করে কোর্স সব কিছুই ঠিক করতে হবে। এতে ঝাপানো উচিত নয়। এর থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির আরও উন্নতি করা বেশি প্রয়োজন।’
অন্যদিকে চিকিৎসক বিরুপাক্ষ বিশ্বাস বলছেন, ‘হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদকে মডার্ন মেডিসিনের সঙ্গে একসঙ্গে করেছিল বিজেপি শাসিত ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল। মুখ্যমন্ত্রী এখন নির্বাচন নিয়ে প্রচণ্ড ব্যস্ত। কোথাও কোনও জায়গায় গিয়ে হয়ত তিনি দুটি কথা বলেছেন। হয়ত কোনও প্রেক্ষিতে উনি কথাটি বলেছেন। কিন্তু সেটি কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে খুব বেশি জাজমেন্টাল হওয়ার দরকার নেই। কারণ তিনি সবটাই জানেন এবং বোঝেন। স্বাস্থ্যের জন্য তিনি এতগুলি বছর যা করছেন তা সত্যিই অতুলনীয়। হয়ত কাজের চাপে তিনি কিছু একটা মন্তব্য করেছেন।’