Durga Puja 2022: ‘পুজো আর রাজনীতি এতটাই জড়িয়ে গিয়েছে…’, স্বীকৃতির দড়ি টানাটানিতে অবাক নন তপতী
Durga Puja: দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেওয়ার পর এই বছর কলকাতায় পুজো শুরুর একমাস আগেই বিশাল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। আবার কলকাতা জাদুঘরে কিছুদিন আগে সংস্কৃতি মন্ত্রক থেকে দুর্গাপুজো বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।
কলকাতা: কলকাতার দুর্গাপুজো এবার ইউনেস্কোর বিশেষ স্বীকৃতি পেয়েছে। বাঙালির জন্য গর্বের বিষয়। তা নিয়ে মাতামাতি তো হওয়ারই কথা। কিন্তু সেই মাতামাতি যেন কখন রূপ নিয়ে নিয়েছে রাজনৈতিক দলাদলিতে। কলকাতার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার কৃতিত্ব কার বেশি, তা নিয়ে শুরু হয়েছে দড়ি টানাটানি। দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেওয়ার পর এই বছর কলকাতায় পুজো শুরুর একমাস আগেই বিশাল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। আবার কলকাতা জাদুঘরে কিছুদিন আগে সংস্কৃতি মন্ত্রক থেকে দুর্গাপুজো বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ছিলেন বিজেপির অনেক কেন্দ্রীয় নেতারাও। আর সেখান থেকেই বলা হয়, এই স্বীকৃতিতে রাজ্যের কোনও ভূমিকা নেই। পাল্টা বক্তব্য অবশ্য রাজ্যের শাসক শিবিরেরও রয়েছে।
তবে যাঁর গবেষণাপত্রের হাত ধরে এই সাফল্য তিনি কী ভাবছেন? নবমীতে টিভি নাইন বাংলায় অকপট তপতী গুহ ঠাকুরতা। জানালেন, “পুজো নিয়ে আমার কাজ বহুদিনের। আমি দুই দশক আগে গবেষক হিসেবে পুজোর কাজে নামি। গবেষণার পর্ব শুরু হয় ২০০২-০৩ সালে। আমার গবেষণার বিষয়টা ছিল দুর্গাপুজোর শিল্প নিয়ে। শিল্পের একটি নতুন সংজ্ঞা তৈরি হচ্ছে। পুজো একটি শিল্প প্রদর্শনীতে পরিণত হচ্ছে। ২০১৮ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রক থেকে আমাকে বলা হয় ইউনেস্কোর মনোনয়নের জন্য পুজোকে প্রস্তাব দেওয়া হবে, আমি দায়িত্ব নেব কি না।” তিনি বলেন, “এটি আমার একার স্বীকৃতি বলা একেবারেই ঠিক না। কারণ, আমরা সকলে মিলে কাজটি করেছিলাম।”
সাম্প্রতিক কালে রাজনৈতিক দলাদলি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এই বিতর্কের কারণেই আমি সংবাদমাধ্যমের সামনে চলে আসি। আমি এই বিতর্কের মধ্যে যেতে চাই না। আমি এই কাজ করেছি, তা কেউ জানত না। জানার কথাও না। কেউ সংবর্ধনা দিল কি না, তা নিয়ে আমার কিছু যায় আসে না। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ওই কাজ করার পর আমার কোনও যোগাযোগ নেই।” সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “এখানকার সরকারই বলুন, বা কেন্দ্রীয় সরকার, এই স্বীকৃতি যে তারা নেবে, এতে আমি অবাক নই। এটা তো তাঁরা নেবেই। পুজোর সঙ্গে রাজনীতি এখন এতটাই জড়িয়ে গিয়েছে, এটি নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন হবেই। কিন্তু আমি এটিকে এড়িয়ে চলতে চাই।” তাঁর সাফ কথা, তিনি কোনও পাবলিসিটি চান না। সেই সঙ্গে এই স্বীকৃতির পর শহরবাসীর কর্তব্য আরও বেড়ে গেল বলেই মনে করছেন তিনি। বিশেষ করে বাণিজ্যিকীকরণ করতে গিয়ে যেভাবে রাস্তার দুই ধারে বড় বড় বিজ্ঞাপনে মুড়ে ফেলে হচ্ছে, সেই বিষয়টির দিকেই নজর দেওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি।