Na Bollei Noy: দুর্গাকে নিয়ে ভাগাভাগি করার কী আছে? যে কথা ‘না বললেই নয়’

কৈলাসে রাজনীতি নেই। কিন্তু তা বলে দুর্গার সংসারে ঝামেলার শেষ নেই। মর্ত্যে এলেই দুর্গা ঠাকুরকে ঠিক করে নিতে হবে তিনি কার? মানে কোন দলের?

Na Bollei Noy: দুর্গাকে নিয়ে ভাগাভাগি করার কী আছে? যে কথা ‘না বললেই নয়’
না বললেই নয়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 23, 2022 | 3:18 PM

কলকাতা: কৈলাসে যদি রাজনীতি থাকত তাহলে কী হত? একটা আন্দাজ করা যাক। কার্তিক হয়তো সেনাবাহিনীতে নাম লেখাত না। সেনাপতি হওয়া অনেক ঝামেলা। যুদ্ধ করার  থেকে ঢের ভালো, নেতাদের কাছে আবদার করে, স্কুলে চাকরি করা। মাস মাইনে নিয়ে চিন্তা থাকত না, শুধু ডিএ পাওয়া নিয়ে ঝকমারি সহ্য করতে হতো। ওদিকে, লক্ষ্মী-সরস্বতী প্রথমে কন্যাশ্রী, তারপর রূপশ্রী পেত। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে মাসে মাসে টাকা জমাতেন দুর্গা। ছাই-ভস্ম মেখে ঘুরে বেড়াতে হতো না দেবাদি দেবকে। শিবঠাকুরের হয়তো দশ বারোটা চালকল, গাড়ি, বাড়ি, একশোটা ডাম্পার থাকত। ঝামেলা হতো যদি শিব ঠাকুরের বান্ধবীর বাড়িতে নোটের পাহাড় উদ্ধার হতো। কৈলাসে রাজনীতি নেই। কিন্তু তা বলে দুর্গার সংসারে ঝামেলার শেষ নেই। মর্ত্যে এলেই দুর্গা ঠাকুরকে ঠিক করে নিতে হবে তিনি কার? মানে কোন দলের? একটা সময় বাবু সম্প্রদায়ের বাড়িতে দুর্গাদালানে সাধারণের প্রবেশের অনুমতি ছিল না। আম বাঙালি, দুর্গাপুজোকে বারোয়ারি করে নেয়। কালে কালে বাবুরা নেতা হলেন, বারোয়ারির পুজোও নেতাদের হল। সাধারণ মানুষ লম্বা লাইন করে নেতাদের পুজোর দর্শক হলেন। এখন বাঙালি শুনছে, তাদের প্রিয় দুর্গাপুজো না কি সর্বজনের নয়, নেতাগণের। ইউনেস্কো কলকাতার দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্বজনীন স্বীকৃতি মেলার পর, কোথায় সবাই মিলে হই হই করে আনন্দে মাতবে তা না, কৃতিত্ব নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে গেছে। ভাগের মা, গঙ্গা পান না ঠিক আছে। কিন্তু দুর্গাকে নিয়ে ভাগাভাগি করার কী আছে?

মাস পয়লায় রেড রোডে দুর্গা প্যারেড করিয়েছে রাজ্য। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি সেলিব্রেট করা হয়েছে। রাজ্যের উদ্যোগ মানে সে তো আদপে তৃণমূলের কলার তোলার সুযোগ। বিজেপি ছাড়বে কেন? ছাড়েওনি। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি ও বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি বলে দিয়েছেন, পুজোর সম্মানে আসল হকদার যদি কেউ হয়, সেটা কেন্দ্র। আগামিকাল, কলকাতায় ভারতীয় জাদুঘরে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। সেখানে, প্রতিমা ও মণ্ডপশিল্পী, প্রতিমার অলঙ্কারশিল্পী, ঢাকি, পুরোহিত, বিভিন্ন রাজবাড়ির প্রতিনিধি-সহ ৩০ জনকে সংবর্ধনা জানানো হবে ওই অনুষ্ঠানে। মানে বাঙালির পুজো সেলিব্রেশনকে রাজনৈতিক ভাবে সেলিব্রেট করবে কেন্দ্রের সরকার, ওরফে বিজেপি। এমনিতে, বঙ্গ বিজয়ের স্বপ্নে বিভোর বিজেপি দুর্গাপুজোয় সামিল হয়েছিল। বারে বারে তিনবার, মানে এবারই শেষবার পুজোর আয়োজন করার কথা পদ্মপার্টির। কিন্তু সেখানেও মহা গোলমাল। আদি মানে আগমার্কা বিজেপি না কি আমদানি করা বিজেপি, মানে যাঁরা অন্য দল থেকে এসেছেন, কাদের হাতে থাকবে পুজোর রাশ তা নিয়ে মন কষাকষি চলছে। আসা করায় যায়, পিতৃপক্ষের সমস্যা দেবীপক্ষ পড়লে মিটে যাবে। দুগ্গা দুগ্গা…

দুগ্গা দুগ্গা জপ করে পুজোর আগে, একটু সুখবর পেলে মন্দ কি! শোনা যাচ্ছে, ববিতা সরকারের পর আরও একজন মিরাকল ঘটাতে পারেন। কোর্টের রায়ে, অযোগ্যকে সরিয়ে আবার একজন যোগ্য তাঁর হকের চাকরি আদায় করে নিতে পারেন। এসএসসি-কে দেখে কিন্তু হিংসে হচ্ছে, বুঝলেন! একই ধরণের ভুল বারবার শুধরে নেওয়ার এমন সুযোগ তো সবাই পায় না। এসএসসি পাচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদও নিশ্চয়ই পাবে। মহামান্য হাইকোর্টের বিচারপতি তো বলে দিয়েছেন, দুর্নীতি করে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, ধরা পড়লে তাঁদের সকলের চাকরি যাবে।

কিন্তু সোনাঝুরির কী হবে? বোলপুরের প্রকৃতি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শান্তিনিকেতনেই গড়ে তুলেছিলেন বিশ্বভারতী। সবুজের সমারোহ। শান্ত, স্নিগ্ধ পরিবেশ। পাখির কলতান। বোলপুরের সেসব দিন গিয়াছে। বোলপুরের নামটাই না কি যে কোনও দিন এফিডেফিট করে ‘কেষ্ট’পুর হয়ে যেতে পারে। সেই  ‘কেষ্ট’পুরের অন্যতম টুরিস্ট ডেস্টিনেশন সোনাঝুরি চুরি হয়ে যাচ্ছে। বালাই ষাট! গরু, কয়লা, বালি সব কিছুতেই যখন প্রভাবশালীরা ইনভেস্ট করেছেন, তখন সোনাঝুরিতে করবেন না কেন? কথাতেই তো আছে, যেখানে পাইবে ছাই উড়াইয়া দেখো তাই…

আপাতত এইটুকু। বিস্তারিত কথা শুনতে হলে আসতে হবে টিভি নাইন বাংলায়। দেখতে হবে, না বললেই নয়। রাত ৮.৫৭।