গত বছরই ধরা পড়ে যাচ্ছিলেন, পার পান কোনওক্রমে! বাবা-মাকেও কী কী মিথ্যা বলেছেন দেবাঞ্জন?

দেবাঞ্জন (Debanjan Deb) বাড়িতেও আসল পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিলেন। এমন একটা হাবভাব নিয়ে থাকতেন, যাতে বাবা-মায়েরও সন্দেহ হয়নি এতটুকু!

গত বছরই ধরা পড়ে যাচ্ছিলেন, পার পান কোনওক্রমে! বাবা-মাকেও কী কী মিথ্যা বলেছেন দেবাঞ্জন?
অলংকরণ- অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Updated on: Jun 29, 2021 | 1:53 PM

কলকাতা: কসবা কাণ্ডে (Kasba Fake Vaccination Camp) ধৃত দেবাঞ্জন দেবের (Debanjan Deb) বিরুদ্ধে গত বছরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ জানানো হয়। তবে তখন ছাড়া পেয়ে যান দেবাঞ্জন। কেবল জিজ্ঞাসাবাদ করেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেসময় বিষয়টিতে নজর দেওয়ার জন্য পুলিশকে জানিয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার।

তদন্ত যত এগোচ্ছে, তত দেবাঞ্জন দেবের একের পর এক জালিয়াতি সামনে আসছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, মাসে ৭৭ হাজার টাকা বেতন দেখিয়ে যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার অফিসারের জাল স্যালারি স্লিপ তৈরি করেন দেবাঞ্জন। সেই জাল স্যালারি স্লিপ দেখিয়ে বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ২০ লক্ষ টাকা পার্সোনাল লোন নিলেও পরে তা শোধ করেননি। কসবায় আইএএস অফিসার, পুরকর্তা পরিচয়ে জাল নথি দেখিয়ে অফিস ভাড়া নেন দেবাঞ্জন। ৩ বছরের জন্য পুরসভার অফিসের কথা বলে মাসে ৬৫ হাজার টাকা ভাড়ায় বাড়িওয়ালার সঙ্গে চুক্তি করেন।

দেবাঞ্জনের অফিস যে বাড়িতে, সেই বাড়িতেই রয়েছে এলআইসির অফিস। দেবাঞ্জনের অফিসের লোকেরা তাঁদের ওপর রীতিমতো হম্বিতম্বি চালাতেন বলে অভিযোগ করেছেন এলআইসি অফিসের কর্মীরা। ছেলে যে আইএএস নন, তা জানতেন দেবাঞ্জনের বাবা-মা। তদন্তে পুলিশ এ কথা জানতে পেরেছে। এর আগেও চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে। গত বছর মৌখিক অভিযোগ দায়ের করা হয় ইলেক্ট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায়। তখনই দেবাঞ্জনের পরিবার জানতে পারে, ছেলে আইএএস নন।

তার আগে পর্যন্ত দেবাঞ্জন বাড়িতেও আসল পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিলেন। এমন একটা হাবভাব নিয়ে থাকতেন, যাতে বাবা-মায়েরও সন্দেহ হয়নি এতটুকু! সরকারি দফতরের প্রাক্তন উচ্চ পদস্থ কর্তা ভাবতেন, তাঁর ছেলে আইএএস। বাড়ির বাইরে সেই মোতাবেক নেমপ্লেটও বানান তিনি। কিন্তু গত বছর পুলিশ যখন ছেলেকে তুলে নিয়ে যান, তখনই গোটা বিষয়টি জানতে পারেন তাঁরা। কিন্তু লোকলজ্জায় চুপ থেকেছেন! তখন অবশ্য জিজ্ঞাসাবাদের পর ছাড়া পেয়ে যান দেবাঞ্জন। সেই সময় তদন্ত ঠিক মতো হলে, জালিয়াতির জাল আর ছড়াতে পারত না বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

আরও পড়ুন: দেবাঞ্জনের হাত কতদূর লম্বা? জানতে এবার আসরে ইডি

তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে স্পষ্ট বলেছেন, এই দোষের কোনও ক্ষমা নেই। দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নেওয়া হবে। রবিবার রাতে দেবাঞ্জনের মাদুরদহের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। সেখান থেকে বেশ কিছু নথি ও স্ট্যাম্প পেপার উদ্ধার হয়েছে। বাড়ির চারদিকে যে সিসিটিভি লাগানো রয়েছে, তার ফুটেজও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।