বার্লাকে মন্ত্রী করে কী বার্তা দিতে চাইল বিজেপি? প্রশ্ন তৃণমূলের, জল্পনা নানা মহলেও

John Barla: 'বিভেদকামী' শক্তিকে কেন উচ্চাসনে বসানো হচ্ছে, সেই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই তুলতে শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস

বার্লাকে মন্ত্রী করে কী বার্তা দিতে চাইল বিজেপি? প্রশ্ন তৃণমূলের, জল্পনা নানা মহলেও
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 07, 2021 | 8:32 PM

কলকাতা: যে সাংসদ বাংলার মানচিত্রকে আড়াআড়ি ভাবে ভাঙতে চেয়েছিলেন, তাঁকেই মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দিয়ে বিতর্কের নতুন প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ‘বিভেদকামী’ শক্তিকে কেন উচ্চাসনে বসানো হচ্ছে, সেই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই তুলতে শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রথমে এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও সওয়াল দাগলেন। তাঁর সাফ প্রশ্ন, জন বার্লাকে মন্ত্রী করে কী বার্তা দিতে চাইল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব?

বুধবার দুপুরের মধ্যেই কার্যত সাফ হয়ে গিয়েছিল বাংলা থেকে মন্ত্রী হচ্ছেন কে কে। বিকেলে বিধানসভায় সেই প্রসঙ্গ উঠতেই হতাশা জাহির করেন পার্থবাবু। তাঁর কথায়, “বিজেপি একটা অদ্ভূত রাজনৈতিক দল। এমন একজন মানুষকে উত্তরবঙ্গ থেকে মন্ত্রী করা হল যিনি বাংলা ভাগ চান। যিনি বাংলা ভাগের চেষ্টা করেন, তাঁকে পিছনের দরজা দিয়ে মন্ত্রী বানানো হল।” পাহাড় নিয়ে আন্দোলনের সময়ও বিজেপির ভূমিকার কথা তুলে সমালোচনায় বিদ্ধ করেন পার্থ। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে যারা আন্দোলন করেছিলেন, বিজেপি তাঁদের আগেও মদত করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

জন বার্লাকে মন্ত্রী করার সিদ্ধান্তকে এ দিন ‘বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ’ বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “ওরা কাকে মন্ত্রী করবে, কাকে বাদ দেবে বা কাকে বাদ দেবে না, এটা ওদের ভেতরকার বিষয়। এটা নিয়ে আমরা কোনও কথা বলতে চাই না। তবে বিজেপি নিজেই একটা বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি। আজকে নয়, চিরকাল। আজকে বাবুল সুপ্রিয় খারাপ হয়ে গিয়েছে। রাজবংশী (দেবশ্রী চৌধুরী) মন্ত্রী ছিল ওদের, সেও আজকে খারাপ হয়ে গিয়েছে। যখন মানুষের সময় খারাপ হয়, আর বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ হয়, তখন মানুষ এসব শক্তিকেই খুঁজে বেড়ায়।”

আরও পড়ুন: ‘মমতা পুত্রস্নেহে বুকে টেনে নেবেন,’ ‘অসন্তুষ্ট’ সৌমিত্রকে তৃণমূলে আহ্বান সুজাতার

তবে বিজেপির এই সিদ্ধান্ত যে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনার জন্ম দিয়েছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। গেরুয়া শিবিরে রাজ্য নেতৃত্বের তরফে অবশ্য জানিয়েছিল, জন বার্লার ‘কেন্দ্রশাসিত উত্তরবঙ্গের’ পক্ষে দলের সমর্থন নেই। কিন্তু কেন্দ্রের কোনও নেতা এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি। অপরদিকে, সৌমিত্র খাঁ পৃথক জঙ্গলমহলের দাবি তোলায় তাঁকে ডেকে সতর্ক করেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু, বার্লার বিরুদ্ধে উল্লেখ্যযোগ্য কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তখন থেকেই একটা জল্পনা শুরু হয়, তবে কি বার্লার দাবিকে ‘অন্য চোখে’ দেখছে বিজেপি? আজকের সিদ্ধান্তের পর সম্ভবত সেই জল্পনার আর কোনও অবকাশ থাকল না।

আরও পড়ুন: ‘বাবুল, দেবশ্রী আজ খারাপ’! বার্লাকে ঠাঁই দেওয়ায় মমতার তোপ, ‘বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ’