‘গডফাদার’ই ফেলল জালে, শহরে বামাল গ্রেফতার কর্পোরেট তরুণ-তরুণীরা

এনসিবি সূত্রে জানানো হয়েছে, খেলনার মোড়কে সুদূর আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া এবং কানাডা থেকে এই গাঁজা কলকাতায় পাচার করা হত।

'গডফাদার'ই ফেলল জালে, শহরে বামাল গ্রেফতার কর্পোরেট তরুণ-তরুণীরা
বিগত কয়েকদিন ধরেই পাওয়া নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে হানা দিয়ে প্রায় ২০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 01, 2021 | 10:11 AM

কলকাতা: বিদেশ থেকে শহরে পাচার হওয়া বিরল প্রজাতির মাদক চক্রের খোঁজ পেল নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো। সূত্রের খবর, কলকাতায় বসেই গোটা দেশের বাজারে এই মাদকের ব্যবসা চালাচ্ছিল কর্পোরেট সংস্থায় কর্মরত উচ্চপদস্থ কিছু যুবক-যুবতী। বিগত কয়েকদিন ধরেই পাওয়া নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে হানা দিয়ে প্রায় ২০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত দুই তরুণী ও এক তরুণকে। এনসিবি সূত্রে জানানো হয়েছে, খেলনার মোড়কে সুদূর আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া এবং কানাডা থেকে এই গাঁজা কলকাতায় পাচার করা হত।

তবে এ গাঁজা যে সে গাঁজা নয়। বিশ্বে যত ধরনের গাঁজা পাওয়া যায়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাদকাশক্তি সম্পন্ন এই প্রজাতি পরিচিত ‘গডফাদার’ হিসেবে। ভারতীয় গাঁজার THC Level (শরীরে নেশার পরিমাণ নির্ধারণের মাপকাঠি) যেখানে ১২ শতাংশ। সেখানে এই ‘গডফাদার’ প্রজাতির গাঁজার THC Level ১৯-২২ শতাংশ। বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি দেশে, বিশেষত উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু দেশে এই প্রজাতির সন্ধান মেলে। ফলে ‘গডফাদার’ প্রজাতি দুর্লভ তো বটেই, সেই সঙ্গে দুর্মূল্যও। এনসিবি সূত্রে খবর, সেই গাঁজাই কলকাতায় বসে কেনা হত ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে। পার্সেলে করে তা অন্যান্য দ্রব্যের মোড়কে এসে পৌঁছত কলকাতায়। এরপর তা ছড়িয়ে দেওয়া হত দেশের অন্যান্য জায়গায়। বস্তুত, কলকাতায় বসেই গোটা চক্রটি পরিচালিত হত।

ধৃত ৩ জনের মধ্যে এই চক্রের মাথায় ছিলেন শ্রদ্ধা সুরানা নামে বছর ২৫-এর এক তরুণী। সিমরান সিংয়ের ভুয়ো নাম ও আধার কার্ড বানিয়ে তিনি গোটা চক্রটি চালাত। পেশায় একটি বিজনেস স্কুলের ফিনানশিয়াল অ্যাডভাইসার শ্রদ্ধা। গ্রেফতার হওয়া অপর তরুণী তারিনা ভটনাগরের বয়স ২৬। পেশায় একটি ফুড প্রোডাক্ট সংস্থার ডিজাইনার। সে নিজের অন্য দুই বন্ধুর নামে ৩ টি পার্সেল অর্ডার দিয়েছিল। গ্রেফতার হওয়া তৃতীয় ব্যক্তি বছর ৩০-এর করণ কুমার গুপ্ত। করণের কাজ ছিল মূলত শ্রদ্ধার নির্দেশ মেনে কলকাতার বিভিন্ন খদ্দেরদের সেই গাঁজার পার্সেল পৌঁছে দেওয়া। এরপর কলকাতা থেকে গোটা দেশে তা ছড়িয়ে পড়ত। এরকম মোট ৪২ টি পার্সেল উদ্ধার করেছে এনসিবি। উদ্ধার হওয়া গাঁজার বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা বলে অনুমান তদন্তকারীদের।

তবে নার্কোটিক কন্ট্রোল ব্যুরোর কর্তাদের অনুমান, এই গোটা গাঁজা পাচারের নেপথ্যে আরও একাধিক চক্র জড়িত রয়েছে। যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এটি একটি ছোট চক্র। বহু নামজাদা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় একই ধরনের ছোট ছোট প্রচুর চক্র ছড়িয়ে রয়েছে, যারা নিঃশব্দে এই ভাবে মাদক পাচারে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে। ধৃত তিন তরুণ-তরুণীকে জেরা করে সেই চক্রেরই হদিশ পেতে চাইছেন গোয়েন্দারা। আরও পড়ুন: বাবুল-প্রশ্নে তিতিবিরক্ত দিলীপের সাংবাদিক বৈঠক বন্ধ করার হুমকি, দূর থেকেই জল মাপছে ঘাসফুল