Samik Bhattacharya On Suvendu Adhikari: ‘কমিটি থেকে শুভেন্দুকে বাদ তৃণমূলের চক্রান্ত’, গঙ্গাসাগর নিয়ে আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার দাবি
Suvendu Adhikari: "রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যদি কমিটিতে থাকতেন, তাহলে বলতাম রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীকে বাদ দিয়ে তৃণমূল প্রশাসন যে কাজ করল, তাতে রাজনীতিকরণ যে হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।"
কলকাতা: “আদালত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক। কমিটি থেকে শুভেন্দুকে বাদ দেওয়া তৃণমূলের চক্রান্ত। মেলা নিয়ে আবার ভেবে দেখা প্রয়োজন।” গঙ্গাসাগর মেলার নজরদারি কমিটি থেকে শুভেন্দু অধিকারীর বাদ পড়া নিয়ে মন্তব্য বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের। সাংবাদিক বৈঠক কর শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্য সরকার সরাসরি দাঁড়িয়ে যেভাবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরোধিতা করল, শুধুমাত্র রাজনীতির কারণে, তাতে তারা নতুন করে প্রমাণ করল, ১১ বছর পেরিয়ে গেল এই সরকার নিজেদের চলার পথকে পরিবর্তন করেনি।”
তিনি বলেন, “যত সংখ্যক মানুষ পৌঁঁছছেন, তাতে রাজ্য সরকারের ভেবে দেখা উচিত, তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করার মতো কোনও পরিকাঠামো রয়েছে কিনা।” শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যদি কমিটিতে থাকতেন, তাহলে বলতাম রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীকে বাদ দিয়ে তৃণমূল প্রশাসন যে কাজ করল, তাতে রাজনীতিকরণ যে হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।” তাঁর কথায়, “বিরোধী দলনেতা একটা সাংবিধানিক পদ। প্রশাসন যা যুক্তি দেখাচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যজনকভাবে আদালত গ্রহণ করছে।”
বিজেপি নেতার কথায়, “বিচারব্যবস্থা সব ভার্চুয়ালি হচ্ছে। বিচার ব্যবস্থা শ্লথ হয়ে গিয়েছে। সেখানে এমন রায় দুর্ভাগ্যজনক। সাধারণ মানুষের কি জীবনের দাম নেই? আদালত যেখানে সরাসরি হেয়ারিং নিচ্ছে না কোভিডের কারণে। ঠিক সেখানে দাঁড়িয়ে সরকার চাইছে মেলা হোক। এই সরকার তো চাইবেই খেলা হোক, মেলা হোক! আমার মনে হয় আদালত পুনর্বিবেচনা করবে।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গঙ্গাসাগর মেলায় শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিয়েছে আদালত। তবে উল্লেখ্য, নতুন নজরদারি কমিটি থেকে বাদ পড়লেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পুরনো তিন সদস্যের কমিটি বাতিল করে ২ সদস্যের কমিটি গঠন করল হাইকোর্ট। কমিটির নেতৃত্বে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। কমিটিতে রয়েছেন লিগ্যাল সার্ভিসেসেস সদস্য সচিব।
গঙ্গাসাগর মেলার নজরদারি কমিটিতে শুভেন্দু অধিকারীর নাম থাকা নিয়ে প্রথম থেকেই একটা চাপানউতোর তৈরি হয়েছিল। মামলাকারীরা অনেকেই বলেছিলেন যে, শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী দলনেতা। সেক্ষেত্রে এই মেলা ঘিরে টানাপোড়েনে লাগতে পারে রাজনৈতিক রঙও।
মামলাকারীদের অনেকেই মনে করেছিলেন, আদালত এমন কয়েকজনকে নিয়ে কমিটি গঠন করুক, যাতে তাঁরা সম্পূর্ণ রূপে রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন। চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গড়ার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু সেক্ষেত্রে সরকারি চিকিৎসকদের একাংশও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন, তাঁদেরকে বাদ দিয়েই কমিটি গড়ার কথা বলা হয়েছিল।
অর্থাৎ ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিমুক্ত’ কমিটি গঠনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবীদের একাংশ। পাশাপাশি আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য, পুরনো কমিটিতে রাখা হয়েছিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে। ওই পদে নিয়োগ এখনও আটকে রয়েছে। এরপরই নতুন কমিটির পক্ষে রায় দেয় হাইকোর্ট। মঙ্গলবারের নির্দেশে কমিটি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে। যে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেখানে শুধুমাত্র অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ও লিগ্যাল সার্ভিসের সচিবকেও রাখা হয়েছে।
তবে এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।