DYFI-SFI: ‘২০১১-র পর বৃহত্তম সমাবেশ’, ইনসাফের ভিড় দেখে বললেন কুণাল, সুকান্তর গলায় ‘সিপিমূল’ তত্ত্ব

DYFI-SFI: তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মুখে এদিন বাম ছাত্র-যুবদের ইনসাফ সভা নিয়ে বেশ ইতিবাচক কথাই শোনা গেল। বললেন, "দেখেশুনে যা মনে হল, ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর এটাই ওদের বৃহত্তম সমাবেশ।"

DYFI-SFI: '২০১১-র পর বৃহত্তম সমাবেশ', ইনসাফের ভিড় দেখে বললেন কুণাল, সুকান্তর গলায় 'সিপিমূল' তত্ত্ব
বাম ছাত্র-যুবদের সভা নিয়ে কী বললেন কুণাল, সুকান্ত?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 20, 2022 | 7:19 PM

কলকাতা: বিধানসভায় শূন্য। একটিও আসন নেই। কিন্তু এদিন ধর্মতলায় বাম ছাত্র-যুবদের থিক থিক করা ভিড় দেখে তা বোঝার উপায় নেই। যত বেলা গড়িয়েছে, তত ভিড় বেড়েছে। চারিদিকে শ্বেত পতাকা। বামদের আগামী প্রজন্ম যে প্রস্তুত রয়েছে, এদিন ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ থেকে সেই কথাই বার বার বুঝিয়ে দিলেন মহম্মদ সেলিম। মীনাক্ষী, সৃজনরা এদিন যে ভিড় টেনেছেন, তা দেখে আপ্লুত আলিমুদ্দিনও। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মুখেও এদিন বাম ছাত্র-যুবদের ইনসাফ সভা নিয়ে বেশ ইতিবাচক কথাই শোনা গেল। বললেন, “দেখেশুনে যা মনে হল, ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর এটাই ওদের বৃহত্তম সমাবেশ। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধীরা আসবে, মিছিল করবে, সভা করবে, সরকারের সমালোচনা করবে… এটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। তাদের ছাত্র-যুব নেতা ছিলেন, সেখানে বক্তব্য রেখেছেন, তাতে আমাদের সমালোচনাও থাকতে পারে। কিন্তু একটি সংসদীয় গণতন্ত্রের কাঠামোর মধ্যে সভা হয়েছে।”

এর আগে বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পুলিশের সঙ্গে কার্যত খণ্ডযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বিজেপির কর্মী ও সমর্থকদের। পুলিশের গাড়ি আগুনে পুড়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল এক পুলিশ আধিকারিককে। সেদিনের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, “আগের দিনের মতো চূড়ান্ত অরাজকতা, ইট মারা, পুলিশকে খুনের চেষ্টা করা, কুৎসা করা, গালমন্দ করা, ডোন্ট টাচ মাই বডি… এসব হয়নি। তাদের নির্বাচনী বিপর্যয় চলছে। বাম জমানার নীতিগুলি মানুষ মেনে নেয় না। তার মধ্যেও তারা কিছু লোক এনেছেন। সভা করেছেন। কিন্তু তাঁরা পুলিশকে আক্রমণ করেননি। তাঁরাও বলতে পারবেন না কোথাও অশান্তি হয়েছে। গণতন্ত্রের এই সুস্থ পরিবেশটা থাকুক।” বাম ছাত্র-যুবর ‘ইনসাফ সভা’ যে সুশৃঙ্খলভাবে হয়েছে, সেই কথাই এদিন উঠে এল কুণাল ঘোষের কথায়।

কুণাল ঘোষ বলেন, “তারা (বামেরা) কোনও প্ররোচনা দেননি। তাই পুলিশও কিছু করেনি। অ্যাক্ট না হলে রিঅ্যাক্টেরও ব্যাপার নেই। নবান্নের অভিযান যা লোক হয়েছিল, তার দশ গুণ লোক হয়েছে এদিনের সভায়। পরিবর্তনের পর এটি বামেদের অন্যতম বৃহত্তম সমাবেশ।” সেই সঙ্গে কুণাল ঘোষ অবশ্য বামেদের অতীতও স্মরণ করিয়ে দেন। বলেন, “মানুষ ওদের নীতি নিচ্ছে না। শূন্য করার আগে ওরা ব্রিগেডও করেছিল। ব্রিগেড উপচে দিয়েছিল। কিন্তু ভোটে শূন্য পেয়েছিল। লোক আসছে মানেই ওরা সফল হচ্ছে, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এসব ভাবার কারণ নেই।”

মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়েরও বেশ প্রশংসা করতে দেখা গেল তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের গলায়। বললেন, “মীনাক্ষীর বয়স অনেক কম। অন্য রাজনীতির দর্শনে চলেন। সব রাজনীতির দর্শন মিলিয়ে নতুন প্রজন্মের যে কয়েকজন উঠে আসছেন, ভাল লাগছে মেয়েটিকে।”

এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বাম ছাত্র-যুবদের সভা প্রসঙ্গে বলেন, “বামেদের মিছিল বলা ভুল হবে। এটা সিপিমূলের মিছিল ছিল। সিপিএম-এর থেকে বেশি তৃণমূল লোক সেখানে ছিল। ভুল করে ‘জয় বাংলা’ বলেনি… এই অনেক। বিরোধী ভোটকে ভাগ করার জন্য স্পনসর করা হচ্ছে এই ধরনের আন্দোলন। যাতে সিপিএম-এর মাধ্যমে বিজেপির কিছু ভোট কাটা যায়, সেই জন্য তৃণমূল সুপারি দিয়েছে মহম্মদ সেলিমকে।”

উল্লেখ্য, এর আগে বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিনেও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করেছিলেন, বিজেপির নবান্ন অভিযান ‘ফ্লপ’। তুলনায় বামেদের অভিযান অনেক ভাল, এমন কথাও শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। অর্থাৎ, রাজ্য রাজনীতিতে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখলে দেখা যাবে, শাসক শিবির থেকে বামেদের বিষয়ে প্রচ্ছন্নভাবে একটি ইতিবাচক কথা বলা হচ্ছে।