U19 Women’s World Cup: সৃজিতের ‘সাবাশ মিতু’ থেকে একেবারে বিশ্বজয়, অবাক নন বাঙালি পরিচালক!

raktim ghosh

raktim ghosh |

Updated on: Feb 01, 2023 | 7:12 PM

Srijit Mukherji: সৃজিতের 'সাবাশ মিতু' থেকে একেবারে বিশ্বজয়, অবাক নন বাঙালি পরিচালক!

U19 Women’s World Cup: সৃজিতের 'সাবাশ মিতু' থেকে একেবারে বিশ্বজয়, অবাক নন বাঙালি পরিচালক!
বিশ্বজয়ী কোচ নুসিনের অজানা গল্প সৃজিতের গলায়

রক্তিম ঘোষ

চলছে ‘পদাতিক’ ফিল্মের শুটিং। মাঝে একটু বিরতি পেয়েছেন। নতুন প্রজেক্টের কাজের উত্তেজনার মাঝে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের উত্তেজনা ডাবল করে দিয়েছে এক অনামী নারীর বিশ্বসেরা হওয়ার সাফল্য। অনামী নারী বোধহয় এখন আর বলা যাবে না। তবে সৃজিতের সঙ্গে যখন তাঁর পরিচয় হয়, তখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে নুসিন আল খাদির সত্যিই অপরিচিত ছিলেন। কিন্তু কে এই নুসিন আল খাদির, এখন অনেকেই জেনে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁর উত্থানের পিছনে যে অভিনব গল্প, তা অনেকেই জানেন না।

গত রবিবার অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলা বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। বাংলার ত্রয়ী তিতাস সাধু, হৃষিতা বসু ও রিচা ঘোষের পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া। বিশেষ করে চুঁচুড়ার তিতাস তো ফাইনালে সেরা হয়েছেন। শুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট যে ইতিহাস গড়ছে, খবর রাখছিলেন পরিচালক সৃজিত। ইতিহাস তৈরির পর যারপরনাই আনন্দিত। শুধুমাত্র ভারতের মহিলা দল প্রথমবার বিশ্বজয়ের স্বাদ পেল কিংবা তিন বাঙালি কিশোরীর দুর্নিবার পারফরম্যান্সই শুধু তাই নয়, সৃজিতের আনন্দিত হওয়ার আরও একটি কারণ হল, তিতাসদের কোচ নুসিন আল খাদির। এবং সেই আনন্দটা একটু স্পেশাল। একটু খোলসা করেই বলা যাক।

সাবাশ মিতু ফিল্মের পোস্টার

প্য়ান্ডেমিক কাটিয়ে তখন ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে ভারত। বলিউডে নিজের জমি আরও পোক্ত করতে নিজের তৃতীয় ছবি নিয়ে তখন ব্যস্ত পরিচালক সৃজিত। বেগমজান দিয়ে বলিউডে অভিষেক। গত বছরের জুন মাসে মুক্তি পাওয়া শেরদিল সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। কিন্তু মহিলা ক্রিকেটারকে নিয়ে বলিউডে প্রথম বায়োপিক, তা তো স্পেশাল হবেই সৃজিতের কাছে। ফিল্মের নাম ‘সাবাশ মিতু’। যার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছিল ২০২১ সাল থেকে। অভিনেত্রী তাপসী পান্নুকে প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক ও ক্রিকেটার মিতালি রাজ করে তোলা ছিল সৃজিতের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

