Suchetana Bhattacharya: সুচেতনা এখন সুচেতন, নারী থেকে পুরুষ হচ্ছেন বুদ্ধ-কন্যা

Suchetana Bhattacharya: বাবা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। মা মীরা ভট্টাচার্যের কিছুদিন আগেই বুকে নতুন করে পেসমেকার বসেছে। কিন্তু, একেবারে মেয়ে থেকে ছেলে হওয়ার লড়াইয়ে কতটা বাবা-মাকে পাশে পেলেন সুচেতনা ওরফে সুচেতন?

Suchetana Bhattacharya: সুচেতনা এখন সুচেতন, নারী থেকে পুরুষ হচ্ছেন বুদ্ধ-কন্যা
গ্রাফিক্স - শুভ্রনীল দে ও অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 21, 2023 | 7:25 PM

কলকাতা: চেতনে অবচেতনে চেতনা একই আছে। বদলে যাচ্ছে কেবল আইনি-সামাজিক প্রকাশ। ‘অর্ধনারীশ্বর কী, তা তো দেখতেই পাচ্ছেন। আমরা তো সকলেই দেখতে পাচ্ছি। সমাজও দেখবে, তবে আর ভাবনা কী?’ উচ্চমাধ্যমিকে সপ্তম হয়ে বলেছিলেন রূপান্তরকামী শরণ্যা ঘোষ। এবার ফের একবার সমাজের ভাবনা বদলের ডাক দিলেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কন্যা সুচেতনা ভট্টাচার্য। এখন থেকে লিঙ্গ পরিবর্তন করে সুচেতন হতে চাইছেন সুচেতনা। চাইছেন এখন থেকে তাঁকে সকলে ডাকুক সুচেতন নামেই। চাইছেন বদলাক মানুষের মন। উদয় হোক শুভ বুদ্ধির। দূর হোক ভেদাভেদ। স্পটই বলছেন, “অনেকদিন থেকেই আমি লিঙ্গ পরিবর্তন করার কথা ভাবছিলাম। ধীরে ধীরে আমি মানসিকভাবে আরও বোল্ড হয়েছি। তারপর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

খবর প্রথম জানা যায় মঙ্গলবার সুপ্রভা রায় নামে এক বাম কর্মীর সমাজ মাধ্যমে করা পোস্টের মাধ্যমে। পিপলস রিলিফ কমিটি আয়োজিত এলজিবিটিকিউআইএ+ মানুষদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কর্মশালায় গিয়েছিলেন সুচেতনা ভট্টাচার্য। সেখানে গিয়েছিলেন সুপ্রভাও। এরপর দুজনের সাক্ষাতের কথা, সুচেতনার নতুন পরিচয়ের কথা জানিয়ে একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টও লিখেছেন তিনি। সেখানে তিনি লিখছেন, “শারীরিক লিঙ্গ পরিচয় যাইহোক না কেন, ছোটবেলা থেকেই নিজেকে ছেলে মনে করা সুচেতন পেয়েছে পারিবারিক প্রেরণা। তার বাবাই তাকে ছোটবেলায় গালে সাবান লাগিয়ে দাড়ি-গোঁফ কামিয়ে দিতেন। তাই নিজের প্রবণতায় তার বেড়ে ওঠা হয়ে উঠেছে স্বচ্ছন্দেই। শরীরে, মনে, সামাজিক প্রকাশনায় ট্রান্সম্যান রূপেই পরিচিত হয়েছে সুচেতন।”

‘কমরেডের’ ইচ্ছাশক্তি, বদলের ভাবনাকে সাধুবাদ সুপ্রভার 

প্রসঙ্গত, সদ্য লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরুষ থেকে মহিলা হয়েছেন সুপ্রভা নিজেও। এবার সেই একই পথে মহিলা থেকে পুরুষ হতে চলেছেন সুচেতনা। ‘কমরেডের’ ইচ্ছাশক্তি, বদলের ভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়ে  সুপ্রভা আরও লিখছেন, “আমাদের লড়াই তে যুক্ত হল আরও এক যোদ্ধা। সার্থক হোক ওর সুচেতনা থেকে সুচেতন হওয়ার লড়াই। মৌলবাদ,পুঁজিবাদ ও ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে আমাদের মিলিত অগ্রগতিতে সার্থক হোক ওর অংশগ্রহণ। সবাই ওর পাশে থাকুন, আমাদের সঙ্গে থাকুন।” একই কথা সুচেতনার মুখেও। টিভি-৯ বাংলার মুখোমুখি হয়ে স্পষ্টই বললেন, “আমি এখন ৪১ প্লাস। সিদ্ধান্তটা আমার। অনেকেই আমার মতো আছেন। তাঁদের পিতৃ পরিচয় বা মাতৃ পরিচয় এখানে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি নিজের মতো করেই গোটা প্রক্রিয়াটা নিয়ে লড়ে যাব। আমাকে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যেও যেতে হবে এরপর। আমি জানি মিডিয়া হাউসগুলো এলজিবিটি রাইট নিয়ে খুব সাপোর্ট করছে। আমাদের কমিউনিটি অচ্ছুঁত নয়। তাই আমাদের সাপোর্ট করুন। শুধু এ কথাই বলব। কিছু লোক তো আমাদের ভুলভাবে অচ্ছুঁত মনে করেন। দৈনন্দিন জীবনেই আমরা সেটা দেখতে পাই। তাই দলমত নির্বিশেষে সমস্ত পলিটিক্যাল পার্টিগুলি ও মিডিয়া হাউসগুলিকে বলছি, আমাদের কমিউনিটিকে সাপোর্ট করুন।”

কী বলছেন বাবা বুদ্ধদেব? 

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। মা মীরা ভট্টাচার্যের কিছুদিন আগেই বুকে নতুন করে পেসমেকার বসেছে। কিন্তু, একেবারে মেয়ে থেকে ছেলে হওয়ার লড়াইয়ে কতটা বাবা-মাকে পাশে পেলেন সুচেতনা ওরফে সুচেতন? তিনি বলছেন, “আমার পরিবার কখনও কোনও আপত্তি করেনি। আমি তো মানসিকভাবে ট্রান্সম্যান অনেকদিন ধরেই। এবার শারীরিকভাবেও হব। লিগ্যাল প্রসেস যা হয় সেগুলি করব।” অন্যদিকে বর্তমানে এক জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সুখেই দিন কাটাচ্ছেন সুচেতনা। সে কথাও ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন সুপ্রভা। সুচেতনা বর্তমানে একটি দৃশ্য-শ্রাব্য (অডিও ভিজুয়াল) মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করছেন। অন্যদিকে তাঁর জীবনসঙ্গী সুচন্দা একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত।