করোনা আবহে স্বামীজীর জন্মদিনে সাধারণ ভক্ত সমাগমে ভাঁটা, ভিড় বাড়ালেন রাজনীতিকরাই
চলছে মণীষীদের নিয়ে টানাটানি। প্রশ্ন উঠছে. তবে কি ভোঁতা হয়ে গেল পুরনো ইস্যুগুলি?
কলকাতা: স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৯ তম জন্ম দিবস (Swami Vivekananda Birthday Anniversary) মঙ্গলবার। এদিন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে দিনভর অনুষ্ঠান। তবে করোনা আবহে বিশেষ স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখেই ভক্তদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যণীয়ভাবে এদিন কলকাতায় স্বামীজীর বাড়িতে সকাল থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ভিড়। রাজ্যের মন্ত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী- মঙ্গলবার অনেকেরই সিমলা স্ট্রিটে আসার কথা। এদিন সকালেই শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে আসেন এলাকার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং পটেল। আসার কথা রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। সকালেই টুইট করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Remembering the great leader Swami Vivekananda on his birth anniversary. I bow down to Swamiji’s teachings.
His message of peace & universal brotherhood is of utmost relevance today & inspires all of us to strive hard in safeguarding these ideals in our beloved nation.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) January 12, 2021
টুইট করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
Inspired by the great ideals of Swami Vivekananda and his vision for youth empowerment, the National Youth Parliament Festival gives a platform to India’s youth to showcase their skills. It also furthers the spirit of ‘Ek Bharat, Shreshtha Bharat’ among youngsters.
— Narendra Modi (@narendramodi) January 11, 2021
অন্যদিকে, সকাল থেকেই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বেলুড় মঠও। তবে এবার আঙ্গিক ভিন্ন। বেদ পাঠের মধ্যে দিয়ে সূচনা হয় অনুষ্ঠানের। বাকি অনুষ্ঠান বেলুড় মঠ স্বামী বিবেকানন্দ সভাগৃহে অনুষ্ঠিত হয় সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল প্রক্রিয়ায়। এদিন সমগ্র রাজ্যেই পালিত হয়েছে বিবেকানন্দের জন্মদিন। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এবার এই বিশেষ দিনটিকে ঘিরে বিভিন্ন জেলাতেই বিজেপিকর্মী সমর্থকদের ‘অত্যুৎসাহ’ বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়। গত বছরেও বাংলায় বিজেপির এতটা ‘উচ্ছ্বাস’ চোখে পড়েনি বলে দাবি ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের। তবে বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তী উদযাপনে বিজেপিকে রীতিমতো টেক্কা দেওয়ার মেজাজে দেখা গিয়েছে তৃণমূল-কে। ১০-১২ জানুয়ারি বিবেক চেতনা উৎসবের কথা আগেই ঘোষণা করেছিল বিজেপি। আর তা নিয়ে তৃণমূলের মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কটাক্ষ, বাংলায় বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে মনীষীদের নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি।
সোমবার তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে ব্রাত্যর কটাক্ষ, বিবেকানন্দকে নিয়ে ভুল তথ্য দেয় বিজেপি। এক্ষেত্রে মনীষীদের একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সম্মান প্রদর্শন করেন বলে দাবি করেন তিনি। দৃষ্টান্ত দিতে গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী বলেন, “যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের নাম বদলে বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন করেছে মমতা সরকার। বিবেকানন্দের সিমলা স্ট্রিটের বাড়ি অধিগ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। বাগবাজারে সারদা মায়ের বাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণাও করা হয়েছে। বাংলার সংস্কৃতি, কৃষ্টিকে আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মনীষীদের নিয়ে রাজনীতির এই খেলা অতি সম্প্রতি শুরু হয়েছে। নেতাজী থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ কিংবা স্বামীজী- বাঙালির আবেগকে ইভিএম-বন্দি করতে যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ মনীষীদের জন্মদিনে ছুটি ঘোষণা করে কেউবা জন্মজয়ন্তী উদযাপনে বিশেষ কমিটি গঠন করছে। ফলে একুশের আগে এখন মনীষীরাই হয়ে উঠেছেন রাজনৈতিক দলগুলির অন্যতম হাতিয়ার।
আরও পড়ুন: বিমানবন্দর থেকে ভ্যাকসিন পৌঁছবে বাগবাজারে, বণ্টন নিয়ে ‘যুদ্ধকালীন’ বৈঠক স্বাস্থ্যভবনে