Jagdeep Dhankhar: ‘আমি জানি কীভাবে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হয়’, চরম বার্তা রাজ্যপালের

Jagdeep Dhankhar: রাজ্যপাল বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে রাজ্য যদি গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে না পারে, তাহলে আমি বিষয়টি নিয়ে ভাবব। আইন এবং সংবিধান মেনে যে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার, আমি নেব। আমি জানি কীভাবে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হয়।"

Jagdeep Dhankhar: 'আমি জানি কীভাবে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হয়', চরম বার্তা রাজ্যপালের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 21, 2022 | 5:35 PM

কলকাতা : মঙ্গলবার বিকেল ৪ টের সময় রাজভবনে গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়কদের এক প্রতিনিধি দল। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে নালিশ জানাতে গিয়েছিলেন তাঁরা। বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলার পর ফের একবার রাজ্য সরকারকে এক হাত নিয়েছেন রাজ্যপাল। বললেন, “নির্বাচনের পরেও বাংলায় সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি। সরকার কোন রকম পদক্ষেপ করছে না সন্ত্রাস বন্ধে। নির্বাচন পরবর্তী যে সন্ত্রাস চলছে রাজ্যজুড়ে তা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। সিন্ডিকেট মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে রাজ্যের প্রতিটি কোণে। কলকাতা হাইকোর্ট বিষয়টিকে নিয়ে বারবার রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। মাফিয়া রাজ, সিন্ডিকেট রাজ রাজ্যের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলায় গণতন্ত্র প্রতিটি স্তরে বিপন্ন। হাজার হাজার তরুণ তরুণী দুর্নীতি এবং বে-আইনি পদ্ধতি নিয়োগের জন্য কাজ থেকে উপেক্ষিত হয়েছেন।”

রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর চড়িয়ে রাজ্যপাল আরও বলেন, “রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীকে এক সারিতে নিয়ে এসেছে এই প্রশাসন। রাজ্যপাল কতটা গুরুত্বপূর্ণ পদ তা ইচ্ছে করেই বোঝার চেষ্টা করে না প্রশাসন। বিধানসভায় বিল এনে আমাকে আচার্য পদ থেকে সরানো হচ্ছে। আমি বিলগুলি খুব মন দিয়ে পড়বো। কোনও পক্ষপাতিত্ব করব না। যদি গ্রহণ করার হয়, করব। নয়তো, গ্রহণ করব না। কিন্তু কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেব না। আচার্য বিল সংক্রান্ত বিষয়টি আমি প্রথমে খতিয়ে দেখব। দেখব কোথাও সংবিধানকে উপেক্ষা করে এই ধরনের বিল আনা হয়েছে কি না। আমাদের সংবিধান খুব শক্তিশালী। সেই সংবিধানকে উপেক্ষা করে যদি বিল আনা হয়, তাহলে আমি গ্রহণ করব না।”

তোপ দাগেন রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও। বলেন, “রাজ্যের শাসকের আইন চলছে। শাসক দল যেভাবে আইন চালাচ্ছে, সেভাবে আইন ব্যবস্থা চলছে। আইনের শাসন নেই এখানে। গণতন্ত্রকে জলাঞ্জলি দিতে দেব না। মুখ্য সচিব থেকে রাজ্য সরকারের নিচু স্তরের কর্মীরা রাজনৈতিক দলের কর্মীদের মতো কাজ করছেন। শাসকদল যে রকম চায়, সে রকম চলছেন। আমি বিল এখনও সই করেনি। প্রত্যেকটি লাইন আমি খুঁটিয়ে পড়ব। তারপর আমি সিদ্ধান্ত নেব। আমি বরাবরই সরকারের বন্ধু হয়ে চলার চেষ্টা করেছি। এখনও চাই বন্ধু হয়ে চলার জন্য। কিন্তু একটাই শর্ত। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই সরকারকে চলতে হবে। গণতন্ত্রকে প্রতিটি পদে এই সরকার উপেক্ষা করেছে, অবহেলা করেছে।”

রাজ্যপালের বক্তব্য, “২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে আমি গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য লড়াই করে চলেছে। কয়লা মাফিয়া থেকে গরু পাচারকারী প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি প্রশাসনকে বারবার বলেছি। এদের বিরুদ্ধে আমি বারবার সরব হয়েছি। কিন্তু প্রশাসন নিজেদের মতো করে চলছে। এটা কি গণতন্ত্র? এখানে মানুষ মুখ খোলার অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। রাজ্যের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়েছে আগের তুলনায়। মানুষ নিজের গণতন্ত্রকে হারিয়েছে। আমি একটা কথা বলে দিতে চাই রাজ্যকে, ভারতীয় সংবিধান অত্যন্ত শক্তিশালী। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে রাজ্য যদি গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে না পারে, তাহলে আমি বিষয়টি নিয়ে ভাবব। আইন এবং সংবিধান মেনে যে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার, আমি নেব। আমি জানি কীভাবে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হয়। রাজ্য যদি সঠিকভাবে পথে চলতে পারে তাহলে আমি দেখব কিভাবে সংবিধান অনুযায়ী রাজ্য গণতান্ত্রিক পথে চলে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। রাজ্যপালও নন। মুখ্যমন্ত্রীও নন। এটা যেন রাজ্যের প্রশাসনের কর্তারা ভালো করে বুঝে নেন। রাজ্য প্রশাসনকে আইনের শাসন বলবৎ করতে হবে। নিজেদের শাসন নয়। যদি সেটা না হয় তাহলে সংবিধান অনুযায়ী আমি যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নেব।”