Recruitment Case: পোস্টমর্টেম: কেন নষ্ট করা হল OMR শিট? সংরক্ষণের নিয়ম কী?
Recruitment Case: সুপ্রিম কোর্টে ২০১৬ সালের নিয়োগ মামলা যাওয়ার পর এসএসসি জানায়, তাদের কাছে ওএমআর শিটের কোনও ডিজিটাল কপি নেই। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে আবেদনকারীদের তারা ডিজিটাল কপি কীভাবে দিল?

পর্ব-১
কলকাতা: কে যোগ্য? কে অযোগ্য? তার হদিশ দিতে পারত ওএমআর শিট। কিন্তু, ওএমআর শিটের হার্ড কপি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০১৬ সালের এসএসসি-র পুরো প্যানেল বাতিল হওয়ার পর প্রশ্ন উঠছে, কেন নষ্ট করা হল ওএমআর শিটের হার্ড কপি? এর পিছনে কি কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে? নাকি নিয়ম মেনেই নষ্ট করা হয়েছে ওএমআর শিটের হার্ড কপি? প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী কর্মহীন হয়ে পড়ার পর এইসব প্রশ্নই ঘুরে ফিরে উঠে আসছে।
২০১৬ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর জন্য এসএলএসটি-র বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তার আগে বিধানসভায় একটি বিল পাশ করিয়ে আইন আনা হয়। সেই আইনে বলা হয়, ওএমআর শিটের যে হার্ড কপি, তা এক বছরের মধ্যে নষ্ট করে ফেলা হবে। জানা গিয়েছে, বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে রিক্রুটমেন্ট বিল পাশ হয়। তাতে সই করেন রাজ্যপাল। শিক্ষা দফতর রিক্রুটমেন্ট ল বিভিন্ন সময়ই সংশোধন করে।
এই খবরটিও পড়ুন




নতুন এই রিক্রুটমেন্ট আইনের পর ২০১৬ সালের এসএসসি-র নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। নতুন এই রিক্রুটমেন্ট আইন মেনেই এক বছর পর ওএমআর শিটের হার্ড কপি নষ্ট করা হয়। এই হার্ড কপি নষ্টের জন্য সংস্থাকে বরাতও দেওয়া হয়।
সমস্যার জায়গা এরপরই। ঠিক ছিল, ওএমআর শিটের যে ডিজিটাল কপি, সেগুলি সংরক্ষিত করে রাখা হবে। ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর আরটিআইয়ের ভিত্তিতে চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিটের ডিজিটাল কপি দিয়েছে এসএসসি। তখন মনে করা হয়েছিল, হার্ড কপি নষ্ট করা হলেও ডিজিটাল কপি রয়েছে এসএসসি-র কাছে।
কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হওয়ার পর আবেদনকারীরা দাবি করেন, তাঁদের ওএমআর শিটের ডিজিটাল কপি দিয়েছে এসএসসি। সেই ডিজিটাল কপিতে লেখাও ছিল, এসএসসি-র তরফে ওই কপি দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টে ২০১৬ সালের নিয়োগ মামলা যাওয়ার পর এসএসসি জানায়, তাদের কাছে ওএমআর শিটের কোনও ডিজিটাল কপি নেই। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে আবেদনকারীদের তারা ডিজিটাল কপি কীভাবে দিল? জবাবে এসএসসি জানায়, তারা এই পরীক্ষা মূল্যায়নের দায়িত্ব দিয়েছিল নায়সাকে। ওএমআর শিট স্ক্যানিং ও মার্ক আপলোডিংয়ের দায়িত্বে ছিল এই সংস্থা। নায়সা আবার এই কাজের বরাত দেয় ডেটা স্ক্যানটেক সলিউশনস নামে এই সংস্থাকে। এসএসসি-র বক্তব্য, ডেটা স্ক্যানটেকের কাছ থেকে ওএমআর শিটের ডিজিটাল কপি নিয়ে তারা আবেদনকারীদের দিয়েছিল।
নায়সার কাছ থেকে পাওয়া ফাইল যে একদম সঠিক, তা গ্রহণযোগ্য মনে করেনি সুপ্রিম কোর্ট। যদি হার্ড কপি থাকত, তাহলে সহজেই বোঝা যেত, কে যোগ্য প্রার্থী আর কে অযোগ্য। আইন এনে এক বছরের মধ্যে হার্ড কপি নষ্ট করে ফেলায়, যোগ্য-অযোগ্য পৃথকীকরণ সম্ভব হয়নি।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ পুরো প্যানেল বাতিলের রায় দিতে গিয়ে বলেন, এসএসসির-কাছে যদি হার্ড কপি কিংবা ডিজিটাল কপি থাকত, তাহলে পুরো প্যানেল বাতিল না করার যুক্তি হয়তো মানা যেত। কিন্তু, এসএসসি মেনে নিয়েছে, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ নিয়োগের ২১ নম্বর আইন মেনে প্যানেল প্রকাশের এক বছরের মধ্যে ওএমআর শিটের হার্ড কপি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এবং ডিজিটাল কপিও রাখেনি। যদি হার্ড কপি কিংবা ডিজিটাল কপি এসএসসি-র কাছে থাকত, তাহলে নায়সার কাছ থেকে পাওয়া ফাইল গ্রহণযোগ্য হত, প্যানেল বাতিল হত না।





