BJP Bengal leadership: সব ‘বিদ্রোহে’ জল ঢেলে শুভেন্দু-সুকান্তকেই ‘হোম ওয়ার্ক’ দিয়ে গেলেন শাহ
BJP Bengal leadership: বর্তমান রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারবার। দলের অন্দরেই শীর্ষ নেতাদের অনভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
অঞ্জন রায়, কলকাতা : সম্প্রতি রাজ্য বিজেপিতে অনেক অস্থিরতা প্রকাশ্যে এসেছে। কেউ দল থেকে বেরিয়ে আবার কেউ কেউ দলের মধ্যে থেকেই দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। নাম না করে সুকান্ত মজুমদারের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তবে, অমিত শাহের সাম্প্রতিক সফরেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাঁধে ভর করেই রাজ্যে বিজেপিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, বৈঠকে ওই দুই নেতাকে কিছু ‘হোম ওয়ার্ক’ দিয়েছেন তিনি। দলকে এগিয়ে যাওয়ার জন্যই সেই বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, অমিত শাহের বৈঠক থেকেই ইঙ্গিত টা স্পষ্ট যে, আগামিদিনে দলের নেতৃত্ব দেবেন এই দুই নেতা। তাঁদের ওপর ভর করেই দল ঘুড়ে দাঁড়াবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও এরাই নেতৃত্বে দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। আর তারপর তো লোকসভা রয়েছেই। স্বাভাবিকভাবে এই ইঙ্গিত সামনে আসতেই, অনভিজ্ঞ বলে যিনি বা যাঁরা রাজ্য সভাপতিকে কটাক্ষ করেছিলেন, তাঁরা কিছুটা ব্যাকফুটে। শুভেন্দু কে যাঁরা বলতেন, রাজ্য অফিসের দরজা মাড়ান না, তাঁরাও কিছুটা হতাশ।
কেন ভরসা সুকান্ত-শুভেন্দুকে?
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বুঝে নিয়েছে যে শুভেন্দু-সুকান্তরাই এখন বাংলার মন জয় করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। অধ্যাপক, শিক্ষিত, ঝকঝকে মুখ, সাংসদ, ভদ্র এবং উল্টোপাল্টা না বলা রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দল চালানোর জন্য যোগ্য। পাশাপাশি, শুভেন্দু অধিকারীকেও ভরসা করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, যিনি লড়াই করতে পারেন, তৃণমূলের অন্দরের খবর রাখেন, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং সনাতনী হিন্দু ধর্মের কথা বলেন। এই দুজনই দল পরিচালনা করার যথেষ্ট যোগ্য বলে মনে করছেন শাহ-নাড্ডারা।
রাজ্য বিজেপির অবস্থা কেমন?
রাজ্যে এমনিতেই বিজেপির এই রাজ্যে করুণ দশা। ২০১৯-এর লোকসভায নির্বাচনে ১৮ টি আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। ২০২৪-এ গেরুয়া শিবির সেটা কতটা ধরে রাখতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। হিসেব বলছে, ১৮ টি লোকসভা আসন মানে ১২৬ বিধানসভা আসন। আর দু’বছর পর ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে দেখা যায়, বিজেপি পায় ৭৭ টি আসন। বর্তমানে সেই সংখ্যা কমে হয়েছে ৭২। বাকি বিধায়কেরা তৃণমূলে চলে গিয়েছেন। বিধানসভার হিসেব বলছে, ১০ টা লোকসভা আসনে এগিয়ে বিজেপি। গত এক বছরে বহু নেতা কর্মী দল ছেড়েছেন। আরও ছাড়বেন বলে বিজেপির অন্দরে খবর। পুর ভোট ও উপ নির্বাচনগুলোতে দলের শক্তি ক্ষয় হচ্ছে বলেও মনে করছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এই অবস্থায় কতটা আসন বিজেপি এই রাজ্য থেকে পাবে তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চিন্তায়।
২৪-এর লক্ষ্যে বাড়ছে যাওয়া-আসা
লোকসভা নির্বাচনের দু বছর বাকি আছে। কিন্তু দলের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আগে থেকে সংগঠনকে তুলে ধরতে অমিত শাহ, জে পি নাড্ডা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসা যাওয়া শুরু হচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তবে, নিউ টাউনের হোটেলে রাত ১০ টার পর অমিত শাহরা যখন বৈঠকে বসেছিলেনস তখন হতাশাগ্ৰস্ত বিজেপির কিছু নেতা অন্য বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন বলে সূত্রের খবর। দলের নেতারা কার্যত বুঝে গিয়েছেন, দরবার করেও কোনও লাভ হয়নি। মেনে নিতে হবে শুভেন্দু এবং সুকান্তকেই।