হাতের দাবি ১৩০, বেরল না রফাসূত্র, মেজাজ হারালেন অধীর
তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এবার এক যোগে লড়তে চায় বাম-কংগ্রেস। তবে কে কটি আসনে লড়বেন, তা নিয়েই ছিল এদিনের বৈঠক।
কলকাতা: আসন সমঝোতা নিয়ে চলল বিস্তর দর কষাকষি। তবুও আজ, রবিবার বাম-কংগ্রেসের বৈঠকে এর কোনও রফাসূত্র বেরল না (Left Congress Alliance Meeting)।
একুশের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শাসকদল তো রয়েইছে, তবে এবার রুখে দাঁড়াতে হবে যুযুধান প্রতিপক্ষ বিজেপির বিরুদ্ধেও। তাই এবারের নির্বাচন হাইভোল্টেজ। তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এবার এক যোগে লড়তে চায় বাম-কংগ্রেস। তবে কে কটি আসনে লড়বেন, তা নিয়েই ছিল এদিনের বৈঠক।
সূত্রের খবর, ১৩০ টি আসন চেয়েছে কংগ্রেস। তবে এই নিয়ে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চাননি বামেরা। বৈঠকে রফাসূত্র তো বেরলোই না, বরং রুদ্ধদ্বার বৈঠকের বাইরে থেকেই শোনা গেল চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ। বৈঠক চলাকালীনই মেজাজ হারালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। বৈঠকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হল চিৎকার চেঁচামেচি।
এদিনের বৈঠকে বামেদের তরফে উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নান। এদিনের বৈঠকে মূলত কংগ্রেসের ১৩০টি আসন চাওয়া নিয়েই আলোচনা হল। কংগ্রেসের বক্তব্য, ওই ১৩০ টি আসন এলাকায় তাদের ভালো দাপট আছে। তাই তাদের ওই আসনগুলি দেওয়া হলে, ভালো ফল হতে পারে।
বামেদের বক্তব্য, এখনই এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিয়ে তাদের শরিক দলগুলির মতামতকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ যাঁরা বামেদের একনিষ্ঠ সমর্থক, তাঁদের ভোট হারাতে চাইছেন না বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্ররা। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগেও হাত মিলিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। সেসময় ৯২ টি আসনে লড়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়েছিল জোট। সেই পুনরাবৃত্তি আর যাতে না হয়, তার জন্য ভেবে চিন্তে আসন ভিত্তিক আলোচনা চাইছেন তাঁরা।
আবার লক্ষ্যণীয়ভাবে বিগত লোকসভা নির্বাচনে খাতাই খুলতে পারেনি বাম। এবার মূলত বিজেপিকে রুখতেই বাম-কংগ্রেস একসঙ্গে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিনের বৈঠকে কোনও রফাসূত্র না বেরোয়নি। আগামী ২৫ তারিখ আরও একবার বৈঠক রয়েছে। সেদিন অবশ্য থাকছেন না প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সেদিন আসন নিয়ে নিজেদের তালিকা প্রকাশ করবে দলগুলি। ফের ২৮ জানুয়ারি আরও একটি বৈঠক রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ভ্যাকসিনেও ভাগাভাগি’ প্রাতঃভ্রমণে বাইক চালিয়ে কটাক্ষ দিলীপের
বিশেষ্ণরা মনে করছেন, তৃণমূল ও বিজেপির ভোট শেয়ারের মধ্যে দশ শতাংশেরও বেশি ভোট তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী। তারা সিপিএম কংগ্রেসের দিকে আসতেই পারে। তবে এটাও উল্লেখ্য, কংগ্রেস ও বামেদের মতাদর্শ আলাদা। দু’পক্ষকে কিছুটা হলেও নমনীয় হতে হবে। কিন্তু, এই হিসেবও শেষ অবধি পাটিগণিতেরই। রাজনীতির জমিতে ঠিক কী চলছে, সেটাই স্থির করে দেবে জোটের ভাগ্য।