Partha Chatterjee’s Assets: ১০ বছরে পার্থর আয় কমেছে প্রায় ‘তিন গুণ’, তাও এত সম্পত্তি! দেখুন খোদ মন্ত্রীর দেওয়া হিসেব

Partha Chatterjee's assets as per affidavit: ২০১১ সালে প্রথমবার তৃণমূল সরকার গঠনের পরই মন্ত্রী হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপর ১০ বছর মন্ত্রী ছিলেন তিনি। এই ১০ বছরে তাঁর আয় কমলেও বেড়েছে সম্পদ। কতটা জানেন?

Partha Chatterjee's Assets: ১০ বছরে পার্থর আয় কমেছে প্রায় 'তিন গুণ', তাও এত সম্পত্তি! দেখুন খোদ মন্ত্রীর দেওয়া হিসেব
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নিজের দেওয়া হিসেব কী বলছে?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 26, 2022 | 6:55 PM

কলকাতা: এসএসসি দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল বাংলা। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ‘বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি মিলেছে প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। এই অভিযানের পরদিনই গ্রেফতার করা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। আপাতত ইডির হেফাজতেই আছেন তাঁরা। তাঁদের একের পর এক স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ মিলছে। ২০১১ সালে প্রথমবার তৃণমূল সরকার গঠনের পর, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারে তাঁকে বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে দেওয়া হয়েছিল উচ্চশিক্ষা এবং স্কুলশিক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বও। বর্তমানে, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের বেহিসেবি সম্পদ তদন্তকারীদের আতস কাচের নিচে, আসুন জেনে নেওয়া যাক এই ১০ বছরের মন্ত্রিত্বে কতটা সম্পদ বৃদ্ধি ঘটেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের?

২০১১-য় মোট সম্পদ

২০০১ থেকে টানা ৫ বার বেহালা পশ্চিম কেন্দ্র থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা পেশ করেছিলেন পার্থ, সেই হলফনামা অনুযায়ী সেই সময় তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬৯ লক্ষ ৭ হাজার ৮২১ টাকা। পাশাপাশি ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার দেনা ছিল। ৬৯,০৭,৮২১ টাকার সম্পদের মধ্যে ছিল ২৪ লক্ষ টাকার বেশি অস্থাবর সম্পত্তি এবং ৪৫ লক্ষ টাকার স্থাবর সম্পত্তি।

২০১১-য় অস্থাবর সম্পদ

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল নগদ ৭,৮০০ টাকা। ৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা ছিল ১৫,৫১,৮২১ টাকা। বন্ড ও শেয়ার ছিল ৫০০০ টাকার। ছিল ২৫ হাজার টাকার জীবনবীমা পলিসি। পাশাপাশি পার্থ চট্টোপাধ্যায় একটি মারুটি এসএক্স -৪ গাড়ির মালিক ছিলেন। গাড়িটির সেই সময় বাজার দর ছিল ৫ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা। এছাড়া সোনার গয়না ছিল ৩ লক্ষ ১ হাজার ২০০ টাকার।

২০১১-য় স্থাবর সম্পদ

মোট ৪৫ লক্ষ টাকার স্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল নাকতলায় ১.৫ কাঠা জমির উপর একটি আড়াই তলা বাড়ি। ২০১১ সালে যার বাজার দর ছিল ২৫ লক্ষ টাকা। এছাড়া স্ত্রীর সঙ্গে যৌথ মালিকানায় এনএসসি বোস রোডে আরও একটি ১২০০ স্কোয়ারফিটের ফ্ল্যাট। যার সেই সময় বাজারমূল্য ছিল ২০ লক্ষ টাকা।

২০১১-য় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আয়

২০১০-১১ সালে যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছিলেন, তাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, ওই আর্থিক বছরে তাঁর মোট আয় ছিল ১৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ৪৪৮। আর তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়ের আয় ছিল ৮ লক্ষ ৫৮ হাজার ৩৭৩ টাকা।

২০২১-এ মোট সম্পদ

২০২১ সালে একই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নির্বাচনের আগে নিয়ম মেনে নির্বাচন কমিশনকে হলফনামা দিয়ে তাঁর সম্পদের বিবরণও দিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। কতটা বেড়েছিল তাঁর সম্পদ? ২০২১ সালে নির্বাচন কমিশনে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ১৫ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮৬৩ টাকা। নেই কোনও দেনা।

২০২১ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিবরণ

২০২১ সালে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় যে ১,১৫,৯৪,৮৬৩ টাকার সম্পদের বিবরণ দিয়েছিলেন, তার মধ্যে মোট অস্থাবর সম্পদ ছিল ৯০ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮৬৩ টাকার। আর স্থাবর সম্পদ ছিল মোট ২৫ লক্ষ টাকার। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নদগ অর্থ ছিল ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৬৭৬ টাকার। ৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ ছিল ৬৪ লক্ষ ৪৬ হাজার ১৮৭ টাকা। বন্ড ও শেয়ার ছিল ৫০০০ টাকার, জীবনবীমা ২৫ হাজার টাকার, ২০২১ সালের হলফনামায় পার্থ জানিয়েছিলেন, তাঁর কোনও গাড়ি বা সোনার গয়না নেই। স্থাবর সম্পদের মধ্যে শুধুমাত্র নাকতলার বাড়িটির কথাই জানিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২০১১-এর মতো ২০২১ সালেও বাড়িটির বাজার দর ছিল ২৫ লক্ষ টাকা বলেই জানিয়েছিলেন তিনি।

২০২১-এ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আয়

২০২১ সালের আয়কর রিটার্নে গত ৫ বছরের আয়ের উল্লেখ করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২০২০-২১ সালে তাঁর আয় ছিল ৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৭২০ টাকা। তার আগের ৪ বছরে তাঁর আয় ছিল যথাক্রমে ৪,৭৯,৩৫০ টাকা, ৬,৩৩,৬১২ টাকা, ৭,৩০,৭৩৮ টাকা এবং ৮,৩৭,০০১ টাকা। অন্যদিকে তাঁর স্ত্রীর ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে তাঁর প্রয়াত স্ত্রী কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়ের আয় ছিল ৬ লক্ষ ১৭ হাজার ৫১ টাকা।

১০ বছরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পদ বৃদ্ধি

২০১১ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আয় ছিল ১৫ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকার বেশি। ২০২১ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৫,৩৯,৭২০ টাকায়। অন্যদিকে ২০১১ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পদ ছিল ৬৯, ০৭,৮২১ টাকা। ১০ বছর পর, ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,১৫,৯৪,৮৬৩ টাকায়। অর্থাৎ, তাঁর দাবি অনুসারে ১০ বছরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আয় বছরে প্রায় তিন গুণ কমলেও, মোট সম্পদ বেড়েছে, ৪৬ লক্ষ ৮৭ হাজার ৪২ টাকার!