ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে একের পর এক ‘তথ্য প্রমাণ লোপাট’, আসরে বিজেপি
কসবা ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে (Kasba Fake Vaccination Camp) বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) টুইট খোঁচা। আর তারপরই বিজেপি নেতা অমিত মালব্যর (Amit Malviya) টুইট। প্রতিবাদে সোচ্চার লকেট চট্টোপাধ্যায়ও।
কলকাতা: টিকা জালিয়াতি কাণ্ডে (Kasba Fake Vaccination Camp) ইতিমধ্যেই লেগেছে রাজনীতির রঙ। ধৃত দেবাঞ্জন দেবের (Debanjan Deb) সঙ্গে প্রভাবশালী যোগ থাকার সূত্র খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। একাধিক তৃণমূল নেতার সঙ্গে দেবাঞ্জন দেবের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে বিতর্ক আরও বেড়েছে। অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূলের। এরই মধ্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) টুইট খোঁচা। আর তারপরই বিজেপি নেতা অমিত মালব্যর (Amit Malviya) টুইট। প্রতিবাদে সোচ্চার লকেট চট্টোপাধ্যায়ও।
Tweets linking Kasba Vaccine fraud Debanjan Deb with present Siliguri Police Commissioner Gaurav Sharma & others are being deleted by Kolkata Police.
If evidences are being tampered with in course of an investigation involving public health & safety, can we rely on such a probe? pic.twitter.com/V7G9kksZxq
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) June 27, 2021
রবীন্দ্রনাথের মূর্তির ফলক ভেঙে দেওয়া থেকে কলকাতা পুলিশের টুইট মুছে দেওয়া, কসবা জাল ভ্যাকসিন কাণ্ডে যেভাবে একটার পর একটা তথ্য প্রমাণ লোপাট চলছে, এ অবস্থায় এ রাজ্য সরকারের পুলিশি তদন্তে কি প্রকৃত সত্য উঠে আসা সম্ভব? মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা চলছে! টুইটার বিভিন্ন বিজেপি নেতার।
পাশাপাশি কলকাতা-পুলিশের সঙ্গে দেবাঞ্জন তত্ত্বও খাঁড়া করতে চেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। কলকাতা পুলিশের রক্তদান শিবির অনুষ্ঠানে দেবাঞ্জনের ছবি সংক্রান্ত পোস্টও শেয়ার করেন শুভেন্দু-লকেট।
যদিও আইপিএস গৌরব শর্মার দাবি, “একটা রক্তদান শিবিরের ছবি। রক্তদান শিবিরে অনেক লোকই আসেন। কিন্তু সবাইকে আলাদা করে চেনা সম্ভব নয়।”
এর আগে শুভেন্দু টুইটে লিখেছিলেন, “২০০০ কোটি টাকার প্যানডেমিক পারচেজ স্ক্যাম কমিটির রিপোর্ট সর্বসমক্ষে আনতে হবে রাজ্য সরকারকে। কেন এই রিপোর্ট লোকানো হচ্ছে?” পাশাপাশি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেও আঙুল তুলেছেন তিনি। কারণ ওই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন খোদ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “অবিলম্বে স্বচ্ছতার সঙ্গে ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনতে হবে।”
প্রসঙ্গের উত্থাপন হয়েছে তালতলায় গ্রন্থাগার উন্মোচনের সময় রবীন্দ্র মূর্তির ফলক নিয়েই। তাতে নাম রয়েছে ফিরহাদ হাকিম, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, স্থানীয় তৃণমূল নেতা অশোক চক্রবর্তীর নামের পরই ছিল দেবাঞ্জনের নাম। পরে তা কালো কালি দিয়ে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। শেষমেশ সেটি ভেঙেও ফেলা হয়। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি দেবাঞ্জনকে চিনতেন ওঁরা?
ফলক বিতর্কে উঠছে প্রশ্ন
এক. কে বা কারা বানাল এই ফলক? দুই. ফলকে দেবাঞ্জনের নামের প্রস্তাব কার? তিন. দেবাঞ্জনকে কি তৃণমূল নেতৃত্ব চিনতেন?
নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি কোনওভাবেই দেবাঞ্জন দেবকে চিনতেন না। ফিরহাদ হাকিমও সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা অশোক চক্রবর্তীর কথায়। তাঁর বক্তব্য, স্থানীয় তৃণমূল কো অর্ডিনেটর ইন্দ্রানি বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচয় দেবাঞ্জন দেব। তাঁর সূত্রেই তালতলায় যাতায়াত শুরু দেবাঞ্জনের। সেখানে কয়েক জন মানুষকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
বিদায়ী মেয়র পারিষদ ইন্দ্রানী বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, “পুরনো ফুটেজ কোথাও থাকলে খতিয়ে দেখুন। দেখাতে পারবেন আমি দেবাঞ্জনের সঙ্গে কোথাও কোনও অনুষ্ঠানে গিয়েছি? কী প্রমাণ রয়েছে যে আমি দেবাঞ্জনকে অশোক চক্রবর্তীর কাছে নিয়ে গিয়েছি? আমি দেবাঞ্জনকে চিনিই না।”
আরও পড়ুন: Fake Vaccine: ‘আমিও তো প্রতারিত’, দেবাঞ্জন গ্রেফতার হতেই সুর চড়ালেন ‘ডেপুটি সেক্রেটারি’ সুস্মিতা
তৃণমূল অন্দরে শুরু হয়েছে কাদা ছোড়াছুড়ি। ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের দাবি উঠেছে। এরই মধ্যেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর টুইট খোঁচা। ভ্যাকসিন দুর্নীতি নিয়ে সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি।