HC On Physical Assault Case: ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ৫ টি মামলায় তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

HC On Physical Assault Case: প্রসঙ্গত, সোমবার ময়নাগুড়ি, পিংলা, শান্তিনিকেতন, নামখানা, নেত্রা- এই পাঁচটি ঘটনা নজরে এনে মামলা দায়ের হয় আদালতে।

HC On Physical Assault Case: ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ৫ টি মামলায় তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
'ধর্ষণ' কেসে কেস ডায়েরি তলব
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 19, 2022 | 6:49 PM

কলকাতা: রাজ্যের ধর্ষণ ও গণধর্ষণ মামলায় নজর আদালতের। পাঁচটি মামলায় তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট তলব করল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। নির্যাতিতার পরিবারকে নিরাপত্তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। মামলার পরবর্তী শুনানি ২২ এপ্রিল। প্রসঙ্গত, সোমবার ময়নাগুড়ি, পিংলা, শান্তিনিকেতন, নামখানা, নেত্রা- এই পাঁচটি ঘটনা নজরে এনে মামলা দায়ের হয় আদালতে। মামলাকারীদের একাংশের বক্তব্য, আদালত যাতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরি করে এই মামলাগুলির তদন্ত করে। সেই মামলারই শুনানি ছিল মঙ্গলবার। আদালত, তাতে পাঁচটি কেসের কেস ডায়েরি ও তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট তলব করে।

আজকের শুনানির সারবত্তা

হাইকোর্টে ধর্ষণ সংক্রান্ত পাঁচটি মামলার শুনানির ক্ষেত্রে কেস ডায়েরি তলব করা হয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ কেস ডায়েরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রত্যেকটা ঘটনা রাজ্যের নারী নিরাপত্তাকে ভীষণভাবে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। ঠিক কী ঘটেছিল পাঁচ নির্যাতিতার সঙ্গে, সবটা খতিয়ে দেখতে চান নির্যাতিতা। কেস ডায়েরি থেকেই সেটা স্পষ্ট হবে। একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, রাজ্যের ডিজি ও সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে আদালতের তরফে। প্রধান বিচারপতি প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে যেরকম কেস ডায়েরি তলব করেছেন, তেমনি তদন্ত অগ্রগতি কতটা হয়েছে, সেই রিপোর্টও জমা দিতে বলেছেন। রাজ্যকে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিষয়টি জানাতে হবে। আগামী শুনানির দিনই এই দুটি তথ্য রাজ্য সরকারকে আদালতে পেশ করতে হবে। নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বিষয়টিও রাজ্য সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছে আদালত।

বিজেপির আইনজীবীর বক্তব্য

বিজেপির পক্ষ থেকে মহিলা আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত বলেন, “আমরা যে মামলাটি করেছিলাম, পাঁচটা ধর্ষণ গণধর্ষণের ক্ষেত্রে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলাম। প্রধান বিচারপতি খুব মানবিকভাবে মামলাগুলি দেখছেন। কেস ডায়েরি জমা দিতে বলেছেন। রিপোর্টও তলব করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়েছি। রাজ্য সরকারের তরফে যাতে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়, সেই ব্যাপারটা সুনিশ্চিত করার কথা বলেছি।”

নামখানা

কাকদ্বীপে বছর চল্লিশের এক মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এমনকি তাঁকে অ্যাসিড ছু়ড়ে পুড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, অভিযুক্তরা ঘরে কোনওভাবে ঢুকে গিয়েছিল। ঘটনার রাতে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে শৌচাগারে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁকে তিন জন পিছন থেকে চেপে ধরেন। ঘরে তাঁকে টেনে ঢুকিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি অভিযুক্তদের মধ্যে এক জনকে চিনে ফেলায় তাঁকে অ্যাসিড ছুড়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় নির্যাতিতার ভাসুর অমল খাটুয়া ও তার বেয়াই কার্তিক মাইতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

শান্তিনিকেতন

এক আদিবাসী নাবালিকা এক নাবালকের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে এলাকায় চড়কের মেলায় গিয়েছিল। মেলা দেখে ফেরার সময় এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, নির্যাতিতার সঙ্গী ওই নাবালককে মারধর করে বেশ কয়েকজন। একটি ফাঁকা জায়গায় তারা যখন গল্প করছিল, তখন আচমকাই আক্রমণ করে ওই দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচজন যুবক মিলে ওই নাবালককে মারধর করে নাবালিকাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর নদীর ফাঁকা চর এলাকায় নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এরপরে স্থানীয় লোকজনকে ডেকে আনে নাবালিকার সঙ্গী। খবর পেয়ে নাবালিকাকে উদ্ধার করে এলাকার মানুষ। গত বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। স্থানীয়রাই তাকে উদ্ধার করেন। শুক্রবার সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। ঘটনায় সোমবারই চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পিংলা

পিংলার কালুখাঁড়া এলাকায় বিশেষভাবে সক্ষম এক মহিলাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ জানাতে নির্যাতিতাকে তিন ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রাখা হয় বলে দাবি বিজেপির। ঘটনার পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়।

ময়নাগুড়ি

জলপাইগুড়িতে ময়নাগুড়িতে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার পরে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। মূল অভিযুক্ত-সহ ২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এখনও অধরা আরও দুই অভিযুক্ত। পরবর্তী পর্যায়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে নাবালিকা। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি ওই নাবালিকা।

এছাড়াও নেত্রাতেও একটি ধর্ষণের অভিযোগে শোরগোল পড়ে। এই পাঁচটি ঘটনা হাইকোর্টের নজরে আনা হয়। এর আগে মাটিয়া, ইংরেজবাজার, দেগঙ্গা ও বাঁশদ্রোণী ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতার স্পেশ্যাল পুলিশ কমিশনার দময়ন্তী সেনের পর্যবেক্ষণে রাজ্য পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যে একের পর এক নারী নির্যাতনের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসাতে আইন শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। এহেন পরিস্থিতিতে একাধিক মামলায় দেখা গিয়েছে রাজ্য পুলিশের ওপর কার্যত অনাস্থা প্রকাশ করেছে খোদ আদালত। অনেক কেসেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: Nadia Molestation: শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা, গলার নলি কাটা, সার নেই শরীরে… হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা সেই মহিলাও ঘৃণ্য আচরণের শিকার