Post Poll Violence: নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি খুনে চার্জশিট পেশ সিবিআইয়ের

CBI: নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর নন্দীগ্রামের চিল্লোগ্রামের বাসিন্দা তথা বিজেপি সমর্থক দেবব্রত মাইতিকে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই খুনের কাণ্ডে নাম জড়ায় সুফিয়ানেরও।

Post Poll Violence: নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি খুনে চার্জশিট পেশ সিবিআইয়ের
সিবিআই, ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 08, 2021 | 2:17 PM

কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে আরও একটি চার্জশিট পেশ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (CBI)। শুক্রবার নন্দীগ্রামে দেবব্রত মাইতি হত্যাকাণ্ডে চার্জশিট দায়ের করল সিবিআই। বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি হত্যাকাণ্ডে শেখ ফতেনুর, শেখ মিজানুর ও শেখ ইমদুলাল ইসলামর নামে হলদিয়া আদালতে চার্জশিট জমা দিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। এই নিয়ে হিংসা তদন্তে চার্জশিটের সংখ্যা বেড়ে হল পাঁচ।

সূত্রের খবর, এর আগে বিজেপি কর্মী (BJP Worker) দেবব্রত মাইতির হত্যাকাণ্ডে তৃণমূলনেতা তথা মুখ্যন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নন্দীগ্রামের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান-সহ আরও দুই তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। সরাসরি শেখ সুফিয়ানকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার এভাবে তলব করায় শোরগোল উঠেছিল রাজ্যরাজনীতিতে। যদিও, সুফিয়ান জানিয়েছিলেন তিনি সবরকমভাবে তদন্তকারীদের সাহায্য করবেন।

নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর নন্দীগ্রামের চিল্লোগ্রামের বাসিন্দা তথা বিজেপি সমর্থক দেবব্রত মাইতিকে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই খুনের কাণ্ডে নাম জড়ায় সুফিয়ানেরও। নিহত দেবব্রতের পরিবার মানবাধিকার কমিশনের কাছে তৃণমূল নেতার নামে অভিযোগও দায়ের করেন।

যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, “সিবিআই (CBI) আমাকে নোটিস পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার হলদিয়া বন্দর সংলগ্ন সরকারি গেষ্ট হাউসে আমাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। আমি ওই ঘটনায় জড়িত নই। তবুও আমায় যখন ডাকা হয়েছে তখন আমায় যেতেই হবে। গোটাটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। সেইজন্যেই আমায় ডেকে পাঠানো হয়েছে।” এমনকী, সিবিআইয়ের তলবের নেপথ্যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন সুফিয়ান।

বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পাল পাল্টা বলেন, “নির্বাচনের পর দিন চিল্লোগ্রামে দেবব্রত মাইতির বাড়ি গিয়ে তাঁকে মারধর করেছিল তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। গুরুতর জখম অবস্থায় দেবব্রতকে কলকাতায় নিয়ে গেলে দু’দিন বাদে মৃত্যু হয় তাঁর।’’

বিজেপি নেতা আরও বলেন,  ‘‘নন্দীগ্রাম থানায় সেই মুহূর্তে মামলা করা যায়নি। কারণ তৃণমূলের লোকেরা চার দিক ঘিরে রেখেছিল। পুলিশও নিষ্ক্রিয় ছিল। পরে মানবাধিকার কমিশন নন্দীগ্রামে এলে তাঁদের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই ঘটনায় সেখ সুফিয়ান-সহ নন্দীগ্রামের বেশ কয়েক জন প্রথম সারির তৃণমূল নেতার নাম রয়েছে। এরপরেও যদি সুফিয়ানবাবু বলেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে, তাহলে বলব, তিনি নিজের স্বপক্ষে যুক্তি তৈরি করুন। কারণ সবটাই আইন মেনে হচ্ছে।”

উল্লেখ্য, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) সুপারিশকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক তরজা। পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। কিন্তু, সেই মামলায় জোর ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাগুলির তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর হাতে। অন্যদিকে, বাকি হিংসার ঘটনার তদন্তের জন্য রাজ্য পুলিশের তিন সদস্যের একটি সিট গঠন করা হয়েছে।

কিন্তু এ ক্ষেত্রে মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে ওঠে রাজ্য সরকারের জন্য। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নিজের রিপোর্টে উল্লেখ করে, এ রাজ্যে আইনের শাসন নেই, শাসকের আইন রয়েছে। যা তীব্র অস্বস্তির মধ্যে ফেলে রাজ্যকে। কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের থেকেও মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টই যেন গলার কাঁটা হয়ে ফুটছে। যে কারণে গোটা মামলায় হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয় রাজ্য সরকার।

ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায়  ইতিমধ্যেই প্রায় চারটি চার্জশিট দাখিল করেছে সিবিআই। শুক্রবার সেই চার্জশিটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫টি। বেড়েছে মামলার সংখ্যাও। আরও ৩ টি এফআইআর রুজু করেছে সিবিআই। মামলার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৫।  ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে মোট ৮৪ জন তদন্তকারী অফিসার বা আইও-র মধ্যে ইন্সপেক্টর, ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার রয়েছেন। এছাড়া ২৫ জন কর্তা রয়েছেন এই দলে। জয়েন্ট ডিরেক্টর, ডিআইজি, এসপি পদমর্যাদার এই ২৫ জন অফিসার।

প্রত্যেক জোনের টিমে ২১ জন করে তদন্তকারী অফিসার বা আইও। বেশিরভাগ ডিআইজি ও এসপি পদমর্যাদার কর্তা। রাজ্যে ১৫ টি খুন এবং ৬ টি ধর্ষণের মামলায় ২৭ অগাস্ট ১১টি এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। খুন, খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখা, অপহরণ, অনুপ্রবেশের মতো একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়। ইতিমধ্যেই হিংসা মামলার তদন্তে হাইকোর্টে মুখবন্ধ খামে স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

আরও পড়ুন: Arjun Singh: সাংসদের বাড়িতে বোমাবিস্ফোরণ-কাণ্ডে ৩ দিনের মধ্যে NIA-কে নথি হস্তান্তরের নির্দেশ আদালতের

আরও পড়ুন: Post Poll Violence: ফের তৃণমূলের কার্যালয়ে সিবিআই, শাসক দলের একাধিক নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