Kunal Ghosh : কোনও ব্যক্তির জন্য ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতি হলে, সরকারকে দায়ী করা ঠিক হবে না: কুণাল
Kunal Ghosh : কুণাল ঘোষ কারও নাম না নিয়েই বলেন, আদালত যাঁদের নাম উচ্চারণ করছে, তাঁদের যা যা বক্তব্য কিংবা আইনি প্রক্রিয়া তাঁরা নিজেদের মতো নিতে পারেন। তবে ভুল কাজকে দল সমর্থন করবে না।
কলকাতা : এসএসসি দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এসএসসি নিয়োগে যে দুর্নীতি হয়েছে, সেটাও প্রমাণিত বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই অবস্থায় তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, কোনও ব্যক্তি বা কারও কাজে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের যদি ক্ষতি হয়ে থাকে, তাহলে আইন আইনের পথে চলবে। তবে এর জন্য দল বা সরকারকে দায়ী করা ঠিক হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রাজ্যে ভাল কাজ হচ্ছে বলে দাবি করে কুণাল বলেন, “রাজ্যে সব ধরনের মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছেন, যদি কোনও ভুল হয়ে থাকে, তা খুবই কম। ০.০১ শতাংশ ভুল হলেও তাকে দল সমর্থন করবে না । মুষ্টিমেয় কয়েকজনের কাজে যদি ছাত্রছাত্রী কিংবা সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয়ে থাকে, দল সেই কাজকে সমর্থন করবে না।”
দুর্নীতির প্রশ্নে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক বলেন, “দুর্নীতি যদি দেখেন তাহলে মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কেলেঙ্কারি-সহ চারিদিকে ভয়ঙ্কর সব ঘটনা ঘটেছে।” এইসব উদাহরণ দিয়ে তিনি অবশ্য কোনও কিছু সমর্থন করছেন না বলে জানান। তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, আদালতের সঙ্গে তরজায় যাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। কেউ ভুল করলে পয়েন্ট আউট করতেই পারে আদালত।
এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে অনেকদিন ধরেই সরব বিরোধীরা। আজ গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে বহাল রেখেছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সিবিআই-ই ওই মামলার তদন্ত করবে বলে জানিয়ে দেয়। গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি যাবতীয় দুর্নীতি মামলা শুনতে পারবেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম ওই দুর্নীতিতে উঠে আসে। আজই সিবিআই দফতরে হাজিরার জন্য প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
কুণাল ঘোষ কারও নাম না নিয়েই বলেন, আদালত যাঁদের নাম উচ্চারণ করছে, তাঁদের যা যা বক্তব্য কিংবা আইনি প্রক্রিয়া তাঁরা নিজেদের মতো নিতে পারেন। তবে ভুল কাজকে দল সমর্থন করবে না।
কুণাল ঘোষ আজ একথা বললেও মাস খানেক আগে মন্ত্রিসভার সতীর্থ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তিনি একই মন্ত্রিসভার সদস্য। ফলে যদি কোনও কিছু হয়ে থাকে তাঁর দায় যতটা পার্থর, ততটা তাঁরও। তৃণমূল যৌথ পরিবার জানিয়ে ফিরহাদ বলেছিলেন, “আমরা কারও একার ঘাড়ে দায়িত্ব ঠেলে দিতে পারি না।”
এদিকে, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে পদ থেকে সরাতে গতকাল সুপারিশ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তিনি বলেন, পদ থেকে সরানোর সুপারিশ আদালতের কোনও নির্দেশ নয়। মন্ত্রীকে তাঁর পদ থেকে সরানোর সুপারিশ স্বচ্ছতার স্বার্থে, স্বচ্ছ ভবিষ্যতের স্বার্থে। আজ আবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তাঁর পদ থেকে সরানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালকে সুপারিশ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিচারপতির ওই সুপারিশ প্রসঙ্গে আজ কুণাল ঘোষ বলেন, “ভুল হলে মুখ্যমন্ত্রী যা করার করবেন। এটা রাজ্য সরকারের যিনি প্রধান, তাঁর উপর ছেড়ে দেওয়াই ভাল। তিনি ঠিক করবেন, কে কোন পদে থাকবেন কি না। এই ধরনের নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করলে ভাল হয়।” ত্রিপুরায় মানিক সরকারের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে আদালতের নির্দেশে ১০ হাজারের বেশি স্কুল শিক্ষকের চাকরি যায়। শুধু মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে চাকরিতে নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করেছিল আদালত। তখন কোনও মন্ত্রীকে পদ থেকে সরানোর সুপারিশ করা হয়নি বলে আজ মন্তব্য করেন কুণাল। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলের জামিন বাতিল হলেও মন্ত্রীকে তাঁর পদ থেকে সরানোর সুপারিশ করা হয়নি। ফলে কাউকে মন্ত্রিত্বে রাখা হবে কি না, তা রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের উপর ছেড়ে দেওয়াই ভাল বলে তিনি মন্তব্য করেন।