‘সাবাশ মিতু’-র প্রচারে ইডেনে সৃজিত, মিতালি ও তাপসী

মেকআপে তাপসী পান্নুকে তো মিতালি রাজ সাজানোই যায়! কিন্তু মিতালির ব্যাটিং স্টান্স? মিতালির বডি ল্যাঙ্গোয়েজ? মাঠে মিতালির ক্ষিপ্রতা? তাঁর আগ্রাসী মনোভাব?  ক্রিকেটপ্রেমীদেরও যেন তাপসী দেখে মনে না হয়, তিনি মিতালি নন। তাই লুক শুধু নয়, ক্রিকেটীয় নিরিখেও মন দিয়েছিলেন সৃজিত। সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন খোদ মিতালি রাজই। সৃজিতের সঙ্গে মিতালি পরিচয় করান নুসিন আল খাদিরকে। মিতালি আশ্বস্ত করেন, নুসিনই তাপসী পান্নুর ব্যাটিং স্টান্স থেকে যাবতীয় ক্রিকেটীয় আঙ্গিক তৈরি করবেন এই নুসিন। নুসিনের তখন পরিচিতি একজন প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটার হিসেবে। যাঁর সাফল্য খুব কম নয়। একদিনের ক্রিকেটে ১০০টি উইকেট।আর ৫টি টেস্টে মাত্র ১৪টি উইকেট। আরও একটি পরিচয় ছিল, তিনি মিতালির ভালো বন্ধু। যিনি কোচিংয়ে পাকাতে শুরু করেছেন হাত।

মিতালি রাজের সঙ্গে নুসিন আল খাদির

সেই শুরু। ভোর ৫টা থেকে নেট প্র্যাকটিস শুরু হল তাপসী পান্নুর। কোচের নাম নুসিন আল খাদির। যাঁর কোচিংয়েই আজ বিশ্বসেরা হয়েছেন শেফালি ভার্মারা। প্রসঙ্গ উঠতেই নস্ট্যালজিক সৃজিত। গড়গড় করে বলছিলেন ‘সাবাশ মিতু’-র সেই সেশনগুলোর কথা। “সকাল ৫টায় প্যাড আপ করে একটা নেটে ব্যাটিং করতে নামত তাপসী। অন্য নেটে আমি। একসঙ্গে আমরা প্র্যাকটিস করতাম। তাপসীর স্টান্স থেকে শট— সব কিছুই নিখুঁত ভাবে দেখাতেন নুসিন।উল্টো দিকে ভালোমানের নেট বোলার।আমার নেটেই আবার অনুশীলন করত নুসিনও।”বলছিলেন সৃজিত।

প্র্যাকটিসে তখন তাপসী পান্নু, পেছনে নুসিনের কড়া নজর

সৃজিত যখন বিশ্বজয়ী কোচ নুসিন আল খাদিরকে চিনেছিলেন, তখন গোটা ভারত তাঁর নাম পর্যন্ত শোনেনি তেমন ভাবে। তিনিই তো ছিলেন পর্দার মিতালি রাজ তাপসী পান্নুর ‘আসল’ কোচ। কেমন দেখেছিলেন ২ বছর আগে নুসিনের কোচিং? সৃজিতের কথায়, “উনি ক্রিকেটের প্রতি ভীষণ ডেডিকেটেড। আর ওঁর ক্রিকেট বুদ্ধি খুব শার্প। দারুণ অফ স্পিন বল করতেন। ওঁর সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হল, ব্যাটার হোক বা বোলার, দ্রুত তার দুর্বল দিকটা বের করে ফেলতেন। এটা সত্যি ওঁর প্লাস পয়েন্ট।” নস্ট্যালজিক ‘সাবাশ মিতু’-র পরিচালক।

‘সাবাশ মিতু’ শ্যুটিংয়ের ফাঁকে নুসিন ও তাপসীর খুনসুটি

হবেন নাই বা কেন। তিনিই তো প্রথম কোনও মহিলা ক্রিকেটারের বায়োপিক বানিয়েছেন বলিউডে। অনুষ্কা অভিনীত ঝুলন গোস্বামীর বায়োপিক এখনও মুক্তি পায়নি। আর সৃজিতের তৈরি বায়োপিকের ঠিক পরের বছরেই তো ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটে এল সবচেয়ে বড় সাফল্য। বিশ্বজয়ের পরই নুসিনকে পাঠিয়েছেন শুভেচ্ছাবার্তা। শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন ঝুলন গোস্বামী, দীপ্তি শর্মা  ও মিতালি রাজকেও। বৃহস্পতিবার কলকাতায় পৌঁছবে বাংলার ৩ বিশ্বজয়ী। তাঁর আগেই উত্তেজিত সৃজিতের কথায়, “তিতাসকে দেখেছেন? ও কিন্তু ভবিষ্যতের ঝুলন গোস্বামী।”

Latest News Updates

Follow us on

Related Stories

Most Read Stories

Click on your DTH Provider to Add TV9 Bangla