পোর্টাল-বিভ্রাটের মধ্যেই দ্বিতীয় দফার টিকাকরণে জোর কেন্দ্রের, মেপে পা রাজ্যের
রাজ্যের বক্তব্য, 'কোউইন' পোর্টাল যতদিন পর্যন্ত না ঠিকভাবে কাজ করছে ততদিন এই প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব নয়। এই নিয়েই নতুন করে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের তরজা শুরু হয়েছে।
সৌরভ দত্ত: এবার টিকাকরণ (Vaccination) নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের ঠোকাঠুকি। সোমবার রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক (Central Health Ministry) জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে প্রথম সারির কোভিড যোদ্ধাদের টিকাপ্রদানের কাজ শুরু করতে। পালটা রাজ্যের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘কোউইন’ পোর্টাল যতদিন পর্যন্ত না ঠিকভাবে কাজ করছে ততদিন এই প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব নয়। এই নিয়েই নতুন করে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের তরজা শুরু হয়েছে।
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে কোভিড টিকাকরণ শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় দফায় ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার্স অর্থাৎ প্রথম সারির যোদ্ধাদের টিকা দেওয়ার কথা। সেই তালিকায় রাজ্যের পুলিশকর্মী, পুরকর্মী, সশস্ত্র সেনা বাহিনী, হোম গার্ড, সংশোধনাগার কর্মী এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের নাম নথিভুক্ত রয়েছেন। কেন্দ্রের চিঠিতে এই সকল কর্মীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যভবনের (West Bengal Health Department) বক্তব্য, এই প্রক্রিয়া আগামিকাল থেকে শুরু করা সম্ভব নয়। কারণ কেন্দ্রের পোর্টাল প্রথম থেকেই ঠিকভাবে কাজ করছে না।
যে ফ্রন্টলাইন যোদ্ধারা এই দ্বিতীয় দফায় ভ্যাকসিন পাবেন তাঁরা নিজেদের নাম ‘কোউইন’-এ নথিভুক্ত করিয়েছেন। ফলে কেন্দ্রের পোর্টাল ঠিকমতো কাজ না করলে তাঁদের ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব নয়। রাজ্যের যুক্তির জবাবে কেন্দ্রের আশ্বাস ছিল, সোমবার রাত ১২টার মধ্যে পোর্টালের সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু স্বাস্থ্যভবন জানিয়ে দিয়েছে, মঙ্গলবার পোর্টাল ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা যাচাই না করে অগ্রসর হওয়া যাবে না।
কেন্দ্রের চিঠি নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার্সদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শীঘ্রই শুরু হয়ে যাবে। তবে আগে পোর্টালের সমস্যা মেটাতে হবে।” সাধারণ বাজেট ও তাতে স্বাস্থ্য খাতে রাজ্যের পাওনা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন তিনি। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ও মিশন ডিরেক্টর সৌমিত্র মোহনও দিল্লিতে। তার মধ্যেই এই কেন্দ্রীয় সরকারের এই চিঠির যথেষ্ট তাৎপর্য রয়েছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন: মহম্মদ সেলিমের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল টুইটার! কেন?
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ৩১ জানুয়ারী পর্যন্ত রাজ্যে ২ লক্ষ ৬৫ হাজার ৯৩৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী টিকা নিয়েছেন। যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল, সোমবার পর্যন্ত তার ৬৯ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ এখনও ৩১ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাকরণ বাকি। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহ থেকে প্রথম সারির কর্মীদের টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হলে স্বাস্থ্য দফতরের উপর চাপ বাড়বে। ফলে তখন ছবিটা কেমন দাঁড়াবে তা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। যে কারণে দ্বিতীয় দফার টিকাকরণ শুরুর আগে কিছুটা হলেও মেপে পা ফেলতে চাইছে স্বাস্থ্য ভবন।
আরও পড়ুন: Budget 2021: বাংলার প্রাপ্তি: বাজেটে কী কী পেল বাংলা?