অমর্তের পাশে ‘বাঙালি বুদ্ধিজীবিরা’, ব্রাত্য বসুর আহ্বানে প্রতিবাদ সভা

অমর্ত্য সেনকে অপমানের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বক্ষেত্রে তিনি যে ‘দাদা’ অমর্ত্য সেনের পাশে রয়েছেন তাও স্পষ্ট করে শুক্রবার চিঠি দেন ‘বোন’ মমতা।

অমর্তের পাশে 'বাঙালি বুদ্ধিজীবিরা', ব্রাত্য বসুর আহ্বানে প্রতিবাদ সভা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Dec 26, 2020 | 8:02 PM

কলকাতা: নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেনের পাশে এবার ‘বাঙালি বুদ্ধিজীবিরা’। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের(Amartya Sen) ওপর ‘বিজেপির অত্যাচারে’র বিরুদ্ধে গর্জে উঠার ডাক দিয়ে রবিবার বাংলা আকাদেমিতে দুপুর তিনটেয় এক প্রতিবাদ সভায় সামিল হবেন বিশিষ্টরা। রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর আহ্বানে এই সভা হবে বলে জানা গিয়েছে। সভায় উপস্থিত থাকবেন জয় গোস্বামী, কবীর সুমন, শুভাপ্রসন্ন মজুমদার, নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি, যোগেন চৌধুরী, রাজ চক্রবর্তী-সহ আরও অনেকে।

আরও পড়ুন : ক্লাস ফাইভ থেকে সিপিএম, এসএফআই করা ২১ বছরের আর্যাই দেশের সর্ব কনিষ্ঠ মেয়র

দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রের শাসকদলের নেতাদের একাংশ অধ্যাপক সেন সম্পর্কে প্রকাশ্যে নানা বিতর্কিত এবং তির্যক মন্তব্য করছিলেন। শান্তিনিকেতনে তাঁর বাড়ি ‘প্রতীচী’ সংলগ্ন জমির একাংশ বিশ্বভারতীর বলেও সম্প্রতি একটি মহল থেকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, বিগত শতকের চারের দশকে অমর্ত্য সেনের বাবা আশুতোষ সেনকে ১২৫ ডেসিমেল জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজ় দেওয়া হয়েছিল। এই জমিতেই গড়ে উঠেছে অমর্ত্যবাবুদের পারিবারিক বাড়ি ‘প্রতীচী’। ২০০৬ সালে অমর্ত্য সেনের আবেদনের ভিত্তিতে জমির লিজ় তাঁর নামে হস্তান্তর করা হয়।

আরও পড়ুন :মমতার কাছে মমতার ছবি নিয়ে ‘মমতা’র অভিযোগ

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, জমির মাপ করে দেখা যায়, পাশাপাশি লিজ় দেওয়া দু’টি জমির মধ্যবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ১৩ ডেসিমেল জমিও ঢুকে রয়েছে এবং তা ‘প্রতীচী’র সীমানার ভিতরেই। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের আরও অভিযোগ, রজতকান্ত রায় যখন উপাচার্য ছিলেন, তখন অমর্ত্যবাবুকে(Amartya Sen) বিষয়টি একাধিকবার মৌখিকভাবে জানানো হলেও তিনি উচ্চবাচ্য করেননি। পাশাপাশি, বিশ্বভারতীর আচার্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হওয়ায় বর্তমানে ‘বাড়ি বিতর্কটি’ অন্য মাত্রা পেয়েছে।

আরও পড়ুন : ‘লভ জিহাদ’, জোর করে ধর্মান্তকরণে দশ বছর পর্যন্ত জেল, আইন আনছে মধ্য প্রদেশ

প্রসঙ্গত, অমর্ত্য সেনকে অপমানের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বক্ষেত্রে তিনি যে ‘দাদা’ অমর্ত্য সেনের পাশে রয়েছেন তাও স্পষ্ট করে শুক্রবার চিঠি দেন ‘বোন’ মমতা। সাংবাদিক সম্মেলনে সর্বসম্মুখে করজোড়ে তিনি বলেন, ‘অমর্ত্যদা যেন ক্ষমা করে দেন’। ‘অসহিষ্ণুতা’ ও ‘সর্বগ্রাসী একনায়কতন্ত্রের’ বিরুদ্ধে অমর্ত্যের লড়াইয়ে তিনিও শরিক সে কথা দ্ব্যর্থহীনভাবে জানিয়ে দেন মমতা। এরপর তিনি আবেদনও করেন, বাংলার ‘বুদ্ধিজীবিরা’ যেন অমর্ত্যবাবুর পাশে দাঁড়ান।

আরও পড়ুন : মমতাকে অনুকরণ? এবার শিলিগুড়ির দুয়ারে দুয়ারে অশোক-প্রশাসন

সম্প্রতি, এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা মন্তব্য করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা অমর্ত্যবাবুকে সম্মান দিই। ওঁ যেন কোনও বিশেষগোষ্ঠীর স্পোকসপার্সন হয়ে না থাকেন। তাহলে আমরা ভাবব, ভুল লোককে কি পুরস্কার দেওয়া হল?’ দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতির শিক্ষা-দীক্ষা নিয়েই পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি সামাল দিতে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ আইনি পথেই হাঁটার কথা বিবেচনা করছেন।