Minor Vaccination: সামাজিক দূরত্ববিধি মেনেই আজ থেকে রাজ্যের স্কুলগুলিতে নাবালকদের ভ্যাক্সিনেশন! কীভাবে করবেন রেজিস্ট্রেশন?

Minor Vaccination: কলকাতার ১৬টি স্কুল চূড়ান্ত করেছে পুরসভা। একইসঙ্গে ৩৭ কোভ্যাক্সিন সেন্টার থেকেও দেওয়া হবে প্রতিষেধক।

Minor Vaccination: সামাজিক দূরত্ববিধি মেনেই আজ থেকে রাজ্যের স্কুলগুলিতে নাবালকদের ভ্যাক্সিনেশন! কীভাবে করবেন রেজিস্ট্রেশন?
ছোটোদের টিকা! (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 03, 2022 | 5:12 PM

কলকাতা: সোমবার থেকে শুরু নাবালকদের টিকাকরণ। পনেরো থেকে আঠারো বছর বয়সিদের প্রতিষেধক। দেওয়া হবে কোভ্যাকসিন। কোউইন পোর্টালে জোরকদমে চলছে রেজিস্ট্রেশন। রাজ্যে পনেরো থেকে আঠারো বছর বয়সিদের ভ্যাকসিনেশন হচ্ছে স্কুলে। কলকাতার ১৬টি স্কুল চূড়ান্ত করেছে পুরসভা। একইসঙ্গে ৩৭ কোভ্যাক্সিন সেন্টার থেকেও দেওয়া হবে প্রতিষেধক। তালিকায় নাম থাকা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের আধার কার্ড নিয়ে যেতে হবে যারা স্কুলছুট বা স্কুলে পড়ে না, এমন ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের টিকা পুরসভার কেন্দ্রে পুরসভার ৩৯টি টিকাদান কেন্দ্রের যে কোনও একটিতে যেতে হবে।

School-Vaccine-2

নাবালকদের ভ্যাক্সিনেশন (নিজস্ব চিত্র)

এক নজরে দেখে নিন কীভাবে হবে রেজিস্ট্রেশন?

♦ ২০০৭ বা তার আগে জন্ম হতে হবে।

♦ ফটো আইডি প্রমাণপত্র চিহ্নিত করতে হবে।

♦ আধার বা প্যান কার্ড বা পাসপোর্ট বা স্টুডেন্ট ফটো আইডি বা ইউনিট ডিজ্যাবিলিটি আইডি-র নম্বরে ফোন করতে হবে।

♦ কোউইনে ‘বুক ইয়োর স্লট’ ক্লিক করতে হবে।

♦ সংশ্লিষ্ট মোবাইল নম্বরে OTP যাবে।

♦ মোবাইলে আসা OTP যথাস্থানে লিখতে হবে। নাম, লিঙ্গ, জন্মতারিখ লিখুন। প্রমাণপত্রে থাকা নম্বর দিয়ে

♦ অ্যাড মেম্বার আইকনে ক্লিক করতে হবে।

School-Vaccine

টিকা নিচ্ছে ছাত্রীরা (নিজস্ব চিত্র)

স্কুলছুটদের জন্য পুরসভার কেন্দ্রে ভ্যাক্সিনেশন

প্রসঙ্গত, যাঁরা স্কুল ছুট বা স্কুলে পড়ে না, এমন ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের টিকা পুরসভার কেন্দ্রে হবে। কলকাতা পুরসভার ৩৯ টি টিকাদান কেন্দ্রের যে কোনও একটি যাওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে তালিকায় নাম থাকা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের আধার কার্ড নিয়ে যেতে হবে।  সারদা ইন্সস্টিটিউশন ফর গার্লস, গভর্নমেন্ট স্পনসরড মাল্টিপারপাস স্কুল ফর বয়েজ টাকি হাউজ, চেতলা গার্লস হাইস্কুল, সন্তোষপুর ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যালয়, গার্ডেনরিচ নুটবিহারি গার্লস হাইস্কুল-সহ কলকাতার একাধিক স্কুলে টিকাকরণ হচ্ছে।

কলকাতার স্কুলগুলিতে ভ্যাক্সিনেশন

কলকাতার স্কুলগুলিতে গিয়ে দেখা গেল, সামাজিক দূরত্ববিধি মাথায় রেখেই ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্প চলছে। ইউনিফর্মেই এসেছে ছাত্রীরা। তাদের চেয়ারে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চেতলা গার্লস স্কুলে গিয়ে দেখা গেল অন্তত সুষ্ঠভাবে টিকা দেওয়া হচ্ছে। ১০০ জন ছাত্রীকে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে আজ। ছাত্রীদের কাছে রেজিস্ট্রেশন কাগড, আধার কার্ড সব রয়েছে। চেয়ারে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে তাদের। এক ছাত্রী বলেন, “একটু অন্যরকম হবে। সবাই বলছে হাত ব্যথা হবে। টিকা নিচ্ছি অবশ্যই। তবে মাস্ক ছাড়া ঘোরা যাবে, এমনটা নয়। সব বিধিই মানতে হবে।”

স্কুলের শিক্ষিকারা বলছেন, “এটা অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। আমরা সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। ছাত্রছাত্রীরা সবাই ভ্যাকসিন পাবে। আমরা সেপারেট করে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।”

মালদার একটি স্কুলে ভিন্ন চিত্র

তবে মালদার সাহাপুর হাইস্কুলে দেখা গেল অন্য চিত্র। বেলা ১০ টা থেকে ছিল ভ্যাকসিন দেওয়ার সময়। কিন্তু তার আধ ঘণ্টা আগে পর্যন্তও স্কুলে কোনও শিক্ষক-ছাত্রছাত্রীর দেখা ছিল না। একজন স্বাস্থ্যকর্মীই কেবল এসেছিলেন। এখানে আজ আদৌ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা অবশ্য এই নিয়ে কিছু বলতে চাননি।

বিশেষজ্ঞদের মতে

নাবালকদের টিকাকরণ নিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিশেষজ্ঞ শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক বলছেন, “এই টিকাকরণ পরবর্তীকালে সদর্থক ভূমিকা নেবে। তবে আমি খুশি হব, ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে যদি ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্পটি শুরু করা যেত। ১৫ থেকে আপাতত শুরু হচ্ছে। বাংলায় কোভিড মারাত্মক হারে বাড়ছে। তার মধ্যে এটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্রত্যেক অভিভাবকের কাছে অনুরোধ তাঁরা যেন তাঁদের সন্তানদের নিয়ে ভ্যাক্সিনেশনের জন্য প্রস্তুত থাকেন। কোভ্যাক্সিন অত্যন্ত কার্যকরী টিকা। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা যাচ্ছে, ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে কোভ্যাক্সিন কোভিডকে রুখতে সমর্থ।”

বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অত্যন্ত সামান্য। বাচ্চাদের অল্প জ্বর আসতে পারে, গলা ব্যথা, গা হাত পা ব্যথা হতে পারে টিকা নেওয়া পর। তবে তাতে ভয় পাওয়া কিচ্ছু নেই বলে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন। এগুলি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই চলে যাবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শও নেওয়া যেতে পারে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভয় পেয়ে বাচ্চাদের ভ্যাকসিন না দেওয়ানো, অত্যন্ত ভুল সিদ্ধান্ত হবে বলে অভিভাবকদের সচেতন করেছেন চিকিৎসকরা।

শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “সমাজ এগোতে চাইলে স্কুল চালাতেই হবে। বিনোদন পার্ক, মল বন্ধ রাখা যেতে পারে। স্কুল বন্ধ হলে সমাজের অত্যন্ত ক্ষতিকারক।” বিশেষজ্ঞদেরই প্রশ্ন,”স্কুল কলেজে না গিয়ে কি বাচ্চারা আক্রান্ত হয়নি? হয়েছে। সেক্ষেত্রে আইসিএমআর-এর ২০২১ এর সেপ্টেম্বর মাসের তথ্য বলছে শতকরা ৬০ শতাংশ বাচ্চাদের মধ্যে অ্যান্টি বডি এসেছিল। তারা বাড়িতেই ছিল। তাহলে জোর করে স্কুল বন্ধ করার কোনও মানেই নেই।”

পরিসংখ্যান বলছে, শুধু কলকাতাতেই সংক্রামিতের সংখ্যা বেড়েছে ১৬ গুণ! উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক আক্রান্ত প্রায় হাজার! গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। সেই পরিস্থিতি এই টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হওয়া অত্যন্ত কার্যকর।

আরও পড়ুন: ‘লাস্ট ট্রেন ৭টায়’! নেট দুনিয়ায় ঘুরছে যাত্রীদের একাধিক প্রশ্ন, বিভ্রান্তি কাটাতে রেলের ব্যাখ্যা