Mamata Banerjee: দলীয় জনপ্রতিনিধিদের কালীপুজোয় সংযম বজায় রাখার বার্তা মমতার
Kalipuja: করোনা আবহে পুজো। স্বভাবতই ভিড় সামলে রাজ্যবাসীকে আনন্দ-উৎসবে মাতার সুযোগ করে দেওয়াটা সরকারের জন্য কম চ্যালেঞ্জ নয়।
কলকাতা: ফি বছরই দলীয় জনপ্রতিনিধিদের বিজয়ার শুভেচ্ছা পাঠান তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তবে এবার বিজয়ার শুভেচ্ছাবার্তার পাশাপাশি আসন্ন আলোর উৎসব দীপাবলিতে সংযমে থাকার বার্তা দিলেন তিনি। লিখলেন, দলের নেতাদের কাছ থেকে এই আশা ও বিশ্বাস রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দশমীর পর জনপ্রতিনিধিদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেটার হেডে কুশল বার্তা গিয়েছে। যেখানে ছাপার অক্ষরে লেখা রয়েছে, ‘দুর্গাপুজো সম্পন্ন হল। বিশ্বব্যাপী অতিমারির মধ্যেই সচেতন দায়িত্ববোধের সঙ্গে পালিত হল আমাদের শ্রেষ্ঠ উৎসব। এই সচেতনতা ও সহযোগিতার জন্য আমরা সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। তোমাদের ও তোমাদের পরিবারের জন্য রইল শুভ কামনা।’
একই সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী লিখেছেন, দুর্গাপুজো শান্তিপূর্ণ ভাবে রাজ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকলেই জগজ্জননীর আরাধনা সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নেই করেছেন। যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রীতিমতো ‘গৌরবের’। এরপরই মমতা দিয়েছেন সংযমের বার্তা।
লিখেছেন, ‘এবার আসছে দীপাবলি ও শ্যামাপূজা। তার জন্যও জানিয়ে রাখি আগাম শুভেচ্ছা ও অনেক শুভ কামনা। শারদোৎসবের সব পর্বেই আমাদের একইরকম সংযম বজায় থাকবে, এই আশা ও বিশ্বাস রাখি। আগামী দিনগুলোও থাকুক আনন্দমুখর, কিন্তু সতর্ক ও সংবেদনশীল।’
করোনা আবহে পুজো। স্বভাবতই ভিড় সামলে রাজ্যবাসীকে আনন্দ-উৎসবে মাতার সুযোগ করে দেওয়াটা সরকারের জন্য কম চ্যালেঞ্জ নয়। একদিকে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের চোখ রাঙানি রয়েছে, একই সঙ্গে প্রকৃতির দুর্যোগ। সমস্ত কিছুকে সামাল দিয়ে আনন্দ উদযাপন। বিভিন্ন পুজো উদ্বোধনে গিয়ে বার বারই তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন, উৎসব হোক স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
যদিও তা প্রকৃতপক্ষে কতটা মানা সম্ভব হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উষ্কে দিয়েছে শ্রীভূমির পুজোমণ্ডপটি। রাজ্যেরই এক মন্ত্রী এই পুজোর উদ্যোক্তা। অথচ এই ‘বুর্জ খলিফা’ দেখতে যে হারে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়া থেকেই মানুষের লাইন পড়তে শুরু করেছিল, তা আঁতকে ওঠার মতো। পরিস্থিতি এমন হয় যে, নবমী থেকে বাইরের দর্শনার্থীদের জন্য পুজো মণ্ডপে প্রবেশই বন্ধ করে দিতে হয়।
পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষও তড়িঘড়ি সাত জোড়া নাইট সার্ভিস স্পেশাল ট্রেন বন্ধ করে দেয়। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে পূর্ব রেলের এই বিজ্ঞপ্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সাধারণ মানুষকে অবগত করা হয়। করোনা আবহে মাত্রাছাড়া ভিড় ছাড়াও সুজিত বসুর থিম পুজোয় ব্যবহৃত লেজ়ার লাইট বিমানের পাইলটদের উড়ানের সময় সমস্যার কারণ হচ্ছিল বলেও একপ্রস্থ বিতর্ক হয়।
দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার আদলে তৈরি সুজিত বসুর এই পুজো মণ্ডপ নিয়ে তো দলের অন্দরেই বেধে যায়। তাঁর দলেরই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “সুজিত এমনিতে ভাল ছেলে। কিন্তু এই ব্যাপারে আরও একটু বেশি রেশপনসিবেল হওয়া উচিত ছিল।” এমনকি তিনি এও বলেন, “আইন অনুযায় বিমানবন্দরের ২০ থেকে ২৫ কিমি রেডিয়াসে কোনও রকম কনস্ট্রাকশন বা লাইট অনুমতি নিয়ে করতে হয়। এটা এক্ষেত্রে করা হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। কেন আমি এত ভিড় ডাকব?” পাল্টা সুজিত বসুও বলেন, “আমি অনেক সিনিয়র। আমি জানি কী করতে হয় আর কেন করতে হয়। আমি কারও থেকে শিখব না কতটা রেসপন্সিবল হব। কাউকে জবাব-ও দেব না।”
এ সব তরজা কাটিয়ে পুজোও শেষ। জায়গায় জায়গায় বিসর্জন হয়ে গিয়েছে প্রতিমার। এবার অপেক্ষা কালীপুজোর। সেখানে আর কোনও বিতর্ক যে দলনেত্রী চান না, মমতা তাঁর বার্তায় তা স্পষ্ট করে দিলেন।
আরও পড়ুন: Corona Update: দৈনিক সংক্রমণ কিছুটা কম, তবু চিন্তা জিইয়ে রাখছে পজিটিভিটি রেট